মোতালেব বিশ্বাস, ইবি প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) চার ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে হল কক্ষ থেকে আবাসিকে শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার (০১ এপ্রিল) চার ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগ অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সিদ্দিক, বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের তরুণ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফাহিম ফয়সাল ও বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাজু। তাঁরা চারজনই শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী মাহাদী হাসান বলেন, আমি আমার আবাসিকতাপ্রাপ্ত কক্ষে বিগত কিছুদিন যাবত অবস্থান করছিলাম। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্দিক ভাই, তরুন ভাই, ফাহিম ফয়সাল ভাই, ও রাজু ভাই আমাকে হলে আসতে বলে। হলে এসে দেখি আমার বই, খাতা, তোশক, বালিস রুমের বাইরে করিডরে পড়ে আছে। আমাকে ৪২৭ নং কক্ষে যেতে বলা হয়েছিল। সেখানে আগে থেকেই তরুণ ভাই, ফাহিম ভাই রাজু ভাইসহ আরও একজন ভাই উপস্থিত ছিলেন। আমি সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করি।
প্রথমে ফাহিম ভাই আমাকে বলে তুই মাহাদী আমি হ্যাঁ বলি। তারপর আমাকে বলে তুই কোন কক্ষে থাকিস? আমি বলি ৪২৮ আমার আবাসিক কক্ষে। আমি ঐ কক্ষেই আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান করছি। তখন ফাহিম ভাই বলে আগে কোথায় ছিলি? আমি বলি ৩০৮ নং এ মেহেদী হাসান তানভীর-এর অতিথি হিসেবে ছিলাম। এখন আমার কক্ষ ৪২৮ বরাদ্দ হইছে। আমি এখানেই থাকবো। আমি এটা বলার পর রাজু ভাই আমাকে ধমক দিয়ে বলে তুই কে? তোকে আগে কখনও হলে দেখিনিতো। কে তোরে হলে তুলেছে? আর ঐসব আবাসিকতার কাহিনী বাদ দে। আমরা যা বলবো হলে তাই হবে। তখন তরুণ ভাই বলে আমারে চিনিস তুই আমি কে? এখনও ভালই ভালই ৪২৮ থেকে সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা। ৩০৮ এ থাকবি নাকি কোথায় থাকবি আমারা জানিনা। এইটা বলার পর ইতোমধ্যে রুমের বাইরে করিডোরে ফেলে দেয়া আমার বই, খাতা, তোশক, বালিসসহ আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিকে ইঙ্গিত করে বলে এইখানে তোর সবকিছু আছে নিয়ে চলে যাস।
এ ঘটনার পরে ভুক্তভোগী মাহাদী প্রভোস্ট বরাবর আবাসিক কক্ষে থাকা সুনিশ্চিত করে হয়রানি করার জন্য তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফাহিম ফয়সাল বলেন, সমাঝোতার ভিত্তিতে মাহাদিকে ৩০৮ নাম্বার রুমেই থাকতে বলি। কিন্তু সে মানে নাই বিষয়টা। সে ৪২৮ নাম্বার কক্ষে উঠার মতামত দেয়। আমরা বলি এই সিটে যেহেতু একজন উঠছে, সেইক্ষেত্রে তুমি আগের রুমেই থাকো। অভিযোগে যা বলা হয়েছে তা সবই মিথ্যা।
এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা ৪২৮ নম্বর কক্ষে আবাসিকতা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কক্ষে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের একজন থাকায় সে হল ছেড়ে দিলে সেখানে উঠতে বলা হয়েছিল। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। দু’পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।