২৬ বছরের ভাংগা সংসার জুড়া লাগালেন ওসি আবু জিহাদ
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্টেশন পাড়ার রেহানা বেগম( ৪৫)আজ থেকে ২৬ বছর আগে আসাদুল (৫০) পিতা হাতেম আলী গ্রামঃ দর্শনা হল্ট চাঁদপুরের সাথে ঘর বাঁধে। রেহানা বেগম জানায় যে, তাকে ছেলে বেলায় আসাদুল পড়াত। এরপর থেকে একে অপরকে প্রচন্ডভাবে ভালোলাগা। অতঃপর নিজেদের সিদ্ধান্তে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া।এরপর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে দুখে ভালই চলছিল। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে এবং এক মেয়ের জন্ম হয়। কিন্তু আসাদুলের আর্থিক অনটন কখনো দূর হয় নাই। অভাব অনটনের সংসারে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকত। এর মধ্য দিয়ে ছেলে ও মেয়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়।এরপর রেহানা বেগম – আসাদুল ঘর ভাড়া করে চুয়াডাঙ্গা শহরে থাকত। দু’মাস আগে হঠাৎ একদিন আসাদুল রেহানাকে তালাক দিয়েছে বলে চলে যায়। রেহানার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। এরপর রেহানা পুলিশ সুপার মহোদয়ের অফিস, ডিবি অফিস, চুয়াডাঙ্গা সদর থানা সহ বিভিন্ন দপ্তরে তার স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করে।চুয়াডাঙ্গা জেলার মানবিক পুলিশ সুপার খ্যাত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ জাহিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান কে রেহানার বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন। এবং সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান তাৎক্ষণিকভাবে রেহানা সহ তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং আসাদুল তার অন্যান্য আত্মীয়স্বজনকে থানায় দেখা করার জন্য বলেন। থানায় এসে আসাদুল কোনভাবেই রেহানার সাথে থাকতে রাজি নয় বলে ওসি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান কে জানিয়ে দেন। বিয়ে ও তালাক একজন মানুষের আইনি অধিকার। পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে এটা বোঝার পরও রেহানার একা হয়ে যাওয়ার নিদারুণ কষ্ট ও তার বুকফাটা কান্না ওসি কে তাড়িত করে। তাই তিনি বিভিন্ন মানবিক বুদ্ধি দিয়ে উভয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ সহ পরিশেষে আসাদুলকেও বোঝাতে সমর্থ হয। এ সময় আসাদুল তার ভুল স্বীকার করে। এই বয়সে একজন নারীকে একা ফেলে তার এভাবে চলে যাওয়া ঠিক হয়নি মর্মে স্বীকার করে। তারা দীর্ঘ দুমাস পর পুনরায় শুক্রবার ১৯ জুন দুপুরে একে অপরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। রেহানা তার স্বামীকে ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।তারা স্বামী-স্ত্রী উভয়েই এবং আত্মীয়-স্বজনসহ পুলিশের এই ধরনের মীমাংসা কে সাধুবাদ জানায়। “আসুন আমরা নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করি, নারীকে তার প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দেই।”
“ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।”