প্রিয় জন্মভূমি সরাইল ও আশুগঞ্জবাসী আসসালামু আলাইকুম। আপনারা অবগত আছেন মোগল সাম্রাজ্যের অস্হায়ী রাজধানী ছিল সরাইল। আজ থেকে প্রায় ১২৫ বছর পুর্বে আশুগঞ্জ বাজার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আশুগঞ্জ সরাইল পরগণার অন্তর্ভুক্ত ছিল। দেশের অন্যতম শিল্পাঞ্চল ও ব্যবসাকেন্দ্র আশুগঞ্জ আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। সম্রাট ঈশা খার পুণ্যভূমি সরাইল এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সুতিকাগার আশুগঞ্জ। আশুগঞ্জের উৎপাদিত চাউলে যেমন সারাদেশের খাদ্য সরবরাহ লাইন সচল রাখে,তেমনি আশুগঞ্জে উৎপাদিত বিদ্যুতে সারাদেশকে আলোকিত করে, মিল ফ্যাক্টরি সচল রাখে। আশুগঞ্জ থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে সারাদেশের গ্যাস সরবরাহ। আশুগঞ্জে উৎপাদিত সারে সারাদেশের ফসলের মাঠ সবুজ হয়ে উঠে। আমরা সেই গর্বিত মাটির সন্তান। আমাদের সন্তানরা যেমন গর্ব করে বুক ফুলিয়ে বলতে পারে আমরা মোঘল সামাজ্যের অস্থায়ী রাজধানী সরাইলের বাসিন্দা,তেমনি বলতে পারে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার ও বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্র আশুগঞ্জের গর্বিত সন্তান।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন বিন্যাসে আশুগঞ্জ সরাইল থেকে আলাদা ছিল। ২০০৮ সালে সরাইলের সাথে আশুগঞ্জকে যুক্ত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া – ০২ আসনটি পুনর্বিন্যাস করার পর সরাইল ও আশুগঞ্জবাসীর ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে। কিন্তু গত পর পর তিনটি নির্বাচনে জাতীয় সংসদে এই আসনের সুযোগ্য প্রতিনিধি পায়নি। ফলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইলেও সরাইল-আশুগঞ্জে গ্রামীন অবকাঠামো সহ উল্লেখযোগ্য কোন উন্নয়ন হয়নি।
প্রিয় এলাকাবাসী আপনারা জানেন ১৯৭৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আশুগঞ্জ ওয়াবদা মাঠে এক বিশাল জনসভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আশুগঞ্জে পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার জন্য ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমি নিজে আমার বাবা কাধে চড়ে বঙ্গবন্ধুর সেই বক্তব্য শুনার পরম সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। উক্ত বরাদ্দ থেকে পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স নির্মাণের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তখন আশুগঞ্জের চরচারতলায় কয়েক হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। আশুগঞ্জ সারকারখানা পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্সের একটি ইউনিট মাত্র। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে হত্যার পর গত পঞ্চাশ বছরেও বঙ্গবন্ধু ঘোষিত সেই পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স নির্মিত হয়নি। আপনারা আমাকে একটি সুযোগ দিন আমি পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্সটি বাস্তবায়ন করব ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় এলাকাবাসী আপনারা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন নদী ভাঙ্গন থেকে পানিশ্বর ও আজবপুর বাজারকে রক্ষা করা এবং সরাইলের ভাটি অঞ্চলের চারটি ইউনিয়ন যথা পানিশ্বর,চুন্টা, পাকশিমুল ও অরুয়াইলকে যুক্ত করে আমি আশুগঞ্জ থেকে পাকশিমুল পর্যন্ত একটি মাল্টিপারপাস বেড়িবাধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমার প্রিয় বন্ধু,পানিসম্পদ উপমন্ত্রী জনাব এ কে এম এনামুমুল হক শামীমের নির্দেশে পাউবির উর্ধতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ বিষয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সরাইলের ভাটি অঞ্চলের চারটি ইউনিয়ন নতুন যুগে প্রবেশ করবে। এই মাল্টিপারপাস বেড়িবাধ নির্মিত হলে এই অঞ্চলটি নদী ভাঙ্গন থেকে সুরক্ষার পাশাপাশি নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এই এলাকাটিতে পর্যটন শিল্প ও আধুনিক শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে এবং এতে হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। আপনাদের সহযোগিতায় আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে
এছাড়াও আপনারা জানেন শাবাজপুর- শাহজাদাপুর রাস্তাটির কি করুণদশা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত এই রাস্তাটি এখনো নির্মিত হয়নি। এই রাস্তাটি নির্মাণ এবং শত বছরের পুরাতন আজবপুর নদী বন্দরটি আবার চালু ও আজবপুর- রসুলপুর সড়কটি নির্মাণ হবে আমার অন্যতম প্রধান কাজ।
এছাড়াও আমি আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সরাইল-আশুগঞ্জকে একটি স্মার্ট শহরে পরিণত করব ইনশাআল্লাহ। আসন্ন উপনির্বাচনে আপনারা আমাকে একটি সুযোগ দিন। আমি আপনাদের সন্ত্রাস,দুর্নীতি,মাদকমুক্ত সরাইল- আশুগঞ্জ উপহার দেব ইনশাআল্লাহ।
আমি নির্বাচিত হলে এদেশের চৌদ্দ লক্ষ শিক্ষকের অধিকার নিয়ে কথা বলব। শিক্ষা ব্যবস্হা জাতীয়করণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাংসদ কথা বলব ইনশাআল্লাহ।
জয়বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক ঃ অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু