কেনো কম ফিস নিয়ে জুনিয়র আইনজীবীদের মামলা করি সেই হার্ট টাচিং গল্পটা আপনাদের জন্য
আচ্ছা আপনারা একজন আইনজীবী বলেন তো কোনোদিন কোনো আইনজীবী বলতে পারবে যে আমি একজন জুনিয়র আইনজীবী কে কোনোদিন বলেছি তুমি কত টাকা ফিস নিয়েছো আর আমাকে কয় টাকা ফিস দাও? যদি একজন বলতে পারে, আমি আজকে ঘোষণা করছি আমি আর কোনদিন নির্বাচন করবো না। যদি কেউ বলতে পারে আমি তার মক্কেলের সাথে কথা বলেছি বা মক্কেলের মামলা করার চেষ্টা করেছি, আমি এই পদে আর নির্বাচন করব না। এই কাজটি আমি সম্পাদক হওয়ার আগেও করিনি, সম্পাদক হওয়ার পরেও করিনি এবং ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে আইনজীবীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এই কাজটি আমি কখনোই করবো না। কেন করবো না এখন এই প্রশ্ন আসে, আমি এই কথা বলে আমার বক্তব্য শেষ করবো। আমার জীবনের দুঃখের গল্প বলে শেষ করবো!
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, পড়া শেষ করে ইন্টিমেশন জমা দেবো কিন্তু আমি কাকে দিয়ে ইন্টিমেশন জমা দেবো এই লোক আমি খুঁজে পাইনি! আমার পরিবারের বা আমার কোন পরিচিত লোককে (আইনজীবী) আমি কখনো দেখিনাই। এখন যে মাননীয় বিচারপতি জনাব জাফর আহমেদ তখন তিনি ভাষাসৈনিক জনাব গাজীউল হক সাহেবের জুনিয়র হিসেবে কাজ করতেন। গাজীউল হক সাহেবের মেয়ের জামাই জনাব সামসুদ্দিন বাবুল (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থার্ড ব্যাচের ছাত্র) তিনিও তখন তার জুনিয়র হিসেবে নিচতলায় কাজ করতেন। তখন জাফর ভাইকে বললাম, জাফর ভাই আমারতো ইন্টিমেশন জমা দেয়ার জন্য একজন সিনিয়র দরকার। তিনি তখন আমাকে তার সিনিয়রের কাছে নিয়ে গেলেন। জাফর ভাই উনাকে বললেন, স্যার ও আমার ইউনিভার্সিটির এক বছরের জুনিয়র, ওর ইন্টিমেশন ফর্মে আপনি একটু একটা সাইন করেন। উনি আমাকে বললেন, বাবা আমি কি তোমাকে চিনি? আমি বললাম না স্যার আমি চিনি না। তোমাকে আমি না চিনলে তো তোমাকে আমি রেফারেন্স দিতে পারবো না। বাবা, তোমার এমন কোনো আইনজীবী বা কোনো ব্যক্তি যাকে তুমি চেনো বা জানো যাকে আমি কানেক্ট করতে পারি এমন কেউ কি আছে? আমি বললাম না স্যার আমি কোর্ট কাচারির কাউকে চিনি না। তখন উনি বললেন কোনো রেফারেন্স ছাড়া বাবা আমি তো কোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে রেফারেন্স দেবো না। আমি অত্যন্ত ব্যর্থ মনে খুব কষ্ট পাচ্ছি। আমার মনে হচ্ছে আমাি বোধহয় আর আইনজীবী হতে পারবো না! ওখানে বসা একজন শ্বেতশুভ্র লোক যিনি মাথা নীচু করে বসে আছেন। আমি যখন কষ্ট পেয়ে বেরিয়ে আসছি তখন লোকটা আমার পিছে পিছে বেরিয়ে এসে বল্ল, এই ছেলে (পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে) আমি যদি তোমাকে ইন্টিমেশন দেই, তুমি নিবা? বিশ্বাস করেন আমার কাছে মনে হয়েছে আমি তাকে চিনি না জানি না (শ্বেত শুভ্র)……আমি বললাম স্যার, আমি নেবো। কয়, আমার সঙ্গে উপরে আসো। আমি ওনার সঙ্গে উপরে গেলাম। পরম স্নেহে……….. তিনি আমার প্রত্যেকটা ফরম ফিলাপ করে দিলেন, এবং ফিলাপ করে দিয়ে আমাকে বললেন, আমার নাম সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। আমার বাড়ি নড়াইল। আপনার সিনিয়ররা অনেকেই চেনেন। মরহুম সৈয়দ গোলাম মোস্তফা মরহুম শেখ রাজ্জাক আলীর সঙ্গে কাজ করতেন। আমি বললাম স্যার, আপনি কেন আমাকে এটা করে দিলেন? উনি বললেন তুমি আমার এলাকার ছেলে, তুমি ঢাকা ইউনিভার্সিটি’তে পড়ো, তুমি ব্রিলিয়ান্ট, এজন্য এলাকার ছেলে হিসেবে আমি তোমার ইন্টিমেশন ফরমে সাইন করলাম। আমি যেকোনো জায়গায় বলতে গেলে দা অনলি পার্সন, আই ক্রাই ফর সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। আমি পরবর্তী জীবনে অনেকের সঙ্গেই কাজ করেছি…….কিন্তু আমার জীবনের শুরুতে সৈয়দ গোলাম মোস্তফা সাহেবের সেই ইন্টিমেশন ফর্ম যেটা আমি সযত্নে রেখে দিয়েছি। সুতরাং আমার জীবনে আপনার যখন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তারও 23 বছর আগে আমার যশোরের, আমার নড়াইলের সৈয়দ গোলাম মোস্তফা সাহেব আমাকে উকিল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমি অত্যন্ত আবেগ আপ্লুত হয়ে যাই। আমাকে এখনকার সময় দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না, আমাকে বিবেচনা করতে হবে ওই সময়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটি ছেলে যে ঢাকায় কাউকে চেনে না, হল ছাড়া ঢাকায় থাকার কোন জায়গা ছিলো না, আমার কোন আত্মীয় স্বজন ছিল না, আমি কারো বাড়ি যেয়ে এক বেলা খেতে পারি নাই। আমি হলে থাকতাম এবং এরশাদের সময় ইউনিভার্সিটির হল বন্ধ হয়ে গেলে রাতে দেয়াল টপকিয়ে হলে যেয়ে ঘুমাতাম কারন আমার কোনো থাকার জায়গা ছিলো না। সেখান থেকে আমি এই পর্যন্ত আসছি so i always remember my past, আমি অতীতকে মনে রাখি।
Vote for ruhul quddus kazal
Vote for Secretary
Vote for ballot no. 02