নিউজ ডেস্কঃ
রাতভর রাস্তার পাশে পড়ে ছিলো মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মরদেহ, উদ্ধার করে দাফন করল পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা
বরিশালের উজিরপুরে রাস্তার পাশে সারা রাত ধরে মরে পড়ে থাকা অজ্ঞাত এক পাগলের লাশ প্রায় ১৬ ঘণ্টা পরে উদ্ধার করে দাফন করা হয়েছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ওই লাশ কেউ উদ্ধার করে দাফনের উদ্যোগ না নেওয়ায় বিষয়টি জেনে ওসি জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা লাশ উদ্ধার করে দাফন কাফনের ব্যবস্থা করে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ জন্য উজিরপুরবাসী তাদের মানবতার ফেরিওয়ালা বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ওসি, চিকিৎসক ৫ পুলিশ সদস্য ও করোনাকালে লাশ দাফনের দায়িত্বে এগিয়ে আসা পৌর কাউন্সিলর বাবুল সিকদারসহ চারজন স্বেচ্ছাসেবীর উপস্থিতিতে রবিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়। এদিকে এক সংখ্যালঘু ব্যক্তির দান করা জমিতে ওই পাগলের দাফন করা হয়।
জানা গেছে, গত ৪-৫ দিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তি উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের পীরেরপাড় নামক এলাকায় ঘোরাফেরা করত। আকস্মিক শনিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে মারা যায় সে। রাতভর রাস্তার পাশে পড়েছিল ওই পাগলের মরদেহ। করোনা আতঙ্কে কেউ এগিয়ে আসেনি লাশটি উদ্ধারের জন্য। পরে খবর পেয়ে রবিবার সকালে উজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে একটি টিম মৃতদেহটি উদ্ধার করে দাফন করেন।
এসময় ওসি জিয়াউল আহসান দাফনের কাপড়সহ যাবতীয় সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি দাফনে অংশ নেওয়াদের ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রনতি বিশ্বাস জানান, তিনি উজিরপুর থানা পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় রবিবার সকালে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির লাশটি উদ্ধার করে দাফনের ব্যবস্থা করেছেন।
ওসি জিয়াউল আহসান জানান ‘মানুষ মানুষের জন্য’ এ ব্রতি নিয়ে লাশটি দাফন করা হয়েছে। এছাড়া সে করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা সেটা নিশ্চিত না হলেও তাকে নিয়ম মেনে সতর্কতার সঙ্গে জানাজা এবং দাফন করার পাশাপাশি তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তি যেখানে মারা গেছেন সেখানে কোনো মুসলিম পরিবার নেই। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওই এলাকায় দাফনের জন্য জায়গা না থাকায় স্থানীয় সুশান্ত হালদার নামের এক মানবদরদী অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি তার বাড়ির পাশে নিজের জমিতে লাশ দাফনের অনুমতি দিলে সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।