রাজশাহী ব্যুরোঃ করোনা ও লকাউনের মধ্যেই রাজশাহীতে জুলাই মাসে পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী হত্যা ২, হত্যার চেষ্টা ২, আত্মহত্যা ৪, ধর্ষণ, নির্যাতন ও যৌন নির্যাতন ৬ জন নারী ও শিশু।
উন্নয়ন সংস্থা লেডিস অর্গানাইজেশন ফর সোসাল ওয়েলফেয়ার (লফস) অত্র জেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ নারী ও শিশুর উন্নয়নে কাজ করছে। মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে লফস সংস্থার ডকুমেন্টেশন সেল থেকে রাজশাহীর প্রচারিত দৈনিক পত্রিকার সংবাদের ভিত্তিতে নিয়মিত নারী ও শিশু নির্যাতনের পরিস্থিতি প্রকাশ করে। লফস মনে করে অত্র অঞ্চলে নারী ও শিশু নির্যাতন পরিস্থিতি বিভিন্ন মাত্রায় অবনতি ঘটছে। যৌতুক ও পরকীয়ার কারনে অধিকাংশ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি কিছু টিভি সিরিয়াল পরকিয়াকে উৎসাহিত করছে।
এছাড়া পারিবারিক কলহ ও প্রেম ঘটিত কারনে হত্যা-আত্মহত্যা ও অমানবিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে। বিষয়গুলো কারও জন্য সুখকর নয়। জুলাই মাসে অমানবিক কিছূ ঘটে যাওয়া ঘটনার চিত্র – গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ী ইউনিয়নের সোগুনা গ্রামে আরিফিন খাতুন (১৭) নামে কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, বাগমারায় প্রতিবন্ধী কিশোরীর (১৮) বাসায় বৃষ্টির সময় বাসায় কেউ না থাকায় এক বখাটে কর্তৃক কিশোরীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ, বাঘার বলরামপুরে সেতু (১৪) নামের স্কুল ছাত্রীর নানীর উপর অভিমান করে গলায় ফঁাস দিয়ে আত্মহত্য,া বাগমারার হামিরকুৎসা গ্রামের দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রী (১৫) কে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ, দুর্গাপুর উপজেলার পৌর এলাকার গোড়খাই গ্রামে মাবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় পিতার উপর অভিমান করে ৮ম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় মোহাম্মদ আওয়াল (১৪) বিষপানে আত্মহত্যা, পুঠিয়ায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার (৪০) কে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ, বাঘা উপজেলার নওটিকা গ্রামের হাওয়া বেগম (৬২) নামের বৃদ্ধা নারীর লাশ উদ্ধার, মোহনপুর উপজেলার তশোপাড়া গ্রামে ঘরে একা পেয়ে গৃহবধুকে ধর্ষণচেষ্টা কালে গৃহবধুর চিৎকারে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা, পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া কারিকর গ্রামে আতেকা (৩৫) নামের বিধবা নারীকে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করার অভিযোগ, বাঘায় বিয়ের দাবীতে প্রেমীকের বাড়িতে প্রেমীকার (২৬) অনশন, তানোর উপজেলার পাচঁন্দর ইউপির শাহাপুর গ্রামে পূর্বের বিরোধের জের ধরে গৃহবধু আমেনা খাতুন কে শ্লীলতাহানী ও হত্যার চেষ্টা, তানোরের চিমনা গ্রামে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ অভিযোগের ঘটনাগুলো সকলের জন্য উদ্বেগজনক। লফস এর নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন বলেন সংবাদ পত্রে প্রকাশিত ঘটনার বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটে যা প্রকাশিত হয় না বা কোন তথ্য জানা যায় না এমন বাস্তবতায়।
রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকাশিত তথ্য হতাশাজনক। রাজশাহী অঞ্চলে নারী – শিশু নির্যাতন সহ সার্বিক ঘটনাগুলোর সুষ্ঠ তদন্ত ও দায়ীদের দিষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ক্রমশই অপরাধীরা উৎসাহিত হবে এবং অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। লফস সকল নারী-শিশু নির্যাতন ঘটনাগুলোর সুষ্ঠ তদন্ত স্বাপেক্ষে অপরাধীর কঠোর শাস্তির দাবী জানান।
জুলাই মাসের নারী ও শিশু পরিস্থিতির তথ্য তুলে ধরা হলো-
হত্যাঃ শিশু – ০০ জন নারী – ০২ জন মোট – ০২ জন
হত্যার চেষ্টাঃ শিশু – ০০ জন নারী – ০২ জন মোট – ০২ জন
আত্বহত্যা ঃ শিশু – ০৩ জন নারী – ০১ জন মোট – ০৪ জন
ধর্ষন ঃ শিশু – ০১ জন নারী – ০১ জন মোট – ০২ জন
যৌন নির্যাতনঃ শিশু – ০১ জন নারী – ০০ জন মোট – ০১ জন
নির্যাতনঃ শিশু – ০১ জন নারী – ০২ জন মোট – ০৩ জন
সর্বমোট – শিশু – ০৮ জন নারী – ০৮ জন মোট – ১৪ জন।