নিলয় ধর,যশোর :-আজ থেকে যশোর ফের লকডাউন হতে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কিত মানুষের দাবির মুখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্যবিভাগের পরামর্শে লকডাউন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এই সংক্রান্ত কমিটির একজন সদস্য। যশোরের কোন কোন এলাকা কীভাবে লকডাউন করা হবে সে সম্পর্কে গতকাল দুপুর একটায় জরুরি সভা ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সদস্যরা।
যশোরে গত কয়েকদিন ধরে করোনার বিস্তার মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অধিকাংশ মানুষ নতুন করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থার মধ্যেও বাজারের ভিড় কমানো যাচ্ছে না। আতঙ্কিত মানুষের দাবি, যশোর শহরের এইচএমএম রোডে মানুষের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। এই কারণে এই সড়কটি লকডাউন করা জরুরি বলে দাবি তাদের। একইসাথে বাজারের অন্যান্য যেসব জায়গায় মানুষের ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে সেসব জায়গাও লকডাউনের আওতায় আনা হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
তবে, এইচএমএম রোড যে লকডাউন হচ্ছে সেটি এক প্রকার নিশ্চিত বলে ওই সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে। কেবল শহর না, অভয়নগরে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি হওয়ায় এই উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ স্থান নতুন করে নির্ধারণ করে সেগুলোও লকডাউনের আওতায় আনা হবে। তবে, সবকিছু চূড়ান্ত হবে আজ(১৫ জুন) দুপুরের সভায়।
যশোরের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আজ দুপুরে জরুরি সভা ডেকেছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। সভায় স্বাস্থ্যবিভাগ যশোরের সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি উত্থাপন করবে। তারই ভিত্তিতে কোথায় কীভাবে লকডাউন করা যায় সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে, এই কমিটির অধিকাংশ সদস্যের বক্তব্য, শহরের এইচএমএম রোডেই সবচেয়ে বেশি মানুষের আনাগোনা। এখান থেকেই লোকজন অন্যান্য জায়গায় যাচ্ছে। বর্তমান শহরের ট্রানজিট পয়েন্টই এইচএমএম রোড। অবশ্য, শহরবাসীর বেশিরভাগের বক্তব্য, এইচএমএম রোড থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত যদি লকডাউন করা যায় তাহলে মানুষের ভিড় অনেক কমে যাবে। আর ভিড় কমলে ঝুঁকি কমবে করোনার।
বেশ কিছুদিন ধরে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না যশোর শহরে মানুষের ভিড়। সেইসাথে যানজটও। দিন দিন এই যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এ কারণে নাকাল হচ্ছে শহরবাসী। প্রায় সময় অধিকাংশ সড়ক থাকে অবরুদ্ধ। ফলে, কোনো মানুষ সময়মতো তার গন্তব্যে যেতে পারেন না। বিভিন্ন সড়ক ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে তাদের। এ কারণে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় পড়া মানুষ প্রায় সময় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। তারা অবিলম্বে যানজট নিরসনসহ ভিড় কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
করোনাভাইরাস দুর্যোগের মধ্যে যশোর শহর আগের চেহারায় ফিরে গেছে। ভুক্তভোগী পথচারীদের অভিযোগ, যত্রতত্র ইজিবাইক ঘোরার কারণে যানজট বেশি হচ্ছে। শহরের লোকজন বলছেন, বর্তমানে যাত্রী তেমন না থাকলেও ইজিবাইক ঘোরাফেরা বন্ধ নেই। এই ইজিবাইক যানজটের অন্যতম কারণ বলছেন শহরবাসী।
গত (২৮ মে দোকানপাট ও ৩১ মে) সব অফিস আদালত খুলে দেওয়ায় ফিরে এসেছে যশোর শহরের চিরচেনা দৃশ্য। মানুষ যেন কোনোকিছুর তোয়াক্কা করছে না। এতবেশি যানবাহন বিশেষ করে ইজিবাইক চলাচল শুরু করেছে যে যানজট তৈরি হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। সেই সাথে বাজারঘাটে মানুষের ভিড়ও বাড়ছে দিনদিন। অনেক মানুষ অপ্রয়োজনে শহরে ঘোরাফেরা করে ভিড় বাড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
করোনার প্রাদুর্ভাব যেন মানুষকে কোনোভাবেই ঘরের মধ্যে আটকাতে পারছে না। এই অবস্থা চলতে থাকলে যশোরে করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগবেনা বলে আশঙ্কা বহু মানুষের।