রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
নড়াইলের ফাজেল আহম্মেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, দেশের মানুষের ও রাজনৈতিক দলসহ সবার চাওয়া একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীন, নির্বাচন কমিশনার দেবহাটায় স্মৃতি ভূমিতে আন্তর্জাতিক নজরুল সম্মেলনের সমাপনী দেবহাটায় ৮ দলীয় ক্রিকেট টুনামেন্টের ফাইনাল চৌগাছায় শ্রমজীবী মানুষের মাঝে পানি ও খাবার সেলাইন বিতরণ দেবহাটায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু রাহান তিতুর জনসংযোগ আম শুধু ধ্বংস না জড়িতদের কঠিন শাস্তির দাবি জনতা ব্যাংকের ৩৫০০ সিনিয়র অফিসারের পদোন্নতি দাবি পার্বত্য শান্তিচুক্তি পাহাড়ের চিত্র বদলে দিয়েছে- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যেকোনো সভ্য জাতিগোষ্ঠীর প্রাণ: গণপূর্তমন্ত্রী

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রতিষ্ঠার প্রারম্ভিক পর্ব — ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০, ২.০৬ পিএম
  • ২৮৪ বার পঠিত

১৯০৫ সালে বঙ্গ বিভাগের ফলে পূর্ব বঙ্গের রাজধানী হিসেবে ঢাকার গুরুত্ব ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং একই সঙ্গে আসাম ও পূর্ববঙ্গের জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও অধিকতর স্বায়ত্তশাসন লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বঙ্গবিভাগের আগে কলকাতা কেন্দ্রিক টাওয়ার বাংলা খ্যাত পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান ছিল সামন্তবাদী  অর্থনৈতিক প্রভূত্বসহ শিল্প বাণিজ্য সাহিত্য সংস্কৃতি সকল ক্ষেত্রে মোড়লিপনায় আর কৃষি প্রধান খামার বাংলা খ্যাত পূর্ব বঙ্গের  অবস্থান ছিল যেন পশ্চাৎভূমির। প্রাকৃতিক সম্পদে স্বয়ম্ভর হয়েও পূর্ববাংলা ছিল শিক্ষা দীক্ষায় চাকরি এমন কি ব্যবসা বাণিজ্যে নানানভাবে অবহেলিত, বঞ্চিত। বঙ্গভঙ্গের ফলে কলকাতা কেন্দ্রিকতার স্বার্থমূলে আঘাত আসে, ভিত কেঁপে ওঠে সামন্তবাদী মনোভাবের , এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ সূচিত হয় । স্বদেশী আন্দোলনে মেতে ওঠে বাংলার বিভাগ বিরোধীরা। তীব্র আন্দোলন ও প্রতিরোধের মুখে ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারত সরকার দরবার দিবসে বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করে। এ ঘোষণায় পূর্ববঙ্গের জনগণ, বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সম্প্রদায়  নিদারূণ আশাহত হয় ।

এক সপ্তাহের মধ্যে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে নবাব খাজা সলিমুল্লাহ (১৮৭১-১৯১৫) বঙ্গভঙ্গ রদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে  ১৭ এবং ২০ ডিসেম্বর তারিখে দুটি হাতের লেখা চিঠি পাঠান ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জকে। ১৭ তারিখের চিঠিতে  তিনি বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে পুর্ববাংলার জনগনের মর্মাহত হওয়ার বেদনা এবং ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন । ২০ তারিখের চিঠিতে খাজা সলিমুল্লাহ পূর্ববাংলার সংখ্যাগুরু মুসলমানদের সার্বিক উন্নতিবিধানকল্পে তাদের শিক্ষাব্যবস্থায় কিছু সংস্কার এবং মুসলিম শিক্ষার তত্ত্বাবধানের জন্য শিক্ষা বিভাগে একজন যুগ্ম পরিচালক কিংবা সহকারী জনশিক্ষা পরিচালক (Assistant Director of Public Instruction for Mohamedan Education) এর পদ সৃষ্টি করে একজন উপযুক্ত মুসলমান কর্মকর্তাকে পদায়নের প্রস্তাব রাখেন। তিনি পত্রের শেষাংশে তাদের দাবিদাওয়া পেশ ও আলোচনার জন্য ভাইসরয়ের সাক্ষাৎ প্রার্থনাও করেন। পত্র পাওয়ার পরদিনই (২১ ডিসেম্বর) ভাইসরয় তার উপদেষ্টা পর্ষদের শিক্ষা সদস্য (the Education Member of Viceroy’s Council) স্যার এইচ বাটলার সাহেবকে নবাবের পত্রের প্রস্তাবাবলী, বিশেষ করে বাংলার মুসলমানদের শিক্ষা তত্ত্বাবধানের জন্য বিশেষ কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি সম্পর্কে তার অভিমত জানতে চেয়ে নোট দেন। এই নোটে ভাইসরয় তার পর্ষদের কাছে একটি ঐতিহাসিক অভিমতও রাখেন। তিনি বলেন,

