তিনি তাঁর গানের ভূবনে আসা প্রসঙ্গে বলেন, “পারিবারিক ভাবেই গানের পরিবেশ পেয়েছিলাম। ছোট থেকেই দেখেছি মা ও বড় ভাই বোনদের গাইতে।সেখান থেকেই গানের প্রতি একটা আলাদা ভালোবাসা জন্মায়। খুব ছোট্ট আমি তখন থেকেই পাড়া বা ক্লাবের অনুষ্ঠানে গাইতাম, এবং স্কুলে ভর্তি হবার পর স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতাম। এ ভাবেই আমার ধীরে ধীরে গানে ভূবণে আসা এবং এক সময় তা পেশা হিসেবে নেয়া।
গানে হাতেখড়ি মা এবং বড় বোনের কাছে। আমার প্রথম স্কুল মেরীগোল্ড। স্কুলটা মফস্বল টাউন হিসেবে খুব আধুনিক ছিল সেই সময়। স্কুলে সংগীত বিষয়ক শিক্ষক তারা স্যার গান শেখাতেন স্কুলের অনুষ্ঠানের জন্য এবং পরীক্ষা নেবার জন্য যতটুকু প্রয়োজন তার দ্বিগুণ।
তবে আমার প্রথম ওস্তাদজী হিসেবে পাই আমাদের নওগাঁর বিখ্যাত ওস্তাদ ভবেশ দা কে যখন আমি গার্লস হাই স্কুলে পড়ি। আমাদের স্কুলের হেড মিস্ট্রেস এর মাধ্যমে উনাকে পাই। উনি আমাকে শিখাবেন বলে নিজ আগ্রহে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন উনার বাসায়। আমি প্রতিদিন স্কুল শেষে উনার বাসায় যেতাম। উনি বিনা পারিশ্রমিকে প্রায় ১বছর তালিম দিয়েছিলেন আমাকে। ভবেশ দা কে আমি সেই এক বছরই পেয়েছিলাম। কারণ তিঁনি অসুস্থ হোন এবং পরলোকগমন করেন।
এর পর বাসায় শেখাতে আসতেন হেলাল স্যার। উনি আমাকে এবং আমার ছোট বোন লাবনীকে শেখাতেন। এছাড়া নওগাঁ শহরের সে সময়ের যত সংগীতগুরু বা গুণীজনেরা ছিলেন প্রায় সবার কাছেই কিছু না কিছু শিখেছি। বিভিন্ন ক্লাব বা সংঘের অনুষ্ঠান হলে তারা আমাদের গ্রুমিং করাতেন। তখন গীতিনাট্য, নৃত্যনাট্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা নাটক খুব বেশি হতো। শিক্ষা সপ্তাহ বলে যে প্রতিযোগিতা হত সেখানে বরাবরই খুব ভালো রেজাল্ট করতাম বলে রাজশাহীর বিখ্যাত ওস্তাদজী আব্দুল আজিজ বাচ্চু ভাইয়ের সান্নিধ্যে আসতে পেরেছিলাম। উনি আমার মেন্টর ছিলেন। এর পর বগুড়ায় ছটি স্যার ও বেলাম হোসেনের কাছে কয়েক বছর তালিম নেই।ঢাকা একেবারেই চলে আসি ১৯৯৮ সালে, তার আগে থেকে যাওতা আসার মধ্যেই ছিলাম। ঢাকায় প্রথম ওস্তাদজী ছিলেন – আতিকুল রহমান। উনি ঢাকা বেতার ও টেলিভিশনের মিউজিক ডিরেক্টর ছিলেন। এর পর ক্লাসিক্যাল ওস্তাদজী ছিলেন সুনীল কুমার মন্ডল।
আমি বেতারে এনলিস্টেড হবার পর বেতারের একজন অফিসারের মাধ্যমে ওস্তাদ হিসেবে পেয়ে যাই বাংলাদেশের বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক শ্রদ্ধেয় খন্দকার নুরুল আলম ভাই কে। উনি আমাকে বেশ কয়েক বছর শেখান।