বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
গণমাধ্যমের অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় সভা আয়োজনসহ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জনাব বাহারুল আলম নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের পরিচয় কালিগঞ্জে আছিয়া লুতফর প্রিপারেটরি স্কুলে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত সলেমান মামুন ব্যারিস্টার সুমন দুই দিনের রিমান্ডে ডিএমপির ৩৮তম পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা আলেমরাই এক দিন এদেশে নেতৃত্ব দেবেন।।ধর্ম উপদেষ্টা কে এই নতুন ডিএমপি কমিশনার? দৌলতপুরে বসতবাড়িতে ডাকাতির সময় মা-ছেলেকে হত্যার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ

আবিদ আজাদের কবিতা এবং কিছু কথা ।। তৌফিক জহুর

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০, ১২.০৫ এএম
  • ৩৪৪ বার পঠিত

আজ ২২ মার্চ, আবিদ আজাদের মৃত্যুবার্ষিকী। কবির প্রতি শ্রদ্ধা।

মফস্বল শহরে নব্বই দশক থেকে লেখালেখি শুরু । লিটলম্যাগ বের করতাম। বিভিন্ন বিষয়ে কৌতুহল ছিল। মক্কায় গিয়ে হজ্জ্ব না করলে হাজী সাহেব বলা হয়না তেমনি বাংলা সাহিত্যের রাজধানী ঢাকায় না থাকলে নাকি সাহিত্যিক তকমা জোটেনা। এমন এক কাহিনী একদিন শুনলাম। তখনই মনে মনে ভাবলাম লেখক হতে হলে ঢাকায়ই যেতে হবে। কিন্তু এই বিশাল ঢাকা মহানগরীতে জীবন জীবিকা না থাকলে লেখক হওয়া মুশকিল। ঢাকা এলাম মধ্য নব্বই দশকে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কন্ট্রিবিউট রিপোর্ট করা শুরু করলাম। কঠিন এক যুদ্ধ। জাতীয় দৈনিক এর পাতাগুলোয় লিখলে সেসময় তিনশত টাকা পাওয়া যেত।এভাবে তিনটি পত্রিকায় কিছু কম টাকা, কখনো তিনশত টাকায় রিপোর্ট লেখা শুরু। সেসময় নব্বই দশকের কয়েকজন কবিবন্ধুর সঙ্গে দারুণ সখ্যতা গড়ে উঠলো। কবি জামাল উদ্দিন বারী, কবি সাখাওয়াত টিপু, কবি শান্তা মারিয়া, কবি ফাতিমা তামান্না, কবি শাকিল রিয়াজ। শাহবাগের আজিজ মার্কেট সন্ধ্যা হলে আমার জন্য হয়ে যেত আড্ডার বিশাল প্রাসাদ। দৈনিক জনতা পত্রিকায় তখন সহকারী সম্পাদক ও সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন কবি শাহীন রেজা। শাহীন রেজা ভাই এর সঙ্গে একদিন হাজির হলাম দৈনিক বাংলার মোড়ে অবস্থিত হারূন ডায়েরিতে।যেখানে বসতেন পঞ্চাশের আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ কবি ফজল শাহাবুদ্দীন। প্রতিদিনই আমার সামনে নতুন নতুন দুয়ার খুলে যেতে লাগলো। সেখানে কবি আল মুজাহিদী ভাই এর সঙ্গে পরিচয়, পরবর্তীতে দৈনিক ইত্তেফাকের সাহিত্য পাতায় গদ্য লেখার সূচনা। কবি ফজল শাহাবুদ্দীন ভাই বসন্তকালীন কবিতা উৎসব করতেন। এক বসন্তকালীন কবিতা উৎসব শেষে ঢাকা ক্লাবে একটা ডিনারে যাই আমরা। সেখানে কবি আবিদ আজাদ ভাইয়ের সঙ্গে এই স্মৃতিময় ছবি। আবিদ আজাদ ভাইয়ের সঙ্গে ফজল শাহাবুদ্দীন ভাইয়ের অফিসে ও মোহাম্মদপুরে তাঁর শিল্পতরু অফিসে অনেকবার আড্ডা হয়। যা ছিলো কবিতা আড্ডা। সেসব আড্ডায় প্রাণ ছিলো। সেসব আড্ডায় আমরা শিখতাম, জানতাম, বুঝতাম কবিতার শরীর। সম্প্রতি ঢাকার ধানমন্ডির বেঙ্গল বই এ যেয়ে আবিদ আজাদ ভাইয়ের ” প্রেমের কবিতা সমগ্র ” পেলাম। কিমলাম। কবি আবিদ আজাদ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তাঁর সৃষ্টি রয়ে যাবে চিরটাকাল। আবিদ আজাদ ভাইয়ের কবিতা নিয়ে কিছু বলতে গিয়ে এই লেখার সূচনা এভাবে করলাম।

