নাছরুল্লাহ আল কাফীঃবাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কতৃক রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের জন্য আগামী ২০২১- ২০২২ অর্থ বছরে অর্থ বরাদ্দ রাখার দাবীতে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন করেন ‘বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক সমিতি’ পিরোজপুর জেলা শাখা।
রবিবার (২৩ মে) দুপুর ১২.৩০ এর দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংগঠনের সভাপতি মাওলানা মোঃ তাজুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন, সহ সভাপতি মাওলানা মোঃ নূরুল আমীন, সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমাম হোসেন, সদর উপজেলা সভাপতি মোঃ আব্দুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জহিরুল ইসলাম, কাউখালি উপজেলা সভাপতি হাফেজ মোঃ সোলায়মান, নেছারাবাদ উপজেলা সভাপতি মোঃ নূরুল আমীন, নাজিরপুর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশীদ, ইন্দুরকানী উপজেলা সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম, ভান্ডারিয়া উপজেলা সভাপতি মোঃ মহিব্বুল্লাহ, মঠবাড়িয়া উপজেলা সভাপতি মোঃ মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
বক্তরা বলেন- ১৯৭৮ অডিনেন্স ১৭ (২) ধারা মোতাবেক মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে রেজিঃ প্রাপ্ত হয়। রেজিষ্ট্রেশন হওয়ার পর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৮ইং সনে একই পরিপত্রে রেজিষ্ট্রার বেসরকারী প্রাইমারী ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি হতে হতে ২০১৩ সনে ৯ জানুয়ারী বর্তমান মহাজোট সরকার ২৬১৯৩ টি বেসরকারী প্রাইমারী স্কুল জাতীয়করণ করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় সকাল ০৯ থেকে বিকাল ০৫ টা পর্যন্ত সরাসরী একই সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণি শিক্ষার্থী সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যায় সরকারের সকল কাজে অংশগ্রহণ করে। অথচ মাস শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ২২-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পায়। কিন্তু ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকগণ তেমন কোন বেতন ভাতা পায় না তবুও তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন- চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সারা দেশের বেতন বঞ্চিত কর্মরত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। আগামী ২১-২২ অর্থ বছরের অর্থ বরাদ্দ প্রস্তাব ও নিম্নোক্ত দাবীসমূহ বাস্তবায়নের ঘোষণার দাবীতে কোভিড-১৯ এর নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিম্নোক্ত কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংগঠনের সভাপতি বলেন- ২০১৮ সালে ১লা জানুয়ারী থেকে ১৬ জানুয়ারী পর্যন্ত শিক্ষক সমিতি অবস্থান ধর্মঘট ও অনশন চলাকালীন সময় সরকারের নির্দেশে সচিব মহোদয় অান্দোলন স্থলে এসে শিক্ষকদের দাবী মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু আজো তা বাস্তবায়ন হয়নি। ১৫১৯ টি ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকগণ সর্বসাকুল্যে প্রধান শিক্ষক ২৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষক ২৩০০ টাকা ভাতা পায় বাকি রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত মাদরাসাগুলোর শিক্ষকগন ৩৭ বছর যাবৎ বেতন ভাতা হতে বঞ্চিত। যা এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে অমানবিক, শিক্ষকদের অবমাননা ছাড়া কিছুই না।
এসময় সংগঠনের নেতৃবৃন্দেরা নিম্নোক্ত ৭ দফা দাবীকরেন, দাবীগুলো- (১) প্রাইমারীর ন্যায় সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয় করনের জন্য ২০২১/২০২২ অর্থ বছরে অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা, (২) কোড বিহীন মাদরাসাগুলো বোর্ড কতৃক কোড নম্বর অন্তর্ভুক্ত করণ, (৩) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা নীতিমালা ২০১৮ সংশোধন করে আলিম শিক্ষক ১ জনের পরিবর্তে এইচ এস সি পাশ ১ জন সমমান অন্তর্ভুক্ত করণ, (৪) প্রাইমারীর ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় অফিস সহায়ক নিয়োগ, (৫) প্রাইমারীর ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় শিক্ষকদেরকে পিটিআই ট্রেনিং এর ব্যাবস্থা করণ, (৬) প্রাইমারীর ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা অাসবাবপত্র’সহ ভবন নির্মাণ, (৭) প্রাইমারীর ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় স্থায়ী রেজিষ্ট্রেশনের ব্যাবস্থা করণ।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দেরা আবারও পরবর্তী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হবে বলে জানান।