ঢাকা ১৯ অক্টোবর ২০১৯: বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও এ্যাসিট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগে দলীয় ত্যাগী ও পদবঞ্চিতদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার হাইকোর্টের আইনজীবি সমিতির ১নং হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় আইনজীবিরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ দেশের বিশিষ্ট ৩৫জন ব্যক্তিত্ব আসামি ছিলেন। ওই মামলায় পাকিস্তান সরকারের নিযুক্ত আস্থাভাজন বিচারক ছিলেন নব নিযুক্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নাসিমা কে হাকিমের শ্বশুড় মাকসুম উল হাকিম (তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া)। তাকে সম্প্রতি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দেয়ায় আ’লীগের দলীয় আইনজীবিদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
তাকে বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে মহামান্য হাইকোর্টে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ করায় ক্ষুব্ধ আইনজীবিরা। এক্ষেত্রে দলীয় ত্যাগী পরিক্ষিত আইনজীবিরা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগও তাদের।
এদিকে নাসিমা কে হাকিমের স্বামী বিচারপতি তারিক উল হাকিম বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। তিনি বিগত জামাত-বিএনপি জোট সরকার আমলে ২০০২ সালে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং ২০০৪ সালে স্থায়ী নিয়োগ লাভ করেন।
অপর ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক। তার পিতা সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার আমলে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৯২ সালে বিএনপি সরকার আমলে স্থায়ী নিয়োগ লাভ করেন। ২০০০ সালে আপীল বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০০৩ সালে অবসরগ্রহণ করেন বিচারপতি কাজী এবাদুল হক। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আপীল বিভাগে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকার আমলে একদিনও শুনানী হয়নাই বিচারপতিদের বিব্রত হওয়ার কারনে।
এদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও এ্যাসিট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রীম কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবি রীট দায়ের করেছেন। উক্ত রীট মোকর্দ্দমাটি বিচারাধীন রয়েছে।
আইনজীবিদের বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, মহাজোট সরকার আমলে জামাত-বিএনপি পরিবারের সদস্য যারা বিগত সময়ে সুপ্রীম কোর্ট বার সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের বিরুদ্ধে জোড়ালো ভাবে প্রচারণায় ভুমিকা রাখেন। তারা কিভাবে বর্তমান সরকার আমলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান এটা ভাবার বিষয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বিষয়টি অনুসন্ধান করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহবান জানানো হয়েছে।
বিগত ৩১ জুলাই মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সলিসিটর জেসমিন আরা বেগম ৩৫জন অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগের ক্ষেত্রে এই আদেশ দেয়া হয়।