মজিদ মাহমুদ এর নজরুল জীবনভিত্তিক উপন্যাস ‘তুমি শুনিতে চেয়ো না’। উত্তম পুরুষে বর্ণিত উপন্যাসটি ভীষণ প্রাঞ্জল ও ঝরঝরে গদ্যে লিখিত।
“বিশ শতকের মহাবিদ্রোহী, ধূমকেতুর মতো আকস্মিক আগমন, তাঁর বাণীর আঘাতে কেঁপে উঠল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, কবিতায় গানে—অসহায় মানুষের মুখে দিলেন ভাষা, জাত-ধর্ম নির্বিশেষে চাইলেন বৈষম্যহীন মুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কী এমন ঘটল—অদৃশ্যের ইঙ্গিতে মাত্র তেতাল্লিশ বছর বয়সে হয়ে গেলেন নির্বাক, জীবনের বাকি চৌত্রিশ বছর কইলেন না কথা।
তাঁর শারীরিক স্বাস্থ্য ছিল অটুট, ছিল না অসংলগ্নতা, কৌতূহলী শিশুর মতো সব দেখছেন, অনুভব করছেন— পালন করছেন নীরবতা। বন্ধুরা দেখতে আসছেন, ভক্তরা আসছেন, অসুস্থ স্ত্রীর পাশে অনুগত বসে থাকছেন, কখনো চোখে-মুখে দুষ্টুমির ঝিলিক। কেউ বলছেন যোগভ্রষ্ট, কেউ বলছেন মৌন-সাধক—বৃহত্তর কিছুর সন্ধানে করছেন মানস-ভ্রমণ । অবসান হলো যার চির-প্রয়াণে। স্বজন-বর্জিত প্রিয়তমা শুয়ে আছেন চুরুলিয়ার শ্বশুরালয়ে, তিন পুত্র আগেই প্রয়াত, এখনো শুনতে পান বুলবুলের কণ্ঠস্বর, কৃষ্ণ-মুহম্মদ বেঁচে ছিলেন মাত্র কয়েক মাস, গিটারবাদক অনিরুদ্ধ মারা গেলেন তাঁর মৃত্যুর বছর দুই আগে—পিতা-পুত্রের বসবাস তখন ভিন্ন ভূগোলে।
একমাত্র জীবিত পুত্র থাকেন ভগ্ন-বাংলার প্রাদেশিক রাজধানীর ক্রিস্টোফার রোডে। তিনিও দিতে পারলেন না পিতার কবরে একমুঠো মাটি। বিলম্বিত বিমানের যাত্রা শেষে তিনি পৌঁছলেন মসজিদের পাশে পিতার কবরে, সুনসান অন্ধকার, সদ্য-সমাহিত কবরের মাটি স্পর্শ করতেই অসহায় পিতার বিদেহী আত্মা কেঁদে উঠল, চৌত্রিশ বছরের নীরবতা ভেঙে পুত্রের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন, একে একে বলতে লাগলেন— -কী ঘটেছিল তাঁর জীবনপর্বে… ”
নজরুলপ্রেমীদের সংগ্রহে রাখার মত বইটি।
২৫% ছাড়ে অর্ডার করতে ইনবক্স করুন Jolpore.com