প্রকাশিত হয়েছে তরুন কবি মনিরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ ‘অনুভবের অনুকাব্য’। একুশে বইমেলার প্রথমদিনেই প্রিয়মুখ প্রকাশন থেকে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে গত বইমেলায় তার ‘ভাবনার ভগ্নাংশ’ পাঠকের নজর কেড়েছিল।
অনুভবের অনুকাব্যে আক্ষেপের আবরণে জড়ানো কিছু অপ্রিয় সত্য ফুটে উঠেছে। অনুভব হৃদয় দিয়ে পাঠযোগ্য, কলমের কালিতে তার অনুবাদ হয় না। সুতরাং হৃদয় দিয়েই যার পাঠ কলম দিয়ে তার অনুবাদ করতে যাওয়া পাগলামিও বটে! সেই পাগলামিই করেছেন মনিরুল ইসলাম। অনুভব নিয়ে মহাকাব্যই যেখানে ঠেই পায় না সেখানে অনুভব নিয়ে অনুকাব্য! বলা চলে অজানা পথে হাতড়ে চলেছেন কবি, পথ না পেয়ে অন্ধকার পথের নাম দিয়েছেন অনুভবের অনুকাব্য।
তবে পথ যতোই অজানা হোক, অনুভবের অক্ষরে কবি আনন্দের অন্বেষণ করেছেন। কাব্যগ্রন্থের কৈফিয়তে কবি নিজেই বলেছেন ‘…কিন্তু আমারও তো অনুভব আছে পাঙ্ক্তেয় আর অপাঙ্ক্তেয়। জানি, ভেতর-বাহির মিলিয়ে আমার অনুভবগুলো না মেলে গণিতের উপপাদ্যে না মেলে সাহিত্যের অনুকাব্যে। অনুভব যেহেতু হৃদয়ে সংক্রমিত, মনে চাইলেই আমি কি তা ছুড়ে ফেলতে পারি? না পেরে মলাটবন্দি করেছি মুক্ত অনুভবমালাকে। কবিতা হোক আর অকবিতা হোক, মনে জমা অনুভবের মেঘমালা অনুকথার বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে এতেই আমার আনন্দ। এই ছন্নছাড়া অনুষঙ্গে কারও অনুভব যদি অনুরণিত হয়, সে হবে অনুপম আনন্দের’।
মনিরুল ইসলাম মূলত লেখক ও প্রাবন্ধিক। লেখালেখিতে হাতেখড়ি শৈশবেই। দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকায় কাজ করেছেন কিছুদিন। একাধিকবার সম্পাদনা করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির জার্নাল। দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কলাম লিখছেন নিয়মিত। ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ-সাহিত্য তার লেখালেখির প্রিয় বিষয়-আশয়। জন্ম ১৯৮৭ সালে সাতক্ষীরার আসকারপুরে। শৈশব ও কৈশোরের পুরোটা কেটেছে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার স্মৃতিধন্য নলতা শরীফের সবুজ প্রাঙ্গণে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর। দেশের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংগঠন বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। সরকারি কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউটের গবেষক হিসেবে কাজ করছেন।
কবিতা তার শখের বিষয়। বুকের ভেতর অসংখ্য অনুভবের অনুবর্তণ। সেইসব অনুভব প্রকাশ করতে চান অনুকাব্যে। অনুভবগুলো হাসায়-পোড়ায়, নেশা লাগিয়ে দেয় গহনে, কখনো আবার নিজেই ডুকরে কেঁদে ওঠে। আবীরের মতো এ অনুভব আবার ছড়িয়ে পড়ে আক্ষেপের আল্পনায়। অনুভুতিতে টোকা মারা এসব অনুভব জানাতে তিনি কবিতার আশ্রয় নিয়েছেন। আহমেদ ফারুকের প্রচ্ছদের মোড়কে কাব্যগ্রন্থটিতে মোট পঞ্চাশটি কবিতা রয়েছে। মাসজুড়ে অমর একুশে বইমেলায় প্রিয়মুখ প্রকাশনের ১৭৬ ও ১৭৭ নং স্টল থেকে বইটি সংগ্রহ করা যাবে।