রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
ঢাকা ১৯ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের সাথে আইউএফ এর মতবিনিয় কংগ্রেসম্যানদের সই জালকারী বিএনপি একটা জালিয়াত রাজনৈতিক দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে জাতি গুণীজনকে সম্মান দিবে,সে জাতি তত উন্নত হবে;পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা,এমপি জেলা পুলিশ,সাতক্ষীরার মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা এপ্রিল-২০২৪ অনুষ্ঠিত পাটকলগুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করছে সরকার …বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী নানক পশুর জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগাদা দিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাতক্ষীরার ১২ গুণীজন ও এক প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সহিত কেএমপি’র পুলিশ কমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশের সকল মানুষ এক ছাতার নিচে বাস করবে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী সদস্যপদ ফিরে পেলেন জায়েদ, বাদ হতে পারে নিপুণের?

প্রিয় সম্পাদক, আপনি ছাড়া সকলই আধারে ঢাকা

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০, ৫.১২ পিএম
  • ২২৯ বার পঠিত

আমার সাংবাদিকতার মহাশিক্ষক, সব সফলতার প্রেরণাদানকারী, অসীম সাহসের যোগানদাতা প্রিয় সম্পাদক নঈম নিজাম করোনায় আক্রান্ত-আমি অনেক চেষ্টা করেও তা বিশ্বাস করতে পারছি না। তার মতো করোনা বিরোধী ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা প্রস্তুতকারীকে করোনা কেন, পৃথিবীর কোনো ভাইরাস ছুঁতে পারে না। মানুষের আবিস্কৃত তপ্ত শীসা বুলেট, কামানের গোলা, যুক্তরাষ্ট্রের কার্পেট বোমা ভেদ করেও মাথা উচু করেই স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকার মানুষ নঈম নিজাম। আমি বারবার চোখ বন্ধ করে তার অসুস্থ মুখায়ব ভাবনায় আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। বারবারই কেবল সতেজ, সজিব, সদা ব্যস্ততার হাসি মুখখানাই ভেসে উঠে আমার বন্ধ চোখে। দেশের বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় থাকা করোনা শনাক্তকারী মেশিনটি ভুল রিপোর্ট দেয় অহরহ, যিনি মেশিনের দেওয়া রিপোর্টটি কম্পিউটারে নাম যুক্ত করে প্রিন্ট করেন তার অসাবধানতা আর গাফিলতি থাকে পদে পদে। এসব কারণে সম্পাদক মহোদয়ের ভুল রিপোর্ট দেয়া হয়েছে-এ কথাটি আমি শত শত বার বিশ্বাস করতে রাজি আছি। কিন্তু সম্পাদক মহোদয়ের ‘করোনা পজেটিভ‘ তা একবারের জন্যও বিশ্বাস করতে মন সায় দিচ্ছে না।
একজন নঈম নিজামের অবর্তমানে আমরা যে কত শত আধাদক্ষ যোদ্ধা অভিভাবকশূণ্য হই, কতজন যে জীবন মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ি- তার সবকিছুই মহান আল্লাহপাক জানেন। সেই মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের কত শত এতিমকে কখনই অভিভাবকশূণ্য করবেন না, আশ্রয়হীন বানাবেন না; একজন মুসলিম হিসেবে তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমি। এমনকি তার ন্যূনতম অসুস্থতাও যে মেনে নিতে পারছি না।
সম্পাদক মহোদয়ের প্রশংসা করার যোগ্যতা, দক্ষতা, ভাষাজ্ঞ্যান কোনকিছুই নেই আমার। শুধু বুঝি- তিনি আমাদের প্রাণ। বাবার মতো ভাই হিসেবেই চিনি জানি তাকে। শুধু কর্মক্ষেত্রই নয়, জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে তার অবদান বিদ্যমান। সেই মহান মানুষটি কোনো কারণেই আমাদের ছেড়ে দূরে থাকতে পারেন না, পারবেন না। আমরা যাকে একবার স্মরণ করলে তিনি উল্টো আমাদের নিয়ে দশ বার ভাবেন, চেহারাটুকু দেখেই কেমন আছি তা অবিকল বলে দিতে পারেন-তার কী জানা নেই তাকে ছাড়া আমরা কেমন থাকছি? কেমন থাকতে পারি?
