তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির জনসভায় যাওয়া না যাওয়ার আলোচনা অবাস্তব ও এটি উদ্ভট অলীক চিন্তা।
শুক্রবার ২ ডিসেম্বর দুপুরে চট্টগ্রামের নেভী কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের পুণর্মিলনী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে তথ্যমন্ত্রী ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে বেগম জিয়ার অংশ নেয়া নিয়ে বিএনপি নেতাদের আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া দন্ড ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী, আদালত থেকে কোনো জামিন পাননি। তিনি নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যেদিন হত্যা করা হয় সেই দিনটিতে জন্মদিনের কেক কাটেন। এরপরও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় তিনি কারাগারের বাইরে আছেন। এখন যদি তারা এ রকম চিন্তা করে থাকে তাহলে সরকার তাকে কারাগারে পাঠাতে বাধ্য হবে।’
বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাদ দিয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাচ্ছে কেন -এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত: নয়া পল্টনের সামনে বড় জোর পঞ্চাশ হাজার মানুষ ধরে। অর্থাৎ তাদের জনসভায় যে পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ হবে না এটি তারা নিশ্চিত হয়েছেন। আর দ্বিতীয়ত: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, কার্যত স্বাধীনতাই ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সেখানেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। বিএনপি তো পাকিস্তানের দোসর, তাদের মহাসচিব বলেছেন পাকিস্তানই ভালো ছিল। সেই কারণে এই উদ্যান তাদের পছন্দ নয়।’
‘কিন্তু বড় জনসভার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই হচ্ছে উত্তম এবং তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল, তাদের চাওয়া অনুযায়ী উদ্যান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে’ উল্লেখ করেন সম্প্রচার মন্ত্রী।
বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে কি ব্যবস্থা -এ প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তো বিশৃঙ্খলাই করতে চায়। সে কারণেই তারা নয়াপল্টনের সামনে সমাবেশ করতে চায়। কিন্তু সেই সুযোগ তাদের দেয়া হবে না। জনগণই তাদের প্রতিহত করবে।’
চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে পুরো চট্টগ্রামে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের মাঝে যে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরী হয়েছে, এতে আমরা নিশ্চিত যে এটা স্মরণকালের বৃহত্তম এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে ইনশাআল্লাহ।
এর আগে মহসিন কলেজের প্রাক্তনীদের পুণর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, কোনো বিদ্যাপীঠের কার্যক্রম শুধুমাত্র পাঠদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সেখানে একজন ছাত্র অনেক কিছু শেখে, তার বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটে। তিনি বলেন, আমার স্কুলই আমার জীবনের ভিত রচনা করে দিয়েছে। একইভাবে কলেজেও সুমঙ্গল মুৎসুদ্দি স্যারসহ আরো অনেক শিক্ষক ছিলেন যাদের সান্নিধ্য না পেলে আমি আজকের এই জায়গায় দাঁড়াতে পারতাম না। চট্টগ্রামের অন্যতম সেরা এই কলেজের অ্যলামনাই এসোসিয়েশন আরো সমাজহিতৈষী কর্মসূচি নেবে যেগুলো সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেবে, আশাপ্রকাশ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
মহসিন কলেজ অ্যলামনাই এসোসিয়েশন ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।