এক নজরে কবিঃ

কবি আবিদ আজাদের (১৬.১১.১৯৫২-২২.০৩.২০০৫) জন্ম কিশোরগঞ্জের চিকনির চরে। স্থানীয় আজিমউদ্দিন হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং গুরুদয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। স্নাতক ডিগ্রী নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৭৬ এ প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘ঘাসের ঘটনা’ প্রকাশ পায়। চৌদ্দটি কবিতার বই বের হয়েছে কবির।উপন্যাস পাঁচটি, আত্মস্মৃতি একটি। শিল্পতরু নামে একটি কাগজ সম্পাদনা করতেন। এছাড়াও কাব্যনাটক ও বেতার-টিভি নাটক রয়েছে কবির। বঙ্গবন্ধু পুরস্কার ( ১৯৭৬), চারণ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল হাসান স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৯), সা’দত আলী আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার (২০১৮) পেয়েছেন।

প্রেমের কবিতায় আবিদ আজাদঃ
একজন প্রকৃতকবি জানেন, অনুভূতির শীর্ষবিন্দুতে কাব্যের শিখা জ্বলে ওঠে। কবিতায় বক্তব্যের পরিবর্তন নতুন ভাষাচেতনা ছাড়া আসেনা। কবি আবিদ আজাদ সত্তর দশকের গুরুত্বপূর্ণ কবি। কবি তাঁর কবিতার শরীরে ভাষা এস্তেমাল করেছেন অভিজ্ঞতা আর বেড়ে ওঠার দৃশ্যের মধ্য দিয়ে। মননশীল পাঠক থেকে সাধারণ পাঠকের হৃদয়ে কড়া নেড়েছেন সহজ সরল সাবলীল শব্দে। তাঁর ভাষার সুখপাঠ্যে পাঠক তাঁর দীর্ঘ কবিতাগুলো শেষ পর্যন্ত পাঠ করে। তিনিই আবিদ আজাদ যিনি তার সময়কে ধারণ করে একটা নতুন ধারা তৈরি করতে সক্ষম হন তাঁর কবিতায়। সত্তর দশকের কবি মানে যুদ্ধ শেষে একটা নতুন পতাকা, নতুন মানচিত্রের কবি, এটা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে। সেই সময়ের কবিদের কবিতায় বুলেট আসবে, রক্ত আসবে, যুদ্ধের উন্মাদনা থাকবে কবিতার প্রতিটি লাইনে। আবিদ আজাদ এর কবিতায় এসব আছে। কিন্তু প্রেমের কবিতা পাঠ করতে যেয়ে নতুন এক আবিষ্কারের মুখোমুখি। তিনি ভাষা নির্মাণ করছেন তাঁর চিরায়ত উঠে আসা অঞ্চলের চিত্রকল্পের মধ্যে দিয়ে চমৎকার ভঙিমায়। আমরা গভীর আগ্রহ নিয়ে যখন তাকাই তাঁর কবিতার শরীরে, তখন তিনি আমাদের দেখান কবিতার পংক্তিঃ
“নৌকার গলুইর মতো একা,হে আমার ছেলেবেলা,রাজহাঁস
তোমাদের ভিতরে সিল্কের সেই পুকুরের জল
আজো ডানা ঝাড়ে নাকি?ঝরে নাকি পাখার সাদায়
শেফালির গন্ডদেশ রাঙা করা বালকের হাত?”
(ফেরাও অথবা ভেঙে ফেলো,পৃষ্ঠা ১৪)

আর একটা কবিতা লক্ষ্য করিঃ
“তোমাদের উঠোনে কি বৃষ্টি নামে?রেলগাড়ি থামে?
বলো থামে?
হাসো কেন?প্লিজ বলো নামে-
নামে বৃষ্টি হুঁশ হুঁশ ধোঁয়ায়?
ঘরের ফুসফুস ভরে ওঠে হঠাৎ উত্তুরে হাওয়ায়!
নামে বৃষ্টি ঝরঝরে খোয়ায়
সবজি খেত পাতা ভরে তুলে রাখে ছাই?
পাটকরা শাড়ির ভাঁজের মতো সাদা ছাই?
ইস্ত্রি-ভাঙা জামাকাপড়ের মতো কালো ছাই?
মখমলের মতো পাছা তুলে হঠাৎ এক লাল গাই
(তোমাদের উঠোনে কি বৃষ্টি নামে?রেলগাড়ি থামে?,পৃষ্ঠা ৭০)
চিত্রকল্প,রূপকল্প এবং উপমা। এই তিনটে কবিতার শরীরে জড়িয়ে থাকে লতার মতো। এর মধ্যে একমাত্র উপমাই আমরা দৈনন্দিন কথাবার্তায় প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করি। হাজার বছর ধরে ব্যবহার করছি।সেইজন্য উপমা দৃষ্টিকটু বা অস্বাভাবিক মনে হয়না।সেইজন্যই উপমা কবিতার সবচেয়ে স্বাভাবিক অলংকার। অনুপ্রাস যেমন পরপর দশ বা পনেরটি কবিতায় ব্যবহার করলে অসহ্য বোধ হয়,উপমা তেমন নয়। হাজার বছর ধরে উপমা ক্রমাগতই ব্যবহার হয়েছে হচ্ছে হবে। উপমা হচ্ছে কবির অত্যন্ত নিকটবন্ধুজন। আবিদ আজাদের কবিতায় উপমা এমন সহজভাবে এসেছে যা পাঠে আমরা একটা অন্যরকম সুখ অনুভব করি। ” নৌকার গলুইর মতো একা,হে আমার ছেলেবেলা রাজহাঁস “…..। আমরা চিরটাকাল নদী ও নৌকা দেখে এসেছি। কিন্তু নৌকার গলুইর মতো একা কবির ছেলেবেলা। এই যে চিত্র এঁকেছেন তা আমাদের ভাবনার অতলে নিয়ে যায়। সারাদিন বা দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় নদীতে নৌকা চলাচল করে। তারপর সুনসান নীরব নৌকার পাটাতন। আর গলুই যেখানে মাঝি বসে, সেই জায়গা অদ্ভুত একা হয়ে যায়। কবিও কি এভাবেই বেড়ে উঠেছেন?? একটা সময় পরিবার বেষ্টিত আর বাকি সময় একা!! কবির কথোপকথনে একটা জীবনানন্দীয় মোচড়ও আছে।” হে আমার ছেলেবেলা রাজহাঁস “…. কবি কি রাজহাঁসের মতো বেড়ে উঠেছেন নাকি রাজহাঁসের সঙ্গে কথোপকথন করছেন?? জীবনানন্দ দাশ সচেতনভাবে প্রতীকবাদী কবি। যেকোনো মহৎ কবির মতো জীবনানন্দও ছিলেন আলোকসন্ধানী। অন্ধকার থেকে আলোকের পথে যাত্রা। তাঁর সেই যাত্রাপথের প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করার মতো ধৈর্য্য না থাকলে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে। আবিদ আজাদের কবিতাও কোনো কোনোটা ধৈর্য্য ধরে অনুসন্ধান না করলে আলো ও অন্ধকারের যাত্রা ধরা সম্ভব নয়। ” তোমাদের উঠোনে কি বৃষ্টি নামে? রেলগাড়ি থামে”…… কবি কি দারুণ এক চিত্র এঁকেছেন। সাধারণ পাঠকের জন্য ভাষার ঠাসবুননে নিজের প্রিয়তমা নারী কে প্রশ্ন করছেন, অবাক করা প্রশ্ন। শব্দের বিশিষ্ট সজ্জায় কবির এমন প্রশ্নের মায়াজালে আমরা বিমোহিত হই। জাদুবাস্তবতার মোড়কে কবিতা এগোতে গিয়ে আবার তা রিয়ালিজমের সরল ধারায় প্রবাহিত হয়। ” নামে বৃষ্টি হুঁশ হুঁশ ধোঁয়ায়? ” পরক্ষণেই “ঘরের ফুসফুস ভরে ওঠে উত্তুরে হাওয়ায়! ” লক্ষ্য করুন, বৃষ্টি নামছে হুঁশ হুঁশ ধোঁয়ায়?? কি মায়াময় চিত্রকল্প। সেখানে বৃষ্টি শুরু হলে প্রকৃতির ভালবাসায় পৃথিবী শীতল হয়।কবির ভাষায় “ঘরের ফুসফুস ভরে ওঠে হঠাৎ উত্তুরে হাওয়ায় “। বৃষ্টি নেমে আসার এমন রোমান্টিক দৃশ্যকল্প কবি এঁকেছেন। অসাধারণ এই কবিতা বাংলা কবিতার ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ থাকবে।

