ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর পার হলেও নরসিংদীর রায়পুরার ১৭৫ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও নির্মিত হয়নি কোনো শহীদ মিনার। ফলে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও শহীদদের সম্পর্কে জানে না শিক্ষার্থীসহ তরুণ প্রজন্মের অনেকেই। আবার যে সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে সেগুলো সারাবছর পড়ে থাকে অযত্নে অবহেলায়। ২১ ফেব্ররুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস।
১৯৫২র মাতৃভাষার জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন ওই সকল শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনারগুলোতে এইদিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৯৯টি। এর মধ্যে ১৬২ টি বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। এ ছাড়া মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনগুলোর বেশিরভাগে নেই শহীদ মিনার।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মাধ্যমিকের অধিনস্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে ৭২টি। এর মধ্যে ১৩ টিতে নেই শহীদ মিনার। ফলে শিক্ষা উপজেলার ১৭৫ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার নেই। তবে এর বাইরেও রয়েছে কিন্ডারগার্টেন ও এনজিও পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
সে হিসাবে বাস্তবে শহীদ মিনার না থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরও বেশি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান মোহাম্মদ জুনায়েদ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গত বছর শহীদ মিনারের জন্য একটা ডিজাইন করে দেওয়া হয়েছে। এই ডিজাইন অনুযায়ী স্থনীয়ভাবে স্থানীয় উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মাণ করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই বা বরাদ্দ ও নেই। এই ডিজাইন অনুযায়ী আমি স্থানীয় উদ্যোগে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেছি।
অন্যান্য স্থানে আরো যাতে করতে পারি সেই চেষ্টায় আছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেই তালিকা জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছাদেক বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলব। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার ইচ্ছে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো : আজগর হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। এদের কোনো নির্দেশনা থাকলে বাস্তবায়ন করবে। এ বিষয়ে আমাদের এখানে কোনো নির্দেশনা নেই। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ব্যতিত আমরা কিছু করতে পারিনা।