শুধুমাত্র তুই করে বলার কারণে কুমিল্লা শহরের চাঁনপুরে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটানোর কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাশেদুল ইসলাম শাওন(১৯) নামের এক তরুনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত রাশেদুল ইসলাম কুমিল্লা শহরের চাঁনপুর উত্তর পাড়ার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ছেলে।
নিহতের ভাই কামরুল ইসলাম জনি ও নিহতের চাচা সহিদুল ইসলাম এবং ঐ এলাকার প্রতিবেশিরা জানান, শুক্রবার বিকেলে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিবেশি শ্যামল মিয়ার ছেলে সজিব তাকে তুই শব্দ উচ্চারণ করে বলে,“এই পুরান হোন্ডা কোথা থেকে আসছোস?” এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাওন ঐ ছেলেক থাপ্পর মারে। এ ঘটনার জের ধরে কয়েকজন ছেলে এসে শাওনের বাড়িতে হামলা করে এবং মটর বাইকে কোপ মারে এবং সজিবের লোকজন তাকে বাসা থেকে উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন বিষয়টি নিয়ে সামাজিকভাবে বসে সমোঝোতার প্রস্তাব দিলে সজিবের লোকজন বলে, উভয়ে মিলে গেছি, সমঝোতার দরকার নাই । বিষয়টা এখানেই শেষ।কিন্তু তাদের মনের মধ্যে অন্য পরিকল্পনা ছিল।
নিহতের ভাই কামরুল ইসলাম জনি আরও জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে রাশেদুল ইসলাম শাওন চাঁনপুর খেয়াঘাটের কাছে আলী আকবর শাহ মাজারের কাছে গেলে সেখানে শ্যামল মিয়ার ছেলে সজিব, হুমায়ুন মিয়ার ছেলে সাকিব, রাজিব, নিহাল ও রিন্টু গংরা তাকে ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে রাস্তায় ফেলে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে।
স্ট্যাম্পের আঘাত মাথায় লাগলে শাওন গুরুতর আহত হয়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকার যাত্রাবাড়ির ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতলে নেওয়া হলে সেখানে ইনটেসসিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৪টায় রাশেদুল ইসলাম শাওনের মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর শাওনের মরদেহ কুমিল্লা শহরের চাঁনপুরের বাড়িতে নিয়ে আসা হলে পুলিশ খবর পেয়ে শাওনের বাড়িতে গিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
ময়নাতদন্ত শেষে জানাজা নামাযের পর বাদ আসর শাওনকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের ভাই কামরুল ইসলাম জনি বলেন, শাওন আহত হওয়ার পর তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে যাত্রাবাড়ি ফ্রেন্ডশীফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাশেদুল ইসলাম শাওনের মৃত্যু হলে শাওনের বাবা নিজেই বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, মারামারির ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এখন নতুন করে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। মামলা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।