আবিদ আজাদ দীর্ঘ কবিতা লিখেছেন অনেক। তাঁর নারীকে নিয়ে।প্রেমকে নিয়ে। দৃশ্য দেখার ভিন্ন চোখ ছিল আবিদ আজাদের। তাঁর কবিতা নিয়ে কবি ফারুক মাহমুদ যথার্থই বলেছেন,” আবিদ আজাদ এক স্বপ্নময় কবি,ছায়াচ্ছন্ন, রৌদ্রালোকিত, বৃষ্টিতে ভেজা আর বাতাসে শুকিয়ে তৈরি হয়েছে তাঁর কবিতাভুবন।স্মৃতি তাঁকে তাড়িত করেছে।স্মৃতিমেদুরতা তাঁর একটি বড় কবিতা- এলাকা।” (প্রেমের কবিতাসমগ্র,ভূমিকা-ফারুক মাহমুদ, পৃষ্ঠা -০৪)। দীর্ঘ কবিতাগুলো পাঠ করতে যেয়ে কখনো মনে হয়নি তিনি খেই হারিয়ে ফেলেছেন। দারুণ গতিতে কবিতা এগিয়েছে চিত্রকল্পের চমৎকার ছবির ফ্রেমে।
আমরা আর একটি কবিতার কিছু অংশ পাঠ করি,
“” তুমি”কে?
কেন তুমি আমার কবিতার আলো অন্ধকার জ্যোৎস্না ও কুয়াশায় বারবার ঘুরে-ঘুরে আসো?
কেন আসো?
আমার কবিতার ভেতর একটি পথ আছে
শীতের কুলকুল জ্যোৎস্নায় খুব নির্জন সেই পথ
কুয়াশার খোয়াওঠা ডানার ধুলো ও শুকনো পাতায় সারা রাত ভীষণ হুহু করে সেই পথ
আর একটি বালক রোজ ঘুমের মধ্যে একটি প্রজাপতি হয়ে উড়তে-উড়তে পার হয়ে যায়
সেই গতজন্মের রাস্তা-
তুমি কি সেই স্বপ্নের ডানাঅলা বালক?”
(আমার কবিতার ‘তুমি’ শব্দটিকে নিয়ে, পৃষ্ঠা -৭১)
আবিদ আজাদ প্রেমের কবি। প্রেম, ভালোবাসা নিয়ে আমাদের বাংলা কবিতার অঙনে অসংখ্য কবিতা লেখা হয়েছে ইতোপূর্বে। আরো লেখা হবে ভবিষ্যতে। মানব- মানবীর প্রেম নিয়ে কবিতা লেখার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হলো, কবি তাঁর চিত্রকল্পের বাহাদুরি। বৈষ্ণব পদাবলীতে বিচিত্র সুক্ষ্ম প্রকাশ ঘটেছে। আবার আল মাহমুদের সোনালি কাবিন কবিতায় এসেছে সম্পর্কশাস্ত্রের জ্যামিতিক নকশায়।যা পাঠক হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আবিদ আজাদের কবিতায় নারী পুরুষের ভাবনা, দৃষ্টিভঙি কোনো ডিসকোর্স মেনে আসেনা।আসে বৃষ্টিস্নাত আকাশের রঙধনুর মতো স্বচ্ছ চমকিত ঢঙে। লক্ষ্য করিঃ