Whether it would not be desirable to encourage the creation of a University in Dacca with Mahomedan Hostels

ভাইসরয়ের উপলদ্ধি ছিল তার এই উদ্যোগকে পূর্ববঙ্গবাসীরা স্বাগত জানাবে এবং এটি হবে,

an undeniable proof of our [Government’s] intention to encourage Mahomedan education, or in this way to safeguard the interests of the Mahomedan’s in the province

ইতিমধ্যে তার পর্ষদ এবং দিল্লিতে সেক্রেটারি অব স্টেটেরে সঙ্গে ভাইসরয়ের বেশ কয়েক দফা দাপ্তরিক যোগাযোগ ও মত এবং তথ্য ও উপাত্ত বিনিময় ঘটে । ভারত সরকার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঘরোয়াভাবে নীতিগত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।

৩১ জানুয়ারি, ১৯১২ তারিখে ভাইসরয় হার্ডিঞ্জের ঢাকা সফরের সময় তার সঙ্গে পূর্ববঙ্গের মুসলিম নেতৃবৃন্দের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করেন। তাদের পেশ করা বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে ভাইসরয় তাদেরকে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাটি প্রথম অবহিত করেন । প্রতিনিধিদলকে ভাইসরয় জানান-

Imperial Government realise that education is the true salvation of Mohamedan community and are most anxious to help them…the Government felt very strongly about this , and in view of the difficulty of access to Calcutta from Dacca , and for other reasons, the Government propose to recommend to the Secretary of State the constituion of a University of Dacca and the appointment of a Special officer for education in Eastern Bengal.

প্রতিনিধিদলের সাক্ষাতের একদিন পরই ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯১২ সরকার অফিসিয়াল কমুনিকের মাধ্যমে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতায় নামে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, হিন্দু জমিদার এবং স্টেটসম্যান ও বেঙ্গলী  পত্রিকা। ১২ ফ্রেব্রুয়ারি প্রখ্যাত আইনজীবী ড. রাশবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ভাইসরয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় আপত্তি উত্থাপন করেন। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে আরো বলেন,

It is feared that the creation of a University at Dacca will be the nature of an internal partition a break up of the national life of the people now happily re-united.

এসব প্রতিবাদ সত্ত্বেও বাংলা সরকার আগের  সিদ্ধান্তে অটল থাকে, ১৯১২ সালের ২৭ মে তারিখে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কল্পে রেজিলিউশন জারি করে এবং ব্যারিস্টার নাথানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন স্কিম প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন করে। কমিটি ২৪ ডিসেম্বর, ১৯১২ তারিখে রিপোর্ট দাখিল করে এবং ২৬ ডিসেম্বর সেই রিপোর্টের ওপর সকল মহলের মতামত আহ্বান করা হয় । কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের প্রভাবশালী সদস্যরা ১ মার্চ, ১৯১৩ সিনেটের নবম অধিবেশনে প্রত্যেকে লিখিতভাবে নাথান কমিটির রিপোর্টের বিরূপ সমালোচনা করে। সেক্রেটারি অব স্টেট ১৯১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে নাথান কমিটির রিপোর্ট অনুমোদন করেন। কিন্তু ইতিমধ্যে প্রথম মহাসমর শুরু হয়ে যাওয়ায় ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম থমকে যায়।

