রাজধানীতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ছিনতাই। নগরীর ৫০ থানা এলাকায় ছিনতাইকারীদের ৪৩২টি হটস্পট চিহ্নিত হয়েছে। এসব স্থানে সক্রিয় ১২শ ছিনতাইকারী।
এদের হাতে প্রায় প্রতিদিনই ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন মানুষ। দুর্বৃত্তরা চলন্ত বাস, প্রাইভেট কার থেকে মোবাইল ফোন, কানের দুল, গলার চেইন টেনে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় প্রকাশ্যে ছুরি, চাকু, চাপাতি বা পিস্তল ধরে নগদ টাকা, মূল্যবান সামগ্রী কেড়ে নিচ্ছে। বাধা দিলেই আঘাত করছে এতে গুরুতর আহতসহ প্রাণহানি হচ্ছে।
এসবের সঙ্গে পেশাদার, মাদকাসক্ত এবং শৌখিন ছিনতাইকারীরা জড়িত। এদের দৌরাত্ম্যে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী অভিযানেও দমছে না অপরাধীরা।
এই অবস্থায় দিনে দিনে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ভুক্তভোগীরা। অনেক স্থানে নিজেরাই প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন। অনেক স্থানে মানুষ হাতে তুলে নিচ্ছেন আইন। ছিনতাইকারীদের ধাওয়া দিয়ে ধরে গণধোলাই, এমনকি উলটো করে ঝুলিয়ে রাখা, পিটিয়ে মারার ঘটনাও ঘটছে। অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই ব্যবস্থা না নিতে পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। পুলিশের দাবি, কোনো স্পট ধরে নয়, যেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নের ঝুঁকি আছে, সেখানেই অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিভাগভিত্তিক ৪৩২ হটস্পট : একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় ছিনতাইয়ের হটস্পটের সংখ্যা ৩৪২টি। এগুলোর মধ্যে তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় আছে ১০৮টি স্পট। শেরেবাংলা নগর, তেজগাঁও, শিল্পাঞ্চল এবং হাতিরঝিল থানা এলাকায় ২৫ স্পট।
বৃহত্তর মিরপুর এলাকায় রয়েছে ৯৫টি হটস্পট। গুলশান ও উত্তরা বিভাগে আছে ৯৪টি এবং মতিঝিল বিভাগে-৩০, ওয়ারীতে-৩৫, রমনা ও লালবাগ বিভাগে ৪৫টি হটস্পট আছে বলে জানা গেছে। এসব স্পটে ছিনতাইয়ে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১২শ অপরাধী। এর মধ্যে মতিঝিল বিভাগ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ২১২ জন, মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগে সক্রিয় ৩৮৬, রমনা ও লালবাগ বিভাগে ২১৭, উত্তরা এবং গুলশান বিভাগে ১৫৪, মোহাম্মদপুর থানার আওতাধীন এলাকায় ২০৫ জন ছিনতাইকারী সক্রিয়ভাবে জড়িত।