প্রিয়দিন জন্মদিনঃ
আজ কবি নাজমীন মর্তুজার ভূমিষ্ঠ দিন। পৃথিবীতে এইদিনে কবি আগমন করেন। তাই আজ হল কবির পয়দা দিবস।পৃথিবীর সব সবুজের মাঝে কবি বিচরণ করেন, টেনে নেন বিশুদ্ধ অক্সিজেনের ঝর্ণা। একজন কবি পৃথিবীতে যতদিন বিচরণ করেন, পৃথিবী তাকে সূর্যের আলোতে ভেজায়, চাঁদের জোসনায় গোসল করিয়ে দেয়। সমুদ্র একজন কবিকে ঢেউয়ের নামতা শেখায়।পাহাড় কবিকে চেনায় ধ্যানের মাজেজা। একজন কবি যখন দাঁড়িয়ে যান খোলা আসমানের নীচে আর জমিনের উপর তখন কবির মস্তিষ্কের নিউরন বেয়ে নাজিল হতে থাকে কবিতার স্বপ্নময় পংক্তিরা। কবি লিখে ফেলেন, পৃথিবী কাঁপানো কোনো কবিতা।
নাজমীন মর্তুজা একজন কবি। একজন গবেষক। পৃথিবীতে সকল প্রাণীর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। আর মানুষের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ কবি।কারণ, একজন কবি স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। কবি স্বপ্ন বিকিয়ে যান সমাজের শুদ্ধতার জন্য। একটা গোটা পৃথিবী ফুলময় হোক এ তাড়নায় কবি রচনা করেন অনবদ্য কবিতার বাগান। নাজমীন মর্তুজাও কবিতার বাগান তৈরি করেছেন। পৃথিবীতে নতুন নতুন স্বপ্নের বেলুন উড়িয়ে।আজ কবির পয়দা দিবসে আমরা দুটি কবিতার কিছু অংশ পাঠ করি।
১. গুরু বলে দাও
কি রূপে জানিতে পারিব
মানুষের অন্তর্গত জীবন তৃষ্ণা
গাছ প্রজাপতি ঘাসফড়িং জোনাকির দুঃখ
আমাকে শেখাও গুরু
জন্মের নিগূঢ়তত্ত্ব
আমি জানতে চাই
লোমকূপের নিচে কি প্রবহমান
ওই হৃদপিণ্ডের ঘড়িটা
গাইছে কিসের গান
আমাকে শেখাও গুরু
আদিলীলার ভাষা
কীভাবে আনন্দে বসে
দোল খায় দুটি প্রাণ
বুঝিনা আমি
যে জলে জীবন তৃষ্ণা মেটে
সেই জল দেহে ধারণে
কেন বর্ণ বদল হয়
তবে কি জগতের জল আর দেহের জল
একজাতের নয়…
( জিজ্ঞাসাঃ গুরুপরম্পরা, পৃষ্ঠা ৪৯)
২. খুঁজে চলি খুঁজে ফিরি
জগত মাঝারে তোমার রূপকাল
আমার এসব কল্পনা বিলাস
তুমি ছাড়া বুঝবে কি কেউ
যদি স্বরূপে দেখা দাও
আমারই ভালোবাসা মাথায় করে
মালতী কাটার মুকুট
তবে আমি হাজার বছরের জীর্ণতাকে তুচ্ছ করে
আবারও নতুন প্রেমকে দেবো গভীর অমরত্ব।
( অমরত্বঃ শ্রীরাধার উক্তি, পৃষ্ঠা ৩০)
কবি নাজমীন মর্তুজা তাঁর কবিতার মধ্যে দিয়ে সূফীতত্ত্ব, বৈষ্ণবতত্ত্ব, বাউলতত্ত্বের সাধনা করে চলেছেন। তাঁর কবিতার বই নিয়ে আলোচনা পরে লিখবো। আজ তাঁর পয়দা দিবসে জানাই গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলেল শুভেচ্ছা। তাঁর কবিতায় বাংলার চিরায়ত রূপ বারেবারে ফুটে উঠুক। জন্মদিনে এটাই আমাদের প্রার্থনা। তাঁর কলম আরো শাণিত হোক।
তৌফিক জহুর
কবি,
সম্পাদক, উদ্যান