কুস্তি লড়ে যে তাকে হারাতে পারবে রাজকন্যা তাকেই বিয়ে করবে, এমন শাহী এলানে সাঁজ সাঁজ রব পড়ে গেলো দেশে দেশে। সে কন্যা যেনতেন কন্যা নয় ত্রয়োদশ শতকের সবচেয়ে ক্ষমতাবান যুদ্ধবাজ খান বংশীয় কন্যা।
মার্কো পোলোর বর্ণানুসারে, সে পিতার সাথে অগণিত যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, সমরশক্তির জন্য অত্যন্ত সুপরিচিত। সে তার ১৪ ভাইদের মতোই লালিত-পালিত হয়েছে, ঘোড়ায় চড়া, তীরন্দাজ, তলোয়ার চালনা আর কুস্তির পারিবারিক ঐতিহ্যগত শিক্ষা পেয়েছে। কুস্তিতে আশ্চর্য জনক দক্ষতা তাকে সমগ্র মঙ্গোল সাম্রাজ্য জুড়ে বিখ্যাত করে।
সাত ভাই চম্পা নয়, চৌদ্দ ছেলের মাঝে একটা মাত্র মেয়ে খুতুলুন খান ছিল বাবার অত্যন্ত প্রিয়। সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী, লড়াকু কন্যাকে বিয়ে দেয়ার জন্য এক পর্যায়ে মরিয়া হয়ে পড়েন বাবা কায়দু খান, হাজারও পাণিপ্রার্থীর মাঝ থেকে একজন বিবেচনা করার জন্য মেয়েকে পিড়াপিড়ি করতে থাকেন। প্রথমে অনিচ্ছুক থাকলেও শেষ পর্যন্ত এই শর্তে সম্মত হন যে, তিনি এমন কাউকে বিয়ে করবেন যে কুস্তি লড়ে তাকে হারাতে পারবে। কুস্তি লড়ার আগে বাজি হিসেবে ১০০ টি ঘোড়া জমা রেখে লড়তে হবে, আর যদি সে হেরে যায় তবে তা তামাদি হয়ে যাবে।
মহা-পরাক্রমশালী ঝেঙ্গিস খানের প্রপৌত্রি, কুবলাই খানের চাচাতো ভাই কায়দু খানের কন্যা খুতুলুন খানের পাণিগ্রহণের স্বপ্নে মোঙ্গল সাম্রাজ্যের অনেকেই লড়তে এসে ভাগ্য পরিক্ষা দিতে এসে টাট্টু খুইয়ে ফিরে যায়। বাড়তে থাকে খুতুলুনের আস্তাবল, ঘোড়ার সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় সে সময়ের অনেক সাম্রাজ্যের ঘোড়ার সংখ্যাকেও।
মোঙ্গল সাম্রাজ্যে একজন পুরুষও পাওয়া যায়নি যে কুস্তিতে খুতুলুনকে হারাতে পারে। ১৩০৬ সালে ভাইদের বিশ্বাসঘাতকতায় অনূঢ়া মৃত্যুর সময় আস্তাবল ভরা ছিল ১০০০০ এর বেশী ঘোড়ায়, ছিলনা শুধু মাত্র একজন স্বামী!
** সবসময় জয়ী হতে চাওয়া একজন নারীর জন্য ফলপ্রসূ নাও হতে পারে।
লেখকঃ হাসান হাফিজুর রহমান।