মাজহারুল রাসেল : ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার শর্ত সাপেক্ষে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখার অনুমতি দিয়ে ছিল।কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের হার ও মৃত্যু বৃদ্ধি পাওয়ায় ধরুন সরকার শপিংমল ও হাট বাজার বন্ধ ঘোষণা করেন।এতে করে চরম অনিশ্চয়তার দিন কাটাচ্ছেন সোনারগাঁও উপজেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কারণ গত বছরের ক্ষতি এখনো কাটিয়ে ওঠা যায়নি, তাই নতুন করে সব বন্ধ করে দেওয়া হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হবে না। অর্থনীতিবিদদের তথ্য অনুযায়ী, গত লকডাউনের পর দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম ফের চালু হলেও এখনো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেননি উদ্যোক্তারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, একটি দোকান ঘিরে কয়েকটি পরিবারের জীবিকা চলে। মালিক, কর্মচারী আবার তাঁদের মা-বাবা, স্ত্রী, সন্তান। তাই দোকান না খুলে আর কী-ই বা বিকল্প আছে। সুরক্ষিত থেকেই তাঁদের ব্যবসা করতে হবে।
সোনারগাঁও উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছে,সামান্য পুঁজি নিয়ে তারা ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। গত বছর সাধারণ ছুটিতে বন্ধ থাকার কারণে এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন অনেক টাকা করে লোকসান হয়েছে।
এখন পর্যন্ত সেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার কাঁচপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন খাবারের দোকানের বিক্রেতা রবিন। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, নাগেট, শাশলিক, চিকেন বল বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘লকডাউনে বেচাকেনা হয় না। গত বছরের লকডাউনে কেনাবেচা একদম বন্ধ ছিল। গত চার মাসে সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার পথে ছিলাম, এই লকডাউনে তো আবার ক্ষতির মুখে পড়ব।’
মদনপুর এলাকার আরেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উজ্জ্বল।তিনি নিজের বাসার সামনে একটি ফাস্টফুড ও কফি শপ দিয়েছেন। কিন্তু এই করোনা ভাইরাস এর জন্য তিনি তার ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে ফেলেছেন। বর্তমানে এনজিও থেকে কিস্তি নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন কিন্তু লকডাউনের জন্য তার ব্যবসা বন্ধ আছেন। তাই তিনি শঙ্কায় আছেন আবার তিনি পুঁজি হারিয়ে রাস্তায় নামবেন।
উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মার্কেট গুলোর সামনে ও পেট্রোল পাম্পে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ফুটপাতে তাদের দোকানপাট সাজিয়ে বসে। কিন্তু বিভিন্ন সময় করোনাভাইরাস এর দরুন সরকারি ভাবে লকডাউন দেওয়াতে, এই সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের পুঁজি হারিয়েছেন অনেক আগেই। কিন্তু আবার ধারদেনা করে যে সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় নেমেছেন নেমেছেন, তাদের ধারণা এমনভাবে লকডাউন থাকলে অচিরেই তারা আবার ঋণগ্রস্ত হয়ে ব্যাবসায়িক পুঁজি ধ্বংস করবে। তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মনে করেন, যেকোনো মূল্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় আমাদের মত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কে ব্যবসা করার সুযোগ তৈরী করে দেওয়া উচিত।