কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার সরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার সকালে সিভিল সার্জনের আকষ্মিক ভাবে অভিযান চালিয়ে প্রসূতির নবজাতককে দ্বিখন্ডিত করার ঘটনায় ২জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও হাসপাতালে অনুপস্থিতির জন্য ২জন ডাক্তারকে শোকজ করা হয়েছে ।
সূত্রে জানা যায়, দেবিদ্বার সরকারি হাসপাতালে প্রসূতির নবজাতককে দ্বিখন্ডিত করার ঘটনায় আয়া জেসমিন আক্তার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মী মোসা. শিরিনা আক্তারকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার হাসপাতালে দায়িত্ব পালনে অনুপস্থিতির জন্য মেডিক্যাল অফিসার ডা. আপেল চন্দ্র সাহা ও ডা. ফারহানা ইয়াসমিনসহ দুজনকে শোকজ করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহমেদ কবীর জানান, সিভিল সার্জন মহোদয় প্রসূতির ঘটনায় খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে এসে দেখেন যথা সময়ে দুই ডাক্তার ডা. আপেল চন্দ্র সাহা ও ডা. ফারহানা ইয়াসমিন কে কর্মস্থলে উপস্থিত না পেয়ে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে।
অপরদিকে প্রসূতির ঘটনা তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত যে তারা দায়িত্ব অবহেলা করার কারণে আয়া জেসমিন আক্তার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মী মোসা. শিরিনা আক্তারকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রসূতি’র বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত চলছে তদন্ত শেষ হলে পরিপূর্ণ বলা যাবে।
উল্লেখ্য, দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের রিকশাচালক সেলিম মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য শনিবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপপ্লেক্স মেডিক্যাল অফিসার ডা.ফারহানা ইয়াসমিন তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রসব বেদনা থাকলেও কোন চিকিৎসক না থাকায় সন্তান প্রসবের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি । হাসপাতালের নার্স আছিয়া ও ঝর্না রোগীর স্বজনদের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য বাইরের দোকান থেকে ওষুধপত্র ক্রয় করান।
পরবর্তীতে প্রসব বেদনায় প্রসূতি হাসপাতালে কাতরালেও সময়মত ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। একপর্যায়ে ওই রাত সাড়ে ১১টার দিকে নার্স আছিয়া, ঝর্না ও আয়া জেসমিন মিলে ফাতেমার গর্ভের সন্তানের পা এবং হাত ধরে টানাটানি শুরু করলে হাত-পাসহ অর্ধেকাংশ ছিঁড়ে প্রসুতির পেট থেকে বেরিয়ে আসে এবং মাথা ছিঁড়ে পেটে থেকে যায়।
এ অবস্থায় প্রসূতির জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে গভীর রাতে প্রসূতিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। টেনে ছিড়ে বের করা হাত ও পা তা হাসপাতালে পাশের ডাস্টবিনে লুকানোর চেষ্টা কালে রোগীর স্বজনদের নজরে আসে। রবিবার কুমেক হাসপাতালে অপারেশন করে প্রসূতির পেটে থাকা সন্তানের মাথাসহ অর্ধেকাংশ বের করে আনা হয়। বর্তমানে ওই প্রসূতি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর যন্ত্রণা নিয়ে চিকিৎসাধিন রয়েছে।