রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র ভূয়া সাংবাদিক তৈরির কারখানাগুলো নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। অশিক্ষিত, গন্ডমূর্খ, সোর্স, চিহ্নিত চাঁদাবাজ, বহু মামলার আসামি, ঘোষিত মাদক ব্যবসায়ি, ফুটপাতের হকার অলৌকিক ভাবে পত্রিকার ডিক্লিয়ারেশন হাতিয়ে রাতারাতি সম্পাদক বনে গেছেন। আবার কেউবা গোটা পত্রিকাটাই কিনে বা হস্তান্তর চুক্তির মাধ্যমে সম্পাদক প্রকাশক হওয়ার সুবিধা অর্জণ করেছেন। কথিত এ সম্পাদকদের অনেকে নিজের নাম সাক্ষর করতেও কলম ভাঙ্গার উপক্রম হয়। কেউ কেউ নাম সাক্ষরের রাবার স্ট্যাম্প বানিয়ে নিয়েছেন। ডজন ডজন মামলার আসামি এমনকি হত্যা মামলার প্রধান আসামি, তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ি, চিহ্নিত প্রতারক, মলম পার্টির সদস্যরা কোন্ কৌশলে কত টাকার বিনিময়ে পুলিশ গোয়েন্দাদের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জুটিয়ে ডিক্লিয়ারেশন হাতিয়েছেন তা বলার সাধ্য নেই। জাল জালিয়াতির সার্টিফিকেটসহ দলিলপত্রাদি জমা দিলেও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও কী এক আশ্চর্য জাদুর বলে সেসব কাগজে চোখ বুজে সই করে দিয়েছেন। বলিহারি সব আয়োজন! দায়িত্বহীন দুর্নীতিবাজদের লুটপাটের ঘৃণ্যচিত্র এসব। তাদের হাত গলিয়েই ডিক্লিয়ারেশন লাভ করেই কথিত সম্পাদক সাহেবরা দুটি কাজে তড়িৎকর্মা হয়ে উঠেন। ১) শহরের সুবিধাজনক স্থানে ঢাউস সাইজের একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন ২) সাংবাদিকতার আইডি কার্ড দেদারছে বিক্রির মহোৎসব। এ শ্রেণীর সম্পাদক প্রকাশকরাই দেশজুড়ে চিহ্নিত অপরাধীদের মাঝে হাজার হাজার কার্ড বিক্রির মাধ্যমে সাংবাদিকবহুল দেশে পরিনত করেছেন। কার্ডধারী অনেকেই নিজেকে লাইসেন্সধারী চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচয় দিতেও দ্বিধা করে না। এসব কারণেই কার্ড বিক্রেতা সম্পাদকদের অনেকেই সাংবাদিক তৈরির কারখানা আখ্যা দিয়ে ইয়ার্কীও করে থাকে।
বহু ত্যাগ, ঝুঁকি আর সততার অজ¯্র দৃষ্টান্ত সৃষ্টির গৌরবদীপ্ত পেশা সাংবাদিকতার এহেন অমর্যাদা ও কলঙ্ক লেপনের ঘটনা নিরবে মেনে নেয়া যায় না, যেতে পারে না। যাদেরকে সাংবাদিকতা কিছু দিয়েছে বলে মনে করেন, এর কল্যাণে নিজে ব্র্যান্ড হয়েছেন। পরিচিতি মিলেছে দেশজুড়ে, পেয়েছেন আলাদা রকমের সম্মান। তারা নিরব নিস্ক্রিয় থাকলে পেশাটির প্রতি চরম অসম্মান জানানো হচ্ছে বলেই গণ্য হবে।