একজন আফজাল হোসেন। একজন সব্যসাচী শিল্পী। অনেক পরিচয়ে পরিচিত, অনেক গুণে গুণান্বিত, অনেক সম্ভাষণে অভিসিক্ত। তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, একজন কাজপ্রিয় পরিচালক এবং একজন সৃজনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাতা। এর বাইরে তিনি ছবি আঁকেন, কবিতা লেখেন, লেখেন গল্প- উপন্যাস, আর করেন উপস্থাপনা।
আফজাল হোসেন ১৯৫৪ সালের ১৯ জুলাই সাতক্ষীরার পারুলিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আলি আশরাফ হোসেন ছিলেন একজন মেডিকেল অফিসার। আফজাল হোসেন ছিলেন ঐতিহ্যবাহী নলতা হাইস্কুলের শিক্ষার্থী। শৈশব-কৈশোরের উচ্ছ্বল সময়টি তাঁর কেটেছে নলতা হাইস্কুলের কড়া কানুনের বাস্তবতায়। স্কুলের কিংবদন্তি ‘হেডস্যার’ দরবেশ আলীর বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন তিনি।
আফজাল হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট কলেজের ছাত্র ছিলেন।
আফজাল হোসেন সত্তর দশকের মাঝামাঝি থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। বক্স-অফিস হিট করা “দুই জীবন”, “নতুন বউ” এবং “পালাবি কোথায়” সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৮৪ সাল থেকে তিনি বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেন। বাংলাদেশের মডেলিং জগৎ কে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে তার অবদান অনস্বীকার্য।
লেখালেখিতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। ‘শুধু একটাই পা’, ‘কোনো জোনাকি এ অন্ধকার চেনেনা’, ‘১৯ নং কবিতা মোকাম’ ইত্যাদি তাঁর কাব্যগ্রন্থ। ‘বিরহকাল’, ‘কানামাছি’, ‘পারলেনা রুমকি’, ‘কুসুম ও কীট’ তাঁর লেখা উপন্যাস। তাঁর একমাত্র ভ্রমণ রচনা ‘মানস ভ্রমণ’। ‘যুবকদ্বয়’, ‘জাহাঙ্গীর বাদশার ঘোড়া’, ‘কথায় কথায় রাত’ ইত্যাদি তাঁর গল্পগ্রন্থ। ১৯ নং কবিতা মোকাম কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ২০১৯ সালে সিটি ব্যাংক আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পান। ২০১২ সালেও তিনি শ্রেষ্ঠ প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে একই পুরস্কার লাভ করেন।
আজ জন্মদিনে তাঁর প্রতি নিরন্তর শুভকামনা। তাঁর সৃজনে-নির্মাণে রঙিন হোক পৃথিবী। প্রার্থনা, শতায়ু হোক তাঁর জীবন।
মো. মনিরুল ইসলাম
পরিচালক
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট