✍️নলতা হাইস্কুলের লেখক সাহিত্যিক
✍️ সমাপনী পর্ব
🌀
শতবর্ষী নলতা হাইস্কুলের লেখক- সাহিত্যিকদের প্রকৃত তালিকা এবং তাদের সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে আমার খুব কম ধারণাই আছে। উল্লিখিত ১২ জনের বাইরেও অসংখ্য লেখক- সাহিত্যিকের জন্ম হয়েছে নলতা হাইস্কুলের সংস্কৃতিমনা শিক্ষক, স্কুলের দেয়ালিকা বা স্কুল ম্যাগাজিনের সৃষ্টিশীল পরশে।
🌀
সাহিত্যের উদ্দেশ্যে না হলেও একাডেমিক প্রয়োজন, জাতীয় মতামত বা আন্তর্জাতিক জার্নালে লিখেছেন নলতা হাইস্কুলের বহু শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, জগলুল হায়দার এমপি, সাবেক এমপি খায়রুল আনাম, মৌলবি আনছারউদ্দীন আহমদ, ব্যানবেইসের সাবেক প্রধান পরিসংখ্যানবিদ এম. আব্দুল জব্বার, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী এমদাদুল হক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক জৈষ্ঠ উপদেষ্টা ডা. মো. খলিলউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্টার মুনসেফ আলী, শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এ কে আওরঙ্গজেব, পাবনা ক্যাডেট কলেজ ও ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল অধ্যাপক আশরাফ আলী, আমেরিকার আটলান্টা স্টেট ইউনিভার্সিটির নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের অধ্যাপক ড. আব্দুল মজিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক আবু তৈয়ব আবু আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস বিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম, বুয়েটের ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী, টাইমস ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহানারা বেগম, আমেরিকার বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. বদরুজ্জামান রায়হান, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সাবেক পরিচালক একেএম মুজিবুর রহমান, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক চিকিৎসক, রাজনৈতিক নেতা ডা. শহিদুল আলম, মিটফোর্ড হাসপাতালের সাবেক পরিচালক রাশেদ আহমদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ, মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. এ কে মঈনউদ্দীন আহমদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক আবু মাসুদ, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আলমগীর হোসেন, ডেইলি স্টারের সিনিয়র সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ নানা সময়ে গবেষণার প্রয়োজনে অথবা জার্নালে যেমন লিখেছেন তেমনি রাষ্ট্র ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেছেন। এসব লেখায় সাহিত্য উপাদানের চেয়ে গবেষণা উপাদান বেশি বলে তাদেরকে সাহিত্যিক হিসেবে উপস্থাপন করিনি।
🌀
নলতা হাইস্কুলের শিক্ষার্থী নন, কিন্তু নলতার সামাজিক পরিমণ্ডলে যাদের অনস্বীকার্য উপস্থিতি তাদের নামগুলোও উল্লেখ করতে চাই। খানবাহাদুর মোবারক আলী, পাকিস্তান আমলের অ্যাটর্নি জেনারেল এম. শামসুজ্জোহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী ফজিলতুন্নেছা, জমিদার তারাপদ ভঞ্জ চৌধুরীর নাম এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। নলতা হাইস্কুলের শিক্ষার্থী নন, কিন্তু নলতা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেছেন এমনও অনেক শিক্ষাগুরু লেখালেখি বা বক্তব্যে প্রভাব রেখেছিলেন, যেমন মৌলবি করিমউল্লাহ, রমজান আলী প্রমুখ।
🌀
শেষের আগে নলতা হাইস্কুলের আরো কিছু লেখক-সাহিত্যিকের নাম উল্লেখ করা প্রয়োজন যাদের প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে। কানাডা প্রবাসী হাফিজুর রহমান, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের আব্দুল বারী আল বাকী, পিজি হাসপাতালের কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা জমায়েত আলী এদের মধ্যে অগ্রগণ্য। অপেক্ষাকৃত তরুণ সাহিত্যিক হিসেবে সাহিত্য কাগজ ‘উদ্যান’ এর নির্বাহী সম্পাদক হাসানূর রহমান সুমন, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সিনিয়র আর্টিস্ট সৌমিত্র রাজু, ‘মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন’ এর সম্পাদক কবীর নেওয়াজ, কবি মোখলেসুর রহমানের নাম উল্লেখযোগ্য।
🌀
সবশেষে শ্রদ্ধায় অবনত মস্তকে হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এর নাম স্মরণ করতে চাই। যিনি নলতা হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, পৃষ্টপোষক এবং যার দোয়া সততই নলতা হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রতি ছিল। যিনি বাংলায় একটি শিক্ষা আন্দোলনের কেন্দ্ররূপে নলতা হাইস্কুল পরিচালনা করেছিলেন। শ্রদ্ধায় স্মরণ করতে চাই নলতা হাইস্কুলের কিংবদন্তি প্রধান শিক্ষক এম. দরবেশ আলী স্যারকে, যিনি শিক্ষকতাকে ইবাদত মনে করতেন। নলতা হাইস্কুলকে যিনি অসাধারণ কর্মদক্ষতায় যুক্ত পাকিস্তানের শীর্ষ বিদ্যাপীঠে পরিণত করেছিলেন।
মো. মনিরুল ইসলাম
পরিচালক
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট।