শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
কালিগঞ্জে জাতীয় পাটির সভাপতি মাহবুবর রহমানের মায়ের কুলখানি অনুষ্ঠিত ভূমিমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্র গণপূর্তমন্ত্রীর সাথে ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধির সৌজন্য সাক্ষাৎ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে সরকার বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব গঠন করবে। – পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন খাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে -তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী নতুন প্রজন্মের মাঝে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরার আহ্বান জানান মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। কালিগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন করলেন আতাউল হক দোলন এমপি Jolpore.com অনলাইন বুক রিভিউ প্রতিযোগিতা পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই  এথেন্স সম্মেলন : দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

যেখানেই বেওয়ারিশ লাশ,সেখানেই ‘বাতিঘর

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২২, ৯.৩৩ এএম
  • ১১২ বার পঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতাঃ
যেখানেই বেওয়ারিশ লাশ,সেখানেই ‘বাতিঘর’,বাতিঘর নামে সামাজিক সংগঠনের নামটি যেন এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল মানুষের মুখে মুখে ফুটে উঠেছে। তারা তাদের কর্নকান্ডে তাই ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার প্রধান সড়ক টিএ রোডের সেতুর ওপর পড়ে ছিল মো. সোহেল মিয়া (৩০) নামের এক ভিক্ষুকের লাশ। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার সানু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়ার পরিবারের এক সদস্যের খোঁজ মিললেও অনেক সময় পর্যন্ত লাশ দাফনে কেউ এগিয়ে আসছিলেন না,তখন ঐ ব্যক্তির শেষ ঠিকানা নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসেন ‘বাতিঘর’ সংগঠন।
২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পরিচয়হীন লাশ এলেই ডাক পড়ে ‘বাতিঘর’র সদস্যদের। এ বছরের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা বাতিঘর এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মতো ‘পরিচয়হীন’ ও ‘স্বজনহীন’ লাশের দাফন সম্পন্ন করেছে। এ ছাড়া করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া একাধিক ব্যক্তির লাশ দাফনেও সহায়তা করেছিলেন’বাতিঘর’-এর সদস্যরা।
করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের লাশ দাফনে বেশ বেগ পাওয়ার কথা, এ কয়থাটি সবারই জানা। আবার কোথাও কোথাও স্বজনরা সটকে পড়ার মতো বেদনাদায়ক ঘটনাও ঘটেছে। সেই দুঃসময়ে সঙ্গী হয়ে এগিয়ে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কিছু তরুণ। করোনায় মৃতদের দাফনে সহায়তা করত তারা। আলোচনা করে দাঁড় করায় সংগঠন, নাম ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’। সেই বাতিঘর এখন পরিচয়হীন ও স্বজনহীন লাশের শেষ ঠিকানা।
বাতিঘর এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনায় আক্রান্তদের লাশ দাফনে সহায়তা করতে কিছু যুবকের এগিয়ে আসা। এ বছরের ১ জানুয়ারি ‘বাতিঘর’ নামে সংগঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজে নামেন তাঁরা। লিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের এরিয়া ম্যানেজার মো. আজহার উদ্দিন সংগঠনটির কর্ণধার। সাংবাদিক ও চিকিৎসকরা রয়েছেন সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে। পরিচয়হীন লাশ পাওয়া গেলে এর দাফন সম্পন্ন করা হলো সংগঠনটির প্রধান উদ্দেশ্য। এ ছাড়া কেউ স্বজনহীন কিংবা অসহায় হলেও দাফন কাজে সহায়তা করে তারা। পৌর এলাকার মেড্ডায় তিতাস নদীর পারে লাশ দাফন করা হয়। সর্বশেষ গত ১৩ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে উদ্ধার হওয়া দুজনের লাশ দাফন করেন ‘বাতিঘর’-এর সদস্যরা।
সংগঠনের সঙ্গে জড়িতরা জানান, মূলত ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়াদের লাশগুলোই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরিচয়বিহীন হয়। এ ছাড়া মাঝে মাঝে নবজাতকের লাশও পাওয়া যায়। হাসপাতাল সূত্র, পুলিশ কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে খবর পেয়ে তাঁরা লাশ দাফনের কাজে এগিয়ে আসেন। হাসপাতাল মর্গে থাকা লোকজন এ ক্ষেত্রে তাঁদের সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে থাকেন। পরিচয়বিহীন লাশ এলেই তাঁরা বাতিঘরকে আহ্বান জানান দাফন করে দেওয়ার জন্য। ধর্মীয় বিধি মেনে জানাজা পড়িয়ে তাদের লাশ দাফন করা হয় বাতিঘরের মাধ্যমে।
বাতিঘরের সক্রিয় সদস্য মো. তানভীর জানান ‘আমি কবর খোঁড়ার দায়িত্বে আছি। এমন কাজে থাকতে পেরে আমার মনের মধ্যে যে কী অনুভূতি সেটা বলে বোঝানো যাবে না। যত কাজই থাকুক চেষ্টা করি সহায়তা করতে। সম্ভব না হলে অন্যদের সহযোগিতা নিয়ে কাজটা করিয়ে দিই।’
বাতিঘরের কর্ণধার মো. আজহার উদ্দিন বলেন, ‘মূলত করোনায় মৃতদের দাফনের জন্য বাতিঘরের প্রতিষ্ঠা। ওই সময় করোনায় মৃতদের দাফনে স্বজনদের বেগ পেতে হতো। দাফনের জন্য লোক পাওয়া যেত না। তখন আমরা এগিয়ে আসি। এখন নিয়মিত বেওয়ারিশ লাশ দাফন করা হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লাশ দাফনে সরকারিভাবেও বরাদ্দ থাকে। কিন্তু আমরা সেদিকে তাকিয়ে থাকি না। নিজেদের টাকায় সব কিনে ফেলি। আমার আয়ের টাকা এখানে ব্যয় করা হয়। কবর খোঁড়ার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে ফেলা হয়েছে। খবর পাওয়ামাত্র কাফনের কাপড়সহ অন্য সব কেনা হয়। এ জন্য আলাদা আলাদা টিম রয়েছে। কেউ কবর খুঁড়বে, কেউ কাপড় কিনবে, কেউ বা লাশ নেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে, কেউ দাফনে সহায়তা করবে। জানাজা পড়ানোর জন্যও একজনকে রাখা হয়েছে। আগে দিন-রাতের যেকোনো সময় লাশ দাফনের কাজ করা হতো। তবে বিভিন্ন কারণে এখন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ে লাশ দাফন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা সদর হাসপাতাল মর্গের ইনচার্জ মো. সুমন ভূঁইয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে পরিচয়হীন লাশের দাফন কাজ করা হতো। কিন্তু একটি সমস্যার কারণে সংগঠনটি এখন আর কাজ করছে না। এ অবস্থায় বাতিঘরের মাধ্যমে লাশ দাফনের কাজ হচ্ছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে আসা পরিচয়হীন লাশ দাফনে প্রায় সময়ই নানা সমস্যা দেখা দিত। এখন আর সে অবস্থা নেই। পরিচয়হীন লাশের খবর পেলেই ছুটে আসেন বাতিঘরের সদস্যরা। বাতিঘরের উদ্যোগটি অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
  12345
20212223242526
27282930   
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com