প্রথম মহাসমরের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ থমকে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ১৪ এপ্রিল, ১৯১৪ তারিখে বাংলা প্রেসিডেন্সি মোহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতির ভাষণে সৈয়দ নবাব আলী চৌধুরী (১৮৬৩-১৯২৯)  বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিলম্ব এবং নাথান কমিটির রিপোর্টের সুপারিশ পুরাপুরি বাস্তবায়নের পরিবর্তে কিছু ভিন্নমাত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন । এই উদ্বেগ উৎকণ্ঠাকে প্রশমনের উদ্দেশ্যে দিল্লির নির্দেশে বাংলার ডিপিআই ডব্লিউ ডব্লিউ হর্নেল সাহেবের নেতৃত্বে বাংলা সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করে; হর্নেল সাহেবের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন সহকর্মী প্রেসিডেন্সি বিভাগের অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর খানবাহাদুর আহছানউল্লা কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে এর সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে সংশ্লিষ্ট হয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, নবাব সলিমুল্লাহর পত্রে শিক্ষাবিভাগে মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থা দেখভালের জন্য যে বিশেষ কর্মকর্তার পদায়নের প্রস্তাব ছিল, সরকার খানবাহাদুর আহছানউল্লাকে সেই মর্যাদায় মনোনীত করেছিলেন এবং একমাত্র তিনিই হয়েছিলেন Assistant Director of Public Instruction for Mohamedan Education , তার আগে বা পরে ভারতবর্ষের কেউ এ পদে অধিষ্ঠিত হননি।

হর্নেল কমিটির পর্যবেক্ষণ পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও এর আইন কানুন প্রণয়নে যুক্তি ও বাদানুবাদের ক্ষেত্রে তথ্য উপাত্ত হিসেবে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়।

ইতিমধ্যে নবাব সিরাজুল ইসলাম ( ১৮৪৫-১৯২৩), সৈয়দ শামসুল হুদা ( ১৮৬২-১৯২২), মৌলবি আবদুল করিম (১৮৬৩-১৯৪৩), এ কে ফজলুল হক ( ১৮৭৩-১৯৬২), সৈয়দ এমদাদ আলী (১৮৭৫-১৯৫৬), শামসুল উলামা আবু নসর ওহীদ ( ১৮৭৮-১৯৫৩), বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ( (১৮৮০-১৯৩২), কাজী ইমদাদুল হক ( ১৮৮২-১৯২৬), স্যার মোহাম্মদ আজিজুল হক ( ১৮৯২-১৯৪৭) প্রমুখ শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীবৃন্দ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে স্ব স্ব অবস্থান থেকে জোরালো ভূমিকা পালন করেন।

১৯১৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন বাংলার শিক্ষাব্যবস্থায় সার্বিক সংস্কার ও উন্নয়নকল্পে যে বিশাল প্রতিবেদন প্রণয়ন করে সেখানে বাংলার মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কারকল্পে কমিশনের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশমালায় হর্নেল কমিটির ফাইন্ডিংস বারবার প্রাসঙ্গিকতায় আসে। কমিশন দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, ভাবুক, চিন্তাবিদ, শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি, বিদ্যানুরাগী নিচয়ের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট ২২টি প্রশ্নের ওপর লিখিত অভিমত সংগ্রহ করে । প্রশ্নমালার মধ্যে ঢাকাসহ মফস্বল বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠন, এখতিয়ার ও ভূমিকা, শিক্ষা কার্যক্রম, কারিকুলাম, প্রশাসনিক বিন্যাস, উচ্চ শিক্ষায় সম্প্রদায়গত স্বার্থ সম্পর্কিত প্রসঙ্গগুলো হর্নেল কমিটির পর্যবেক্ষনের আলোকে উঠে আসে।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের চার নম্বর প্রশ্নের বিষয়বস্তই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে এবং সে বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ারে স্কুল-কলেজসমূহের অধিভুক্তির প্রসঙ্গটি। বলাবাহুল্য এই বিষয়টিই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আপত্তি ও নেতিবাচক মনোভাবের ভিত্তি। চার নম্বর প্রশ্নের জবাবে খানবাহাদুর আহছানউল্লাহ তার স্মারকলিপিতে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান প্রশাসনিক প্রগলভতা এবং উচ্চতর শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এর বশংবদ সীমাবদ্ধতার স্বরূপ তুলে ধরেন এবং এ প্রেক্ষাপটেই নাথান কমিটির প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কিমটির বাস্তবায়নের সপক্ষে সমর্থনে তার অয়োময় প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যুক্তিকে প্রেসিডেন্সি বিভাগের এডিশনাল ইনস্পেক্টর খান বাহাদুর আহছানউল্লা কলিকাতায় আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং সেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয় এর স্কন্ধে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর কিছু দায়দায়িত্ব অর্পণের সঙ্গে সমান্তরালে এনে উত্থাপনের দ্বারা জোরালো করেন এবং পরিশেষে তিনি প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্তির এখতিয়ার এবং কীভাবে অর্পিত দায়িত্ব স্থানান্তর বা সমন্বয়সাধনের মাধ্যমে পুনর্বিন্যাসিত হতে পারে তার রূপরেখা স্পষ্ট করেন ।

