গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এর পক্ষে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ আজ উপস্থিত থেকে সাভারে স্থাপিত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। গণ বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালনের এই সুযোগ আমার জীবনে এক বিরল গৌরব ও সম্মানের উল্লেখ করে বলেন, এই সম্মান প্রদানের জন্য গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং জুলাই ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও তাদের সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা বলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তোমরা যারা আজ ডিগ্রীপ্রাপ্ত হয়েছো তোমরা এক একটি হীরক খন্ড। তোমাদের ভুলে গেলে চলবেনা, ডায়মন্ড এবং কয়লা উভয়ই কার্বন হতে তৈরি । পার্থক্য হলো হীরার অণুতে কার্বনসমূহ সুশৃঙ্খলভাবে, আর কয়লার অণুতে কার্বনসমূহ বিশৃংখল। একইসঙ্গে কার্বন অনুই সুদীর্ঘকাল ধরে কঠিন ভূগর্ভস্থ চাপে হীরক খন্ডে পরিণত হয়। শৃঙ্খলা, সুদীর্ঘ সময় আর কঠিন অধ্যবসায় এই তিনের সমাহার ঘটলেই সফলতা অবশ্যাম্ভাবী। তিনি বলেন, তোমরা যেখানেই কাজ করো না কেন, দেশ ও জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের দায়িত্ব অনেক। প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, শিক্ষা, চিকিৎসা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান- মোটকথা রাষ্ট্র যে সকল কাঠামোর উপর ভর করে অগ্রগামী হয়, সেগুলোকে স্বাভাবিক ও কার্যকর করার জন্য তোমাদের নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মোঃ আবুল হোসেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত ট্রাস্টি ও সমাবর্তন বক্তা ডা. আবুল কাশেম চৌধুরী, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর মোঃ তানজীমউদ্দিন খান, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ওয়ালিউল ইসলাম বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত ট্রাস্টিগণ, সিন্ডিকেটের সম্মানিত সদস্যগণ, একাডেমিক কাউন্সিলের সম্মানিত সদস্যগণ, বিভিন্ন অনুষদের ডিনগণ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জনকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, জুলাই ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয় আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থান শুধুমাত্র একটি আন্দোলন নয় বরং সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশের মানুষের অদম্য ইচ্ছা শক্তির এক জলন্ত উদাহরণ। তিনি বলেন, সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নে তোমরা যারা আজ তরুণ প্রজন্ম আছো আগামী দিনে তোমাদেরকে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে অর্থাৎ আগামী দিনে এ দেশকে একটি শোষণহীন, বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার রাষ্ট্র গঠন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা সামগ্রিকভাবে একটা নাজুক অবস্থা অতিক্রম করছে। রাজনৈতিক দলাদলি, পারস্পরিক সহনশীলতার অভাব, লেজুর ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি প্রভৃতি অপসংস্কৃতি ও অপতৎপরতা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকারে দাঁড়িয়েছে। এসব পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নির্বাচিত ছাত্র সংসদ দ্বারা ছাত্রদের নেতৃত্ব বিকাশের উদ্যোগ জরুরী। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশৃংখলের জন্য সুশৃংখল ছাত্র সংসদ হতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।