“আমার সব প্রশ্নের একটাই সঠিক উত্তরঃতোমার শরীর
হ্যাঁ, তোমার শরীর সেই উদ্ধত ও সংবৃত সান্দ্রভাষা
যার মহান আন্দোলনের মধ্যে মুক্ত
আকাশ ও নদীর স্রোত,পাহাড় ও গিরিশৃঙ্গের আর্তি
তোমার শরীরের ঘুম ও জাগরণের মধ্যে ঝাপটায়
শিল্পকলা ও কবিতার ডানা
আর আমি যতবারই উচ্চারণ করি ‘প্রেম’
ততবারই আবিষ্কৃত হয় একেকটি নতুন মহাদেশ।
(তোমার শরীর, পৃষ্ঠা ১৩১)

” যখন শৃঙ্গারে কাঁপতে থাকো তুমি সাবমেরিনের মতো
সংগমে উৎফুল্ল হয়ে ওঠো
বেজে ওঠো পল্লবের মতো
পাখির কাকলি ভরা বসন্তের গভীর আওয়াজে
তখন তোমাকে দেখে আমার কবিতা।
(তখন তোমাকে দেখে আমার কবিতা, পৃষ্ঠা ৮২)
আবিদ আজাদের কবিতা সময়ের, দশকের সীমানা উতরিয়ে মানসিকবিকাশে এক অনন্য উচ্চতায় অভীষ্ট লাভ করেছেন তাঁর সময়েই। তাঁর কবিতা বারেবারে পাঠ করলে একটা বিষয় সামনে আসে, তিনি কবিতা নিয়ে নিরিক্ষার দোলাচালে উপনিত হননি।লিখে গেছেন, যখন যে বিষয়, চিন্তা তাঁর মস্তিষ্কের নিউরনে এসেছে। তাঁর দীর্ঘ কবিতার শরীরে প্রবেশ করলে এটা অনুধাবন করা যায়। দীর্ঘ কবিতা লেখা খুব কষ্টসাধ্য কাজ। গীতল ও গল্প ঢঙে কবিতা যাঁর তাঁর কলম দিয়ে প্রসব হয়না। আবিদ আজাদ পেরেছেন। দুঃসাধ্য ও দুঃসাহসিক কাজ করেছেন এই চিরকালের কবি। সত্তর দশকের কবি আবিদ আজাদ। কিন্তু তাঁর কবিতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কবিদের জন্য নতুন পথের নিশানা নির্দেশ করে।

তৌফিক জহুর
সম্পাদক, উদ্যান

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
      1
23242526272829
30      
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com