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের কাছে প্রদত্ত উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে খান বাহাদুর আহছান উল্লার উপরোক্ত তাত্ত্বিক ধারণা ও দর্শনভিত্তিক অনেকগুলো সুপারিশ কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের পরপরই প্রণীত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের কাঠামোর মধ্যে সরাসরি প্রতিফলিত হতে দেখা যায়। এটা বিশেষভাবে প্রণিধান যোগ্য যে, ১৯১৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের  কাছে খান বাহাদুর আহছানউল্লা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রধান কর্তব্য যে শিক্ষাদান ও গবেষণাকাজে মনোনিবেশ করা  এবং অধিভূক্ত স্কুল কলেজের পরীক্ষা গ্রহণ তথা সার্টিফিকেট ইস্যু করা যে তার কাজ হতে পারে না, পরীক্ষা গ্রহণ ও ডিগ্রি প্রদানের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সমীচীন এ সম্পর্কে যে যুক্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক পরামর্শ রেখেছিলেন ভাবীকালে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তা গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামস্থ  পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে পাঠদান ও গবেষণায় অধিকতর মনোযোগী হওয়ার জন্য অধিভুক্ত কলেজের পরীক্ষাগ্রহণের দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ধারণা, সেসব কলেজকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পাঠদান থেকে অব্যাহতি দান এসবই খানবাহাদুর সে সময়েই সুপারিশ করেছিলেন।

ভারত সরকার ১৯১৬ সাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে ১৯১৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠিত হওয়ায় সে উদ্যোগে ভাটা পড়ে। ১৯১৯ সালে কমিশনের রিপোর্ট দাখিল হলে সরকার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সপক্ষে কমিশনের ইতিবাচক অভিমতসহ সুপারিশলাভ করলে আর বিলম্ব না করে আসন্ন সেপ্টেম্বরের লেজিসলেটিভ  কাউন্সিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর খসড়া আইন ১৯১৯ উত্থাপনের পরিকল্পনা জানিয়ে শিক্ষা সচিব কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে আগস্টের ১১ তারিখে পত্র যোগে জানান। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আগস্ট ২৩, ১৯১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত ১১তম সিনেট সভায় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট বিচার বিশ্লেষণের সুযোগ না দিয়েই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আইন প্রণয়নে সরকারি উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করা হয় এবং সিনেট সভার সম্পূর্ণ কার্যবিবরণী দিল্লিতে পাঠানো হয় টেলিগ্রাম যোগে। সরকার এ ব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্তে অটল থাকে এবং ১১ সেপ্টেম্বর ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল উত্থাপিত হয়। সরকার সেপ্টেম্বর ২৩, ১৯১৯ তারিখের পত্রে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে অবিলম্বে খসড়া আইনের ওপর চূড়ান্ত  অভিমত প্রেরণের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানায়। এই প্রেক্ষিতে নভেম্বরের ১ তারিখের সিনেটের ১৪তম অধিবেশনে খসড়া আইনের চুল চেরা বিশ্লেষণ ও সংশোধন সংযোজন সুপারিশ করার জন্য উপাচার্য কে প্রধান করে ৯ সদস্যের  সিনেট কমিটি গঠন করা হয়।

এই  বিশেষ কমিটিতে একমাত্র বাঙালি মুসলমান সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন খান বাহাদুর আহছানউল্লা । প্রেসিডেন্সি ডিভিশনের এডিশনাল ইনস্পেক্টর পদে প্রায় পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনের পর মাত্র মাস দুয়েক আগে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগের ইনস্পেক্টর হিসেবে বদলি হলেও তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে  তখনো একমাত্র বাঙালি মুসলমান সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন। খসড়া বিল পরীক্ষা পর্যালোচনা কমিটির সদস্য হিসেবে বিলের প্রতিটি অনুচ্ছেদেরে ধারা উপধারায় কমিটির অন্যান্য জাঁদরেল সদস্যদের সঙ্গে বাদানুবাদে পূর্ববঙ্গের জনগণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষা সংস্কৃতিতে চক্ষুষ্মান হওয়ার স্মারক ও প্রাণবায়ু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিন্ন স্বার্থ ও আইনের আওতায় এই নবীন উচ্চ শিক্ষায়তনটির প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে  তার জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন। আত্মচরিত ‘আমার জীবন ধারা’ তে তিনি লিখেছেন,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া বিল সিনেটে উপস্থিত হইলে দারুণ বিরোধের সৃষ্টি হয়, পরে উহা বিবেচনার জন্য একটি স্পেশাল কমিটি গঠিত হয়। উহার মধ্যে আমি একজন মেম্বর ছিলাম এবং যতদূর সাধ্য উহার আবশ্যকতা সমর্থন করিয়াছিলাম।

