মাদারীপুর প্রতিনিধি: কালকিনি উপজেলার দক্ষিন কানাইপুর গ্রামের বোরহান সরদার ও স্বজল সরদারের সঙ্গে গত মঙ্গলবার (৪ আগষ্ট) আনুমানিক সাড়ে ১২টায় পূর্ব শত্রুতার জেরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৫টি বসতঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনসহ যুবলীগ নেতা মোঃ শাহাদাত সরদার উভয় পক্ষের মধ্যে সালিস মিমাংসার জন্য এগিয়ে আসলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রদান আসামী করে ২৪জনের বিরুদ্ধে আকলিমা বেগম (৪০) নামের এক নারী কালকিনি থানায় ওই দিনে একটি ঘর পোড়া মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় গত বুধবার (৫ আগষ্ট) গভীর রাতে ওই সমন্বয়কারীসহ ৩ জনকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন থানা পুলিশ। তবে আটকের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় সাধারন জনগন।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, কালকিনি উপজেলার দক্ষিন কানাইপুর গ্রামের বোরহান সরদারের সঙ্গে একই গ্রামের স্বজল সরদারের দীর্ঘদিন থেকে পূর্ব শত্রুতা চলে আসছে। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে সংঘর্ষে জরিয়ে পরে। এসময় গিয়াসউদ্দিন, জামাল রাঢ়ী, বাদশা সরদার ও হারুন সরদারসহ উভয় পক্ষের ৫টি বসতঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় মাতুব্বর ও যুবলীগ নেতা মোঃ শাহাদাত সরদার উভয় পক্ষের মাঝে শালিস মিমাংসার জন্য এগিয়ে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শালিস মিমাংসার প্রধান সমন্বয়কারীসহ ২৪ জনকে আসামী করে আকলিমা বেগম (৪০) নামের এক নারী বাদী হয়ে কালকিনি থানায় একটি ঘর পোড়া মামলা দায়ের করেন। পরদিন রাতে মিমাংসার প্রধান সমন্বয়কারী মোঃ শাহাদাত হোসেন সরদার ও তাহার ভাই সেলিম সরদার ও তাহার চাচা আবুবকর সরদারকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন কালকিনি থানা পুলিশ । এ আটকের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় সাধারন জনগন। এদিকে এ বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে চড়ম উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শাহাদাত সরদারের সমর্থক গোষ্ঠীর এক নেতা বলেন, গ্রেফতারের ঘটনায় আমি বিস্মিত হয়েছি। যুবলীগের এই নেতা আসন্ন কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছিলেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুকের অনুসারী। সরদার মো. শাহাদাত হোসেন বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করছেন। যুবক শ্রেণীর কাছে তার একটা জনপ্রিয়তা রয়েছে। প্রবাসী এই নেতা অর্জিত টাকা খরচ করছেন, কেউ এখনো তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তুলতে পারেননি। কিন্তুু দক্ষিন কানাইপুর গ্রামে বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় শাহাদাত সরদারের বিরুদ্ধে কালকিনি থানায় মামলা রুজু মাত্রই তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় শাহাদাত সরদারের সমর্থক গোষ্ঠী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
স্থানীয় একজন শিক্ষক বলেন, শালিস জদি মামলার আসামী হয়ে আটক হয় তাহলে কোন লোক ভাল কাজ করার জন্য এগিয়ে আসবেনা। আসলে এটা একটা দুঃখ জনক ঘটনা।
মামলার আসামী ও সালিশ মিমাংসার প্রধান সমন্বয়কারী মোঃ শাহাদাত সরদার বলেন, আমি এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য সালিস মিমাংসা করতে আসি। তাই আমাকে আজ আসামী হতে হয়েছে। আসলে এটা একটা রাজনৈতীক ষরযন্ত্র বলে আমি মনে করি। আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই এ ষরযন্ত্র করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালকিনি থানার ওসি মোঃ নাছির উদ্দিন মৃধা বলেন, ঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনায় শাহাদাত সরদারসহ ২৪জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। তাই তাকে সহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
সাবরীন জেরীন, মাদারীপুর।