আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার কেন্দ্রিক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী এনডিসি।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি.) শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ট্রাফিক পরিকল্পনা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার। এর আগে তিনি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার কেন্দ্রিক ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আগামীকাল অর্থাৎ আজ রাত ১২:০১ঘটিকা থেকে উদযাপিত হতে যাচ্ছে। পরম শ্রদ্ধা ভরে পুরো জাতি এই দিবসটি পালন করবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রথমে ভিভিআইপি, ভিআইপি এবং তারপরে জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আনুমানিক রাত ১২টা ৪০ মিনিটে জনসাধারণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী গেট উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। আমি সকলকে অনুরোধ করব সবাই যেন বেদীতে পুষ্পমাল্য দেওয়ার সময় যথাযথ শৃঙ্খলা মেনে চলেন।
তিনি বলেন, শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষের সমাগম অনেক বেশি হয় এবং শহিদ মিনারে প্রবেশের সময় অনেক ভিড় হয়। এই ভিড়ের মধ্যে যেন কোনো দুর্ঘটনা না হয় আমরা তার জন্য সচেতন থাকব। পাশাপাশি যারা আসবেন তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আপনারা নিজেরা নিজেদের নিরাপত্তা, মোবাইল, মানিব্যাগ ও মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, শহিদ মিনার কেন্দ্রিক তিন/চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজকে সন্ধ্যা পাঁচ ঘটিকা থেকে আগামীকাল দুপুর তিন ঘটিকা পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন উপলক্ষে আমরা কোন নিরাপত্তার আশঙ্কা দেখছি না। ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে স্থাপন ও সাধারণ দেহ তল্লাশি। কেউ যেন দাহ্য পদার্থ, বিস্ফোরক দ্রব্য বা এই জাতীয় কোন কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন এদিন প্রচুর লোক সমাগম হয় সেজন্য সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। সাথে শহিদ মিনারের চতুর্পাশে এক কিলোমিটার রেডিয়াসের ভিতরে আমাদের বিভিন্ন মোবাইল টিম মোতায়েন থাকবে।
শহিদ দিবস উপলক্ষে ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক গৃহীত ব্যাবস্থা সংক্রান্তে অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ সরওয়ার, বিপিএম-সেবা বলেন, শহিদ মিনার কেন্দ্রিক ব্যাপক লোক সমাগম হবে সেজন্য সাতটি পয়েন্ট রোড ব্লকার দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে। পয়েন্টগুলো হলো- শাহবাগ ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, চাঁনখারপুল ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং ও বকশীবাজার ক্রসিং। পায়ে চলাচলের রাস্তা হলো পলাশী ক্রসিং হতে ভাস্কর্য ক্রসিং, জগন্নাথ হল ক্রসিং হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রবেশ এবং শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রোমানা ক্রসিং-দোয়েল চত্বর ক্রসিং হয়ে বের হয়ে যেতে পারবেন। অন্য কোন পথ দিয়ে বের হতে পারবে না।
তিনি বলেন, সাধারণত সন্ধ্যা ছয় ঘটিকায় সংশ্লিষ্ট রাস্তা বন্ধ করা হয়। তবে এবার ঢাকা শহরের ট্রাফিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাত ৮:০০ ঘটিকায় নির্ধারন করেছি। তবে রাত ৯:০০ঘটিকায় নিশ্চিত সংশ্লিষ্ট রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। রাত ১২:৪০ ঘটিকা হতে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য জনসাধারণকে আসার অনুরোধ জানান তিনি।
এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ সরওয়ার, বিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মোঃ নজরুল ইসলাম, পিপিএম-সেবা; যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।