অনেক সময় আমাদের অনেককেই একব্যাগ রক্তের প্রয়োজনে উদ্ভ্রান্তের ছুটে বেড়াতে হয়। ডোনার খুঁজে বেড়াই, রক্ত পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এর গুরুত্ব অনুভব করি কিন্তু রক্ত পাওয়ার পর ভুলে যাই, কিভাবে কার সহায়তায় কিংবা কার দানে রক্ত পেলাম!!!
কাউকে ব্লাডের জন্য কল দেওয়ার আগে কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখা উচিত…
# ডোনার খুঁজতে কাউকে অনেকের কাছে ফোন করতে হচ্ছে…
# ডোনারের যাতায়াত খরচ,
# যে বেলায় ব্লাড দিবে ঐ বেলার খাওয়ার খরচ,
# ডাব,স্যালাইন পানি,কিছু ফলমূল কিনে দেওয়ার খরচ দেয়াটা সাধারন ভদ্রতা,
পরবর্তী ২৪ ঘন্টা ডোনারের খোঁজ খবর রাখবেন। পারলে কোন এক সময় বাসায় দাওয়াত দিবেন।
যারা ব্লাড দেয় তারা বেশিরভাগই স্টুডেন্ট, মেসে থেকে পড়াশুনা করে। তারা প্রতিনিয়ত ব্লাড দেয়। অনেক সময় দেখা যায় পরের দিন এক্সাম তবুও ব্লাড দেয়। আবার, যারা ব্লাড খুজে দেয় তারাই জানে ১ ব্যাগ ব্লাড খুজে বের করা কতটা কষ্টের। সময়, শ্রম দিয়ে ডোনারকে খুজে বের করতে হয়। অনেকেই তো সেগুলা জানেন ই না।
কিন্তু রোগীর রিলেটিভদের ব্যবহার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিবেকহীনতার পরিচয় দেয়। কোনো খোজ খবরই নিতে চায়না যে চরম এই বিপদের সময় এই রক্ত কোথা থেকে এলো। একজনকে বলে দেয়, তারপর মনে হয় সব দায়ভার ঐ বেচারার। নিজের সম্মান রক্ষার জন্য হলেও ঐ বেচারা ডোনারকে কেয়ার করে। অনেক ডোনার জবও করেনা। হয়তো আত্মীয় স্বজন, না হয় পরিচিত, নতুবা মানবতার জন্য মানুষের বিপদে এগিয়ে যায়।
নামীদামী হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেন, একদিনে ৩/৪ হাজার টাকা করে কেবিন ভাড়া দিতে পারেন। কিন্তু যে মানুষটা তার সবথেকে মূল্যবান জিনিস দিয়ে আপনাকে হেল্প করছে, তার কদর করবেন না, এমন হওয়া উচিত নয়।
যে দেশে ২৫০ মিলি গ্রাম পানির বোতল কিনে খেতে হয়, সে দেশে বিনা টাকায় ৪৫০ মিলি গ্রাম রক্ত দাতাকে সম্মান করা আমাদের সকলের কর্তব্য…
লেখকঃ রাজশাহী পুলিশ একাডেমির আইন প্রশিক্ষক ‘হাসান হাফিজুর রহমান।