ভূতুড়ে জাহাজ শব্দটা শুনতেই গায়ের মধ্যে অন্য রকম শিহরণ জাগে। দু’চার বছর পর পরই উপকূলে দেখা মিলছে পরিত্যক্ত জাহাজ কিংবা সমুদ্র যানের। মিডিয়ায় প্রচারও হচ্ছে সেভাবে, মনুষ্যবিহীন জাহাজ ভিড়েছে, ভেতরে কোটি কোটি টাকার সম্পদ!! শুরু হয় বাঙ্গালীর জল্পনাকল্পনা।
International Maritime Organization (IMO) এর হিসাবমতে ২০২০ সালে ৭২ টি জাহাজ এবং ১০০০ টি সমুদ্রযান, ২০১৯ সালে ৪০ টি, ২০১৮ সালে ৪৪টি এবং ২০১৭ সালে ৫৫ টি জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষনা করে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। ভাসিয়ে দেবার পছন্দের এলাকা হচ্ছে আরব সাগর। বর্তমানে এরকম উদ্দেশ্যহীন ভাবে সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো জাহাজ সংখ্যা ৪৩৮টি আর অন্যান্য সমুদ্রযানের সংখ্যা প্রায় ৭০০০ টি! এসব পরিত্যক্ত জাহাজ নিয়ে রয়েছে নানান লোককথা লেখা হয়েছে হাজারও গল্প, উপন্যাস এবং সিনেমা…
এমনই একট রহস্যময় ভূতুড়ে জাহাজ The Flying Dutchman, যে কখনো তীরে ভেড়ে না, ফেলেনা কোথাও নোঙ্গর, আসে বিপদের খবর নিয়ে। হঠাৎ যার দেখা মেলে শুধু বিক্ষুব্ধ উত্তাল সমুদ্রে। যে-ই তাকে দেখেছে, তাকেই মুখোমুখি হতে হয়েছে ভয়াবহ বিপদের। এই ভুতুড়ে জাহাজ মাঝ দরিয়ায় অন্য বন্দরগামী জাহাজ কে দেখায় ভুতুড়ে আলো, যে আলোর মানে হচ্ছে, দুর্ভাগ্য কিংবা মৃত্যু সন্নিকটে…
এই ফ্লাইং ডাচম্যান নিয়ে দুনিয়ার প্রতিটি বন্দরে অসংখ্য মিথ প্রচলিত আছে, যেমন-
♦ জাহাজে যুদ্ধাহত অনেক সৈন্য ছিলো, যাদেরকে কোনো বন্দর ভিড়তে দিচ্ছিল না। একসময় তারা একের পর এক জাহাজের মধ্যেই মারা যেতে শুরু করে। মৃত্যুর পূর্বে বন্দরের লোকদের অভিশাপ দিয়ে যায়। সর্ব শেষ নাবিকটা বেঁচে থাকা পর্যন্ত জাহাজটি ভাসতে ছিলো, সে মারা যেতেই জাহাজটি বাতাসে মিলিয়ে যায়।
♦ প্রচলিত আরেকটি লোককথা হচ্ছে, এই জাহাজটির নাবিকেরা প্লেগে আক্রান্ত ছিলো। তারা আরব সাগরে এসে আশ্রয় খুঁজতে থাকে কিন্তু কোথাও কোন বন্দরে আশ্রয় না পেয়ে তারা অভিশাপ দিয়ে কালো মেঘের সাথে মিলিয়ে যায়…
** পরের পর্বে ভূতুড়ে জাহাজের গল্প।
লেখকঃ বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর আইন প্রশিক্ষক হাসান হাফিজুর রহমান।