শেখ আবু নাছিম, উপজেলা প্রতিনিধিঃ পুরো বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের সাথে অঘোষিত একটা যুদ্ধে নেমে গেছে তখন জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাংলাদেশের চলছে ক্ষণস্থায়ী লকডাউন। এই লকডাউনে বন্ধ অফিস আদালত থেকে শুরু করে নিম্নমধ্যবিত্ত দের উপার্জনের সব মাধ্যম। এতে বিপাকে পড়েছে তাদের পরিবারগুলো। খাদ্য ও আর্থিক সংকটে পড়লেও সামাজিক লোক লজ্জার ভয়ে অনেকে তা প্রকাশ্যে আনতে পারছে না। তাদের জন্যই সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে অবস্থিত “কাঁকশিয়ালী ফাউন্ডেশন” একটি ব্যতিক্রমধর্মী ত্রাণ বিতরণের আয়োজন করেছে।
৬ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে ফাউন্ডেশনটির একঝাক নিরালস পরিশ্রমী কর্মী নিম্নমধ্যবিত্তদের বাসায় যেয়ে এটা নিশ্চিত করে কারা বেশি কষ্টে আছে। কিছু সহৃদয়বান মানুষের অর্থায়নে এমন কষ্টে থাকা ৫৬টি পরিবারের কাছে মধ্যরাতেই ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তারা। মূলত এই পরিবারগুলো যেন সামাজিকভাবে লজ্জায় না পড়ে সেদিকেই লক্ষ রেখে এরূপ সিদ্ধান্ত।
এই বিষয়ে ফাউন্ডেশনটির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন ছোটন জানান তারা সামাজিক ভাবে কাওকে লজ্জায় ফেলতে চান না। সাথে সাথে কোভিড-১৯ করোনা অতি সংক্রমিত ভাইরাস হওয়ায় তারা একই জায়গায় বেশি লোক নিয়ে ত্রাণ বিতরণ পরিহার করে বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছেন। এই সময় তিনি সমাজের বিত্তবানদের এভাবে এগিয়ে এসে রাতের আধারেই ত্রাণ বিতরণ করতে অনুরোধ জানান।
তারা কতদিন এভাবে নিম্ন মধ্যবিত্তদের পাশে থাকবেন জানতে চাওয়া হলে ফাউন্ডেশনটির ক্রিয়া সম্পাদক ও ত্রাণ বিতরণ কমেটির কোষাধ্যক্ষ কাজী রাফিদ আহছান জানান আল্লাহ তা’আলা তাদের যতদিন সুস্থ ও সাবলম্বী রাখবেন তারা এভাবে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করবেন। তিনি আরো বলেন সমাজের বিত্তবানদের সাহায্যের হাত বাড়াতে পারলে খেটে খাওয়া নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা আরো ত্রাণ পাবেন।
সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে দেখা যায় তারা কিছু পরিবারের দরজার সামনে খাদ্যদ্রব্য রেখে দরজায় ধাক্কা দিয়ে দূর থেকে মনিটরিং করছে। এতে করে কারো হাত থেকে ত্রাণ নিতে না হওয়ার সকলে স্বাচ্ছন্দ্যে ত্রাণ নিয়ে ঘরে যাচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে ত্রাণ বিতরণ কমেটির সকলকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এবিষয়ে ফাউন্ডেশনটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ এক ফেসবুক লাইভে জানান সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার প্রতিটা প্রান্তে তারা ছড়িয়ে পড়তে চান, যাতে করে খাদ্য অভাবে কেও না থাকে।
উল্লেখ্য প্রথম পর্যায়ে কালিগঞ্জ, শীতলপুর, বাগনলতা, পূর্বনলতা, ইন্দ্রনগর, শ্বানপুকুর, বিশলক্ষী, সোনাটিকারি, মাঘুরালী, সেহারা ও খানজিয়া থেকে বাছাইকৃত ৫৬টি পরিবারের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেয় তারা।