পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে তিন কোটি টাকা মূল্যের চারটি গাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে চারটি গাড়ি উদ্ধারসহ পাঁচ প্রতারককে আটক করেছে ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশ। আটককৃতরা হলো- ১। জারাক আহমেদ (৩৮), ২। আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮), ৩। মোঃ জামির হোসেন (৩৬), ৪। মোঃ সজল আহম্মেদ (৩০) ও ৫। আব্দুর রহমান রুবেল (৫৬)।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি.) রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করা হয়।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা সূত্রে জানা যায়, জনৈক মোঃ ইমদাদুল হক খান ওরফে নওশাদ (৪২) একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। তেজগাঁওয়ের ২৪০, আজিজ কোর্ট গ্রাউন্ড ফ্লোরে তার একটি গাড়ি বিক্রয়ের শো-রুম রয়েছে। এবি ড্রাইভ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ (৩৮) ও চেয়ারম্যান মোঃ জামির হোসেন (৩৬) গত ২৬ নভেম্বর ২০২৪ হতে ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিক্রয়ের উদ্দেশে চারটি গাড়ি ডেলিভারি চালান মূলে ভাটারা থানাধীন নর্দ্দা প্রগতি স্মরণি এলাকায় এবি ড্রাইভ লি. এর শো-রুমে নিয়ে যায়। গাড়ি চারটি হলো-১। ২০২৩ মডেলের একটি টয়োটা হেরিয়ার জীপ গাড়ি, ২। ২০১৮ মডেলের একটি টয়োটা ভেলফেয়ার জীপ গাড়ি, ৩। ২০১৮ মডেলের একটি টয়োটা এসকোয়্যার মাইক্রোবাস ও ৪। ২০১৯ মডেলের একটি টয়োটা এক্সিও প্রাইভেটকার। গাড়ি চারটির সর্বমোট বাজার মূল্য তিন কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা গাড়িগুলো ফেরত দেবেনা বলে জানায় এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। ইমদাদুল হক খান খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা গাড়িগুলো প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের উদ্দেশে এবি ড্রাইভ লি. নর্দ্দা বাসস্যান্ড এলাকার শো-রুম থেকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি. ইমদাদুল হক খানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জারাক আহমেদ ও মোঃ জামির হোসেন সহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা রুজু হয়।
তদন্তাধীন এই মামলায় থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি.) রাত আনুমানিক ০২:০০ ঘটিকার গুলশান লিংক রোড এলাকা হতে এবি ড্রাইভ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ (৩৮) কে আটক করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও কাশিমপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এজাহারনামীয় আসামি মোঃ জামির হোসেনের সহযোগি আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮) কে আটক করা হয়।
থানা সূত্রে আরো জানা যায়, আটককৃত আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮) কে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে জানায় তার বস মোঃ জামির হোসেন (৩৬) তাকে একটি টয়োটা এসকোয়্যার মাইক্রোবাস গাড়ি এবং একটি টয়োটা এক্সজিও প্রাইভেটকার তার জিম্মায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় রাখতে বলে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মহানগর আফতাব নগর এলাকা হতে ওই গাড়ি দুইটি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে আরো দুইটি গাড়ির কথা জিজ্ঞাসাবাদ করলে, সে বলে অন্য গাড়ি দুইটির বিষয়ে মোঃ সজল আহম্মেদ (৩০) অবগত রয়েছে বলে জানায়। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ি মোঃ সজল আহম্মেদ (৩০) ও আব্দুর রহমান রুবেল (৫৬) কে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ভূইগড় এলাকা হতে মোঃ সাইদুর রহমান (৩৭) এর হেফাজত হতে একটি টয়োটা ভেলফেয়ার জিপ গাড়ি ও একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা এই চারটি গাড়ি আটককৃতরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিলো মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
মামলার নিবিড় তদন্ত ও আটককৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।