বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মোকাবেলা পৃথিবীর সব দেশেই একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা ভাইরাস কর্তৃক সৃষ্ট এই দুর্যোগকালীন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আমরা ঘরে ঘরে ত্রাণ পাঠানোর কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জনসাধারণকে করোনা ঝুঁকি থেকে নিরাপদে রাখতে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী(এ পর্যন্ত ৭৫,৫০০ পরিবার) বিতরণের পরও অনেকেই ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছেন না এরকম অভিযোগ আসছে। তাই বঞ্চিতরা সহ উপযুক্ত সবাই যেন অতি সহজে খাদ্য সহায়তা সুবিধা পায় এটি নিশ্চিত করতে ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন : ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ত্রাণ প্রত্যাশীদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা সংগ্রহ করে যাচাই বাছাই পূর্বক ত্রাণ প্রদান করা হয়েছে দো(২১/০৪/২০২০ পর্যন্ত ১৪৩০জন)। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছাতে কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। কারণ গ্রাম এলাকার অনেক মানুষেরই মেসেঞ্জার বা ফেসবুক আইডি নেই। অনেকেই মোবাইলে মেসেজ লিখতে পারেন না। জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ সহ অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ সারাদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, ত্রাণ বিতরণ, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকায় ত্রাণ প্রত্যাশীদের সবার ফোন রিসিভ করে তাদেরকে ত্রাণসেবা প্রদান করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
এ সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ জেলায় বাস্তবধর্মী একটি ব্যবস্থা প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সেটি হল নিবন্ধন বুথ খোলা। এর আওতায় এ জেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় এবং পৌরসভায় বুথ স্থাপন করা হয়েছে। বুথগুলোতে সার্বক্ষণিক দুইজন কর্মচারী পর্যায়ক্রমিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা ত্রাণ প্রত্যাশীদের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, ও মোবাইল নম্বর লিখে রাখছেন। নিবন্ধিত অসহায় এবং নিম্নমধ্যবিত্ত ব্যক্তি এখন পর্যন্ত যারা কোন খাদ্য সহায়তা পাননি তারা ফোনে যোগাযোগ করে, নিজে এসে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। ত্রাণ বিতরণে দ্বৈততা পরিহার করার লক্ষ্যে এবং ত্রাণ সামগ্রী পাওয়ার যোগ্য সকলকে অন্তর্ভুক্ত করার স্বার্থে যারা ইতোপূর্বে কোন ত্রাণ সাহায্য পাননি এবং অন্য কোন সরকারি বা বেসরকারি খাদ্য সহায়তা পাননি এবং কোন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা ভুক্ত নয় শুধু তাদের নামই এখানে নিবন্ধন করা যাবে।
ইতোমধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জারিকৃত আদেশের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং চারটি উপজেলায় ২০/০৪/২০২০ তারিখে নিবন্ধন বুথ খোলা হয়েছে । প্রথম দিনেই 102 জন ব্যক্তি ত্রাণ প্রত্যাশী হিসেবে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রান্তিক জনগন যারা করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাদের সবার ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর যে ঘোষণা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের নিবন্ধনবুথ কার্যক্রমটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা আশাবাদী।
ধন্যবাদ সবাইকে।