রমজানের ৭ম দিন,শুক্রবার-সাপ্তাহিক ছুটি এবং মে দিবসের ছুটি।এছাড়াও করোনার মহামারী রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে সাধারন ছুটি পঞ্চমবার বর্ধিত করে ৫ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।কিন্তু এত ছুটির মধ্যেও করোনা সংকট নিয়ন্ত্রণে ছুটে চলা কিছু মানুষের জীবনের ছুটি এখন বিলাসিতা মাত্র।
স্বাস্হ্য সুরক্ষার জন্য সবাই বাসায় অবস্থান করলেও জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন,স্বাস্হ্যবিভাগ, পুলিশবাহিনী,সেনাবাহিনী,মার্কেটিং,খাদ্য,কৃষি,তথ্য,সমাজসেবা অফিস, স্হানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসহ সকল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা -কর্মচারী সকলকে প্রতিদিন সকালেই প্রস্তুত হতে হয় দিনব্যাপী এক যুদ্ধের জন্য। যে যুদ্ধ ভয়ের,শঙ্কার,অনিশ্চয়তার!!!জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসকসহ স্বাস্হ্য কর্মীরা ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধা হিসাবে করোনা চিকিৎসায় তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন। প্রশাসন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত,পণ্য সরবরাহ সচল রাখা,নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, বাজার মনিটরিং, ঘরে ঘরে ত্রাণসেবা পৌছে দেওয়াসহ যেকোন ধরণের গণজমায়েত রোধে প্রাণান্ত চেষ্টায় নিয়োজিত। নিজ নিজ দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আপনি কি আপনার দায়িত্ব পালন করছেন? দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে স্বাস্হ্যবিধি মেনে চলছেন, অপ্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখছেন?দেশের প্রয়োজনে আমার সহকর্মী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, ইউএনও, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য, জরুরী পরিসেবার কর্মীরা ছুটি, রোজা, রোদ, ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। যারা দেশের মানুষের জন্য করোনা মহামারীর এইসময়ে নিজের কিংবা পরিবারের স্বাস্হ্য ঝুঁকি তুচ্ছ করে মাঠে ঘাটে রাস্তায় বাজারে নিরলস দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে তাদের কথা একবার হলেও ভাবুন। তাদেরও জীবন আছে,পরিবার আছে, আছে প্রিয় স্ত্রী/স্বামী,আদরের সন্তান, বৃদ্ধ,অসুস্হ বাবা-মা,অন্যান্য প্রিয়জন,বন্ধু। দায়িত্ব থেকে বিরত থাকার জন্য ইচ্ছে করলেই তারা বলতে পারেন না “আমার শরীর ভালো না, মন ভালো না”।দেশের এ ক্রান্তিকালে আমার মত আমার সহকর্মীরা যারা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন তাদেরকে সুস্হ রাখার দায়িত্ব আপনারও, আপনাকে সুস্হ রাখতে তারা যেমন দায়িত্ববদ্ধ,তেমনি তার নিরাপদে পরিবারের কাছে ফেরার পথ সুগম করাটা আপনার দায়িত্ব। তারা যাতে এই পরিস্হিতি উত্তরণে কাজ করে সিয়ামের এই মাসে অন্তত শেষের কয়টা দিন তাদের পরিবারের সাথে একত্রে ইফতার খেতে পারে তার জন্য আপনি কি একটু দায়িত্বশীল হবেন, ঘরে থাকবেন প্লিজ??? তার স্ত্রী-সন্তানের কাছে তার নিরাপদে ঘরে ফেরা আপনার অপ্রয়োজনে বাইরে ঘুরতে বের হওয়ার বিনোদনের চেয়ে অনেক দামী। আপনার বৃদ্ধ বাবা-মার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আপনার মত নয়, তাদের কথাও আপনাকে ভাবতে হবে।
দেশের এ মহাদুর্যোগে আমি আবারও সকলকে অনুরোধ করছি দয়া করে আপনারা স্বাস্হ্য বিধি মেনে চলুন। গোটা জাতিকে আর ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না। আপনি যত আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন তত দ্রুত সবাই তাদের স্বাভাবিক জীবন, রুটি রুজির নিশ্চয়তা ফিরে পাবে। সবাই ঘরে থাকুন,নিরাপদ থাকুন।