মারুফ সরকার,স্টাফ রির্পোটার: গেল দুই সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর কুলকিনারা প্রত্যাশী হয়ে রাজশাহীবাসী এবার রাস্তায় নেমে এসেছে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের আপত্তিকর ভিডিও ইস্যু নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজশাহীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে সচেতন রাজশাহীবাসীর উদ্যোগে এক মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, “দুই সপ্তাহ যাওয়ার পরেও কেন ডাবলু সরকারকে বহিষ্কার করা হচ্ছে না ? ”
আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের কাছে বিচার প্রার্থী হয়ে বক্তারা বলেছেন, আজ সারাদিন রাজশাহীবাসীর কাছে যাওয়া ছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগি এবং সমর্থিত সংগঠনের কাছে আমরা যাব। রাজশাহীর কৃতি সন্তান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে বিচার চাইবো। যোগাযোগ করব দলের কেন্দ্রিয় নেতা এস এম কামালের সাথেও। আমরা আবার আগামীকাল জিরো পয়েন্টে সব পেশার মানুষকে নিয়ে একত্রিত হব।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া প্রধান আলোচক হিসাবে এডভোকেট আবু রায়হান মাসুদ বলেন, “যখন রাজশাহীকে এই দেশের শ্রেষ্ঠ নগরী হিসাবে দাঁড় করানো গেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন কতিপয় হাইব্রিড দুষ্টু কথিত নেতার নৈতিক স্খলনের ভিডিও চিত্রকে আমরা অভিনন্দন তো জানাতে পারি না। এই বছর জাতীয় নির্বাচনের বছর। এই বছর এখানে রাসিক নির্বাচনও হবে। কাজেই ডাবলু সরকারের এহেন অনৈতিক কর্ম জনমনে যে প্রভাব ফেলছে, এর প্রতিউত্তর মহানগরবাসী ব্যালটের মাধ্যমে দিয়ে দলে শেখ হাসিনার ক্ষতি, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ক্ষতি। কাজেই প্রতিকারে যেতে হবে। এমন ব্যক্তিকে গ্রহণ করার জন্য রাজশাহীবাসী প্রস্তুত নেই। আমি আশা করব, কাল থেকে আওয়ামী লীগের সকলেই এই ডাবলু সরকারের শাস্তি চেয়ে রাজপথে নেমে আসবে।”
এদিকে গেল মাসের ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর থেকে ৩ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, বাথরুমের ভেতরে ডাবলু সরকার ভিডিও কলে কারো(নারী) সঙ্গে কথা বলছেন। এক পর্যায়ে বিবস্ত্র হয়ে অপরপ্রান্তে থাকা কাউকে শরীর তথা যৌনাঙ্গ দেখাচ্ছেন।
ভিডিও সম্পর্কে রাজশাহী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেছেন, ‘ভিডিওটি এডিট করা। সম্পূর্ণ ফেইক। আমরা মামলা করেছি। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।’
অস্বীকার করলেও ফাঁস হওয়া ভিডিও নিয়ে এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছেন দলীয় নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘যেটা দেখেছি, সেটা ন্যক্কারজনক। ব্যাপারটা কি জানতে অনেকে গ্রাম থেকে ফোন করছে। আমি আশা করব, এটা যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তা না হলে এটা দলের জন্য বিব্রতকর।’
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য এবং উপস্থিত থাকার মধ্যে ছিলেন, সাবেক যুবমৈত্রী নেতা বুলবুল আহমেদ, এখন আওয়ামী লীগ কর্মী, বেলাল হোসেন, যিনি ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সহসভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিভিন্ন সময়ে।
মানববন্ধনের শেষ পর্যায়ে ডাবলু সরকারের কয়েকজন অনুসারী আসেন এবং বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেন। সে সময়ে তাঁর ভাই সেডু সরকার শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মুনমুন সঙ্গী হন। কিন্তু, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা সে সময়ে কেহ বাঁধা দেন নি। তারা নিজেরাও খুবই বিব্রত হওয়াই বিচার চাইছে। উত্তাল মার্চে দলিয় কর্মসূচী পালন নিয়েও উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাজশাহীর নেতাকর্মীদের মাঝে। উপলক্ষের নাম ডাবলু সরকার।