আমরা তো প্রতিনিয়ত তার কাছ থেকেই শিখি, জানি- বুঝার মতো বিদ্যাটুকু অর্জনের চেষ্টা করি। রাষ্ট্রের প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে ঢাউশ ঢাউশ সাইজের প্রতিবেদন তৈরি করেও কিভাবে তাদের আক্রোশমূলক মামলার ঝক্কি এড়ানো যায়, কিভাবে এমপি-মন্ত্রীদের অপকর্মের ফিরিস্তি সাবলীলভাবে তুলে ধরেও সাভাবিক থাকতে হয়-সবই তো নঈম নিজাম হাতে কলমে শিখিয়েছেন। তিনি যেন বিশাল সাহসের বৃহত্তম আর্কাইভ। আগে বড় আকারের উপ-সম্পাদকীয় লিখে তবেই নানা অব্যবস্থাপনার বিষয়ে নজর কাড়া সম্ভব হতো। কিন্তু ইদানিং নঈম নিজাম ভাই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে নতুন আরেকটি থিমের জন্ম দিয়েছেন। খুব অল্প কথায় সরাসরি লিখে তা স্ট্যাটাস আকারে ফেসবুক-টুইটারে তুলে ধরা। সামান্য কিছু শব্দের সে লেখাতে সমস্যা-অনিয়ম তুলে ধরার পাশাপাশি তা সমাধানের ব্যাপারেও চমৎকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন তিনি। এসব স্ট্যাটাস যে কতটা শক্তিশালী তা শত শত মন্তব্য দেখেই বুঝে নেওয়া যায়। করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও সম্পাদক মহোদয়ের একটি স্ট্যাটাসের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এটুকু পাঠ করেই বুঝে নিন বিদ্যমান অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে তার আঘাত কতটা শক্তিশালী, কতটা মজবুত ভিত্তির উপর রচিত।
‘এমপি সাহেবের চিকিৎসা তাঁর নির্বাচনী এলাকার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মন্ত্রী সাহেবের চিকিৎসা নিজের জেলা সদর হাসপাতাল, সচিব ও আমলাদের জন্য সরকারী কর্মচারী হাসপাতাল বাধ্যতামূলেক করুন, দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত সত্যি বদলে যাবে। সাধারন মানুষ চিকিৎসা পাবে। যদি তা করা না যায় বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ভয়াবহতা কোনদিন শেষ হবে না। পাতালে হাসপাতালে পড়ে যেতে হবে।‘
গত ৩০ মে আরেকটি যুগান্তকারী স্ট্যাটাস প্রকাশ হয় নঈম নিজামের ফেসবুক টাইম লাইনে। এতো কঠিন সত্য কথাগুলো অবলীলায় প্রকাশ করার এ প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন পাঠকদের আন্দোলিত করবে।
‘সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সকল হাসপাতালে করোনা ইউনিট থাকবে। বেসরকারি পাঁচ তারকা হাসপাতালগুলো অভ্যন্তরীণভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে করোনা রোগী ভর্তি করবে না। এখন দেখা যাক কে বেশি শক্তিশালী? বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের সংগঠন সম্পাদক আবার মন্ত্রী। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের মালিকানায় মন্ত্রী এমপিরা। গতকালও ইউনাইটেড, এভার কেয়ারসহ (অ্যাপেলো) এই হাসপাতালগুলো রোগী ভর্তি করেনি। আইন শুধু নিরিহ মানুষের জন্য? আজ ওরা আইন না মানলে, সরকার চুপ থাকলে, কাল নিরীহ মানুষও সরকারের দরকার নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।‘
০০০ ০০০ ০০০
সম্পাদক নঈম নিজাম এমনই একজন-যার মুখোমুখি হলেই আমি পাহাড়সম সাহসের যোগান পাই। আমার জন্য অবশ্য বাড়তি পাওনা থাকতো নিয়মিত। সে পাওনা বকা খাওয়ার পাওনা। এতেই আমার পরম আনন্দ। যেদিনই তিনি ঠোট উল্টে আফসোসের সঙ্গে বলে উঠেন-কিচ্ছু হবে না, তোমাকে দিয়ে আর কিছুই হবে না। আমি তখখনই নিশ্চিত হয়ে যাই-আজকালের মধ্যেই আমার ভারিক্কি কোনো লীড হচ্ছেই। প্রথম প্রথম সম্পাদক মহোদয়ের বকাবকি শুনলে মন খারাপ হতো। নিজে নিজেই কষ্ট পেয়ে ভাবতাম, দিনরাতের মধ্যে ১৮টি ঘন্টা ধরেই সংবাদ আর সাংবাদিকতাই আমার চারণক্ষেত্র। শ্রম, ঘাম, দায়িত্ব পালনে সামর্থের সর্বোচ্চটুকু দিতে আমি বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করি না। তবুও কেন বকা খাবো? তবুও কেন তিনি খুশি হন না??
কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই আমি সেসব বকা আর তার বিরক্তি আনন্দ, মহানন্দেই হজম করার কৌশলটি রপ্ত করতে সক্ষম হই। আমি এখন ভাবি-মহাশিক্ষকের বকাবকিতে সাংবাদিকতায় আমার একেকটি অধ্যায় শেষ হয়। মা-বাবা দুজনকেই হারিয়েছি আরো এক যুগ আগে। এখন জবাবদিহিতামুক্ত স্বাধীনতা পেয়েছি-কিন্তু অভিভাবক হারানোর যন্ত্রণা প্রতিমুহূর্তে কুড়ে কুড়ে খায় আমায়। শাসনের বেড়াজালমুক্ত জীবন যে কতটা বিস্বাদের তা ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কারো বোঝার উপায় নেই। তেমনই অসুস্থতাজনিত কারণে নঈম নিজাম ছাড়া বাংলাদেশ প্রতিদিন তথা ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সটিও প্রাণহীন, উচ্ছ্বাসহীন। এখানে সবাই কাজ করছেন, পেশাগত ছুটোছুটিও আছে কিন্তু কর্মমূখর পরিবেশ চোখে পড়ে না। অসম্ভব ডাইনামিক মানুষটিই আমার শ্রদ্ধাভাজন অভিভাবক, আমাদের সম্পাদক। তিনি কাজ আদায় করে নেয়ার ক্ষেত্রে অভাবনীয় কৌশলী, শৃঙ্খলা রক্ষায় বড়ই কঠোর, আবার ছোট ছোট টিপ্পনি কেটে হাস্যরস ছড়িয়ে দিতেও তার জুড়ি মেলে না। তাকে ছাড়া আমাদের কর্ম চলে, কিন্তু কর্মক্ষেত্রটি মূখর হয়ে উঠে না কোনভাবেই। তাকে ছাড়া আমার পেশাগত কাজও চলে, কিন্তু সে কাজে নতুনধারা খুঁজে পাই না মোটেও। সেখানে উচ্ছ্বাস থাকে না, কাজে তাগিদও বোধ করি না।
সংবাদপত্রের ক্ষেত্রটিতে টানা ৩১ বছর পার করে এসেও নিজের ব্যর্থতা প্রতিনিয়ত মেপে নিতে পারি সম্পাদক মহোদয়ের টেবিল থেকে। আজও নঈম নিজামের ৭/৮ শব্দের হেডিংয়ের তথ্য মেলাতে সাঈদুর রহমান রিমনদের দিনের পর দিন মাঠে ছুটতে হয়, আজও তার দুটি শব্দের প্রমান জোটাতে ব্যর্থ হয়ে লুকোচুরির আশ্রয় নিতে হয়। তারপরও নিজেকে বিশাল মাপের সাংবাদিক হিসেবে জাহির করতে এতটুকু লজ্জা পাই না, এতটুকু জড়তাও বোধ করি না। মাঠ পর্যায়ের তথ্য ক্ষেত্রগুলোর এখনো যোগাযোগ রাখা পেশাদার সাংবাদিক নঈম নিজামকে সম্পাদক হিসেবে পেয়ে অনেক অনেক সুবিধা ভোগ করি ঠিকই তবে পেশাদারিত্ব রক্ষায় ও সংবাদ মানের প্রশ্নে ঝক্কি ঝামেলাও কম পোহাতে হয় না। তবুও তার টেবিলে দেয়া পরীক্ষায় টেনেটুনে পাশ করতে পারলেই লাখো পাঠকের ভালবাসা জোটে, প্রশংসা মেলে ঘরে ঘরে। এ লোভেই বারবার পরীক্ষা দিয়ে মাঝে মধ্যে ধন্যবাদযুক্ত পাশ জোটে কপালে। সে আনন্দেই দিন, মাস, বছর যে কিভাবে কেটে যায় তা টেরও পাই না।
সম্পাদক মহোদয়,
শিগগির আপনি আমাদের মাঝে ফিরে আসুন। আল্লাহর রহমত আর আমাদের ভালবাসা করোনার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। দুটোই আপনি পুরোপুরি পান, পাচ্ছেন। সাবধানতা অবলম্বন করা, হোম করেন্টাইন কিংবা আইসোলশনে থাকাকে আমরা আপনার একান্ত বিশ্রাম হিসেবে মনে করতে চাই। যদিও এমন বিশ্রামের সঙ্গে আপনাকে মিলিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের। প্লীজ, শুধু জেনে রাখুন-আপনি ছাড়া আমরা কেউ কেউ গভীর আধারে পথহারা। জীবন গোছানো সে তো অনেক দূরের বিষয়। এ আমার নিছক আবেগ নয়-সবচেয়ে বড় সত্য, সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।
(আমার প্রিয় সব মানুষের কাছে বিনীত অনুরোধ: আমাদের প্রাণপ্রিয় সম্পাদক নঈম নিজামের জন্য প্রাণখোলা দোয়া চাই-কর্মস্থলে দ্রুত সম্পাদক মহোদয়ের প্রাণবন্ত উপস্থিতি কামনা করি)

লেখক সাইদুর রহমান রিমন

ক্রাইম চিফ রিপোর্টার,বাংলাদেশ প্রতিদিন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
    123
18192021222324
25262728293031
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com