ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চাঞ্চল্যকর ৬ বছরের শিশু জান্নাতি খাতুন হত্যার মূল হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬। সেই সাথে ক্লুলেস মামলার ক্লু ও রহস্য উদঘাট করা হয়েছে। রোববার দুপুরে উপজেলার বাগুটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ মামলার মূল হত্যাকারী ও পরিকল্পনাকারী আসামী মোসাঃ সেলিনা বেগম (২৮) গ্রেফতার করা হয়।
মামলা ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামির স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যার বিবরণ দিয়ে র্যাব জানায়, জনৈক খোকন ভূইয়ার ৬ বছরের শিশু কন্যা ভিকটিম জান্নাতি খাতুন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেনীর ছাত্রী। গত ১১ সেপ্টেম্বর শিশু ভিকটিম স্কুল থেকে বাড়িতে আসার পর তার মায়ের নিকট সনপাপড়ি ক্রয়ের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও শিশু ভিকটিম আর বাড়িতে ফিরে আসে নাই। বাড়ি ফিরে না আসায় তাকে বিভিন্ন জায়গা ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোজ খবর নিয়ে তার কোন সন্ধান না পেয়ে, ভিকটিমের পিতা শৈলকুপা থানায় একটি নিখোজ ডায়রী করেন। একই তারিখ রাত অনুমান ৮ টার দিকে স্থানীয় প্রতিবেশী মনোয়ার শেখ ও খুকু বেগম ভিকটিম জান্নাতি খাতুনকে তাদের বসতবাড়ির পুকুরের পানির মধ্যে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। উক্ত বিষয়ে ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি বিভিন্ন প্রেস মিডিয়াতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-৬, সিপিসি-২, ঝিনাইদহ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং উক্ত ক্লুলেস হত্যা মামলার আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) র্যাব গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, উক্ত ক্লুলেস হত্যা মামলার মূল হত্যাকারী ও পরিকল্পনাকারী আসামী- মোসাঃ সেলিনা বেগম বাগুটিয়া গ্রামস্থ এলাকায় নিজেকে আত্মগোপন করে অবস্থান করছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দেশ্যে আভিযানিক দলটি তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। মোছাঃ সেলিনা বেগম উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এবং জানায় যে, ঘটনার দিন তার নিজ বসত বাড়ির পিছনের রাস্তায় শিশু ভিকটিম জান্নাতি খাতুনকে একা পেয়ে জোরপূর্বক তার কানে পরিহিত ব্যবহৃত স্বর্ণের কানের রিং নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শিশু ভিকটিম চিৎকার করলে তার মুখ ও গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নিথর দেহ কাঠের লাকড়ীর ভিতর রেখে ভিকটিমের কান থেকে রিং খুলে নিয়ে স্বর্ণকারের দোকানে বিক্রয় করে। পরবর্তীতে লাশ গুম করার জন্য নিকটস্থ স্থানীয় পুকুরের পানিতে ফেলে রেখে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে শৈলকুপা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাব।