মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৯ অপরাহ্ন

কম্বল গায়ে জড়ানো এ নারীকে দেখে অনেকেই জানতে চায় কোলের সন্তান সম্পর্কে

কম্বল গায়ে জড়ানো এ নারীকে দেখে অনেকেই জানতে চায় কোলের সন্তান সম্পর্কে

 

নগরীর জাহাজকোম্পানী মোড় ও বিকেলে রাজা রামমোহন মার্কেটের সামনে পাতলা কম্বল গায়ে জড়ানো এ নারীকে দেখে অনেকেই জানতে চায় কোলের সন্তান সম্পর্কে। আশেপাশে কিছু মানুষের ভিড়। এরই মধ্যে ছুটে এসেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর, থানা পুলিশ। শক্ত করে এমন ঠান্ডায় বাইরে অবস্থানের কারণ জানতে চাইতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

এক পর্যায়ে জানা গেল, তার কোলে যে নবজাতক শুয়ে আছে সে তারই নাড়িছেঁড়া সন্তান; তবে শিশুটি বেঁচে নেই। তা জানা সত্ত্বেও সন্তানের বেঁচে উঠার আশায় কোলে নিয়ে দিনভর এদিক সেদিক ছুটেছেন অবুঝ মনের এই মা। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা নাড়া দিয়েছে স্থানীয় মানুষজনকে।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারী কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর এলাকার বাসিন্দা। বিয়ে না হলেও এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। গত ১৭ দিন আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ এলাকায় নবজাতকের জন্ম দেন তিনি। এরপর সন্তানকে নিয়ে তার নিজ বাড়িতে গেলে সৎ বাবা তাকে মারধর করে শিশুটিকে বিক্রি করে দিতে বলেন। এ নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি রংপুর শহরে চলে আসেন।সন্তান নিয়ে ঘুরে ঘুরে যেখানে রাত হয় সেখানেই খোলা জায়গায় কোনোরকমে রাত যাপন করেন। এতে একপর্যায়ে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসক জানান, শিশুটি মারা গেছে।কিন্তু এতে হাল ছাড়েননি ওই মা।

মৃত সন্তানকে বাঁচিয়ে তোলার আশায় নগরীর মাহিগঞ্জে এক কবিরাজের কাছে ছুটে আসেন। কিন্তু সেই কবিরাজ শয্যাশায়ী হওয়ায় শিশুটিকে চিকিৎসা দিতে পারেনি। পরে মাহিগঞ্জ বাজার এলাকায় দিনভর মৃত সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। রাতে তাকে দেখা যায় রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ ভিসা অফিসের সামনে।

মাহিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান জানান, স্থানীয়রা ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীনের মতো কথা বলছিলেন। ওই নারীর কোলে থাকা শিশুটি মৃত কিনা তা পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে সন্ধ্যায় ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, ওই নারী মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। শীতে খোলা জায়গায় রাত কাটানোর জন্য শিশুটি মারা গিয়েছিল। অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে ওই নারী কাউকে কিছু না বলে কোথায় চলে গেছে আমরা বলতে পারছি না। তাকে খোঁজা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

Comments are closed.




© All rights reserved © MKProtidin.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com