ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক ইলিয়াস হোসেন আজ সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন। তিনি আহ্ছানিয়া মিশনের আজীবন সদস্য ছিলেন।
অত্যন্ত প্রাণবন্ত এবং সদা হাস্যোজ্জ্বল মানুষ ছিলেন ইলিয়াস আঙ্কেল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার ভবনে তার অফিসে কতো শতবার যে গিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। তার গল্প ফুরোতো না কখনো। তার জীবনের লড়াই সংগ্রামের গল্প, নলতা শরীফের খাদেম মামার গল্প, আহ্ছানিয়া মিশনের গল্প। খাদেম মামার কথা বলতে গিয়ে তিনি হু হু করে কেঁদে উঠতেন। টেবিলে তার জরুরী কাগজ ভিজে যেতো চোখের জলে। বেলা শেষ হলে প্রতিবারই গল্পগুলো অসমাপ্ত রেখেই উঠতে হতো।
তিনি আমার বাবার বন্ধু ছিলেন। বাবার সাথে তার হৃদ্যতার কথা শুনাতেন। বলতেন- যে দিন আমরা ফেলে এসেছি গাঁয়ের মেঠোপথে, শহরের আলোয় সেসব দিনের দেখা মেলে না।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নানা কারনে তার টেবিলে যেতাম। শত কাজ ফেলে পাশে চেয়ার টেনে বসাতেন। বিশ্ববিদ্যালয় পার হয়ে আসার পরেও বিভিন্ন জনকে তার টেবিলে পাঠাতাম। তিনি বিরক্ত না হয়ে আগে আপ্যায়ণ করে আমাকে ফোন করতেন। বলতেন- মনিরুল তোমার লোকের কাজ হয়ে গেছে। আমি খুব অবাক হতাম- একটা ব্যস্ত মানুষ কতোটা আন্তরিক হতে পারেন!
প্রাণবন্ত মানুষটির অবয়ব এখন প্রাণহীন। গল্পপ্রিয় মানুষটি আজ নির্বাক। চাকুরী শেষে সব ছেড়ে-ছুড়ে নলতায় আসতে চেয়েছিলেন। সব ছেড়ে-ছুড়ে এখন তার প্রাণহীন দেহটি এখন নলতা শরীফের পথে! আমাদের অফুরন্ত গল্পমালা আজ ফুরিয়ে গেলো।
মহান আল্লাহ মরহুম ইলিয়াস আঙ্কেলকে জান্নাত নসীব করুন।
তথ্যসূত্রঃ প্রভাষক মনিরুল ইসলাম প্রিজম এর ফেসবুক থেকে