কমিটির সদস্য হিসেবে বিলের প্রতিটি অনুচ্ছেদ আনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ও স্বার্থ সংরক্ষরণকল্পে পদে পদে বলিষ্ঠ অবস্থান গ্রহণ করেন। কমিটির রিপোর্টে  বিধৃত সকল মতের সঙ্গে স্বাভাাবিকভাবেই তিনি একমত হতে পারেননি। সেকারণে ২৭ নভেম্বর, ১৯১৯ তারিখে তিনি চার পৃষ্ঠার একটি নোট অব ডিসেন্ট দাখিল করতঃ রিপোর্টে স্বাক্ষর করেছিলেন। তার নোট অব ডিসেন্টটি  কমিটির রিপোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট এবং কমিটির অপরাপর অধিকাংশ সদস্যের সংরক্ষনাত্মক, ভিন্ন ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে নোট অব ডিসেনেটর বক্তব্যে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ভারতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতিশ্রুতি ও তা পরিপালনে তাদের যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত  একাগ্রতার প্রসঙ্গটি পুনরূল্লেখে বাধ্য হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদ ও পর্যায়ে পর্যাপ্ত মুসলিম প্রতিনিধিত্ব রাখার বিষয়টি কমিটি যথাযথ বিবেচনায় না আনায়, তিনি তাদের বিপরীতে তার অবস্থান জোরালো ভাবে তুলে ধরেন নোট অব ডিসেন্টে।  তিনি এ ব্যাপারে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ও নাথান কমিটির রিপোর্টের অভিমতসহকারে  যুক্তিও তুলে ধরেন। কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী কমিটিতে অ-ইউরোপীয় সদস্যের মধ্যে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ মুসলমান হওয়া উচিত এই দাবি রাখেন এবং Assistant Director of Public Instruction for Mohamedan Education কেও সেখানে সদস্য হিসেবে থাকার পক্ষে যুক্তি দেখান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট ও নির্বাহী কমিটির নিয়োগ, কর্মপরিধি ও ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধি বিধান আইনের তফশিলে ( ( Schedule) না রেখে সেগুলোকে মূল আইনের মধ্যে আনার জোর আহ্বান রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য-এর নিয়োগ এবং তার কার্যকালের ব্যাপ্তি সংক্রান্ত বিশেষ বিধান অনুসরণের এর ক্ষেত্রেও সম্ভাব্য দুর্গতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯১৯ পরীক্ষা ও বিবেচনার জন্য গঠিত  বিশেষ কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের রিপোর্ট পেশ করলে ডিসেম্বর মাসের ১৭ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত সময়ে সিনেটের বিশেষ অধিবেশন সমূহে কমিটির রিপোর্টের ওপর বিস্তারিত আলোচনা এবং আইনের প্রতিটি অনুচ্ছেদ ও তফসিলের ওপর পর্যালোচনা ও ভোটাভুটির মাধ্যমে সিনেটের সংশোধন প্রস্তাব গৃহীত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের মধ্যে পূর্ববঙ্গের বিশেষ করে মুসলমান সম্প্রদায়ের সার্বিক স্বার্থ তথা তাদের উচ্চ শিক্ষা প্রসারকল্পে আনিত বিধি বিধান ব্যবস্থাবলী বিষয়ক মৌলিক কয়েকটি ক্ষেত্রেই আবর্তিত হচ্ছিল বাদানুবাদ আপত্তি উত্থাপন আর গ্রহণ বর্জনের বাহাস। খান বাহাদুর আহছানউল্লা কমিটিতে যেমন সিনেটেও তেমন ছিলেন পূর্ববঙ্গের একমাত্র মুসলমান সদস্য । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা তুলে ধরা থেকে শুরু করে বঙ্গীয় মুসলমানদের উন্নতির সোপান স্বরূপ এই প্রতিষ্ঠানটির সবল ও উজ্জ্বল পরমায়ু লাভের সকল সুযোগ সুবিধার নিরাপদ নিষ্পত্তিতে তাকে বারবার উচ্চকণ্ঠ হতে হয়েছে। নোট অব ডিসেন্টে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে সব বিষয়ে ভিন্নমত ও দাবি পেশ করেছিলেