গাজী এনামুল হক (লিটন)
এহসান গ্রুপের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এর মামলার আসামী হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর মধ্যদিয়ে জামিন দিয়েছে পিরোজপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আজ সোমবার বিকেলে দুইদিন ব্যাপী শুনানী শেষে ৫ টি মামলার জামিন দেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবু জাফর মো: নোমান। এর আগে আদালতে শুনানীর সময় আসামী পক্ষের আইনজীবী ও বাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল হট্টোগোল কে কেন্দ্র করে পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো: আলাউদ্দিন কে বিচারক এজলাস ত্যাগ করতে বললে তিনি বিচারকের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এসময় পাবলিক প্রসিকিউটর এর সাথে অধিকাংশ এডভোকেটরা বের হয়ে এলে কিছুটা নিস্তব্দ হয়ে পড়ে কার্যক্রম। পরে পুনরায় আবার শুনানী শেষে বিচারক আবু জাফর মো: নোমান ১০ হাজার টাকার বেলবন্ডে ৫টি মামলায় জামিন দেন হাফিজুর রহমান কে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান (টিটো) ও তার সহযোগী এ্যাডঃ শেখ আঃ রাজ্জাক জানান, আমরা এহসান গ্রুপের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এর মামলার আসামী হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর কে জামিন এর বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছি। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি।
আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন জানান, হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর এহসান গ্রুপের জালিয়াতির সাথে জড়িত নয়। তিনি কারো থেকে সরাসরি কোন প্রকার টাকা নেননি এবং প্রতারনাও করেননি। তিনি একজন ধর্ম প্রচারক ও ইসলামী চিন্তাবিদ। আদালত মানবিকতার দিক বিবেচনা করে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
উচ্চ আদালত থেকে ৪২ দিনের আগাম জামিন শেষে ১৯ জুলাই মঙ্গলবার পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হলে আদালত তার জামিন শুনানীর রেখেছেন ২৪ জুলাই তারিখে। পরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুইদিন ব্যাপী শুনানীর শেষে আদালত হাফিজুর রহমান কুয়াকাটা হুজুর কে জামিন দেয়।
উল্লেখ্য, প্রতারনা ও জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকদের থেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া অভিযোগে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগিব আহসান সহ তার ভাইয়েরা জেল হাজতে রয়েছে। এহসান গ্রুপের অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৯টি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান ও তার স্ত্রী সালমা আহসানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে। প্রতারনার মামলায় এহসান গ্রুপের সকল স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিয়েছে জেলা জজ আদালত। রাগিব আহসান ও তার সংঙ্গীদের নামে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে প্রতারনার মাধ্যমে ১০১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা স্থাবর অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করার আদেশ দিয়েছে আদালত। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে রাগিব আহসান ও পিরোজপুর থেকে তার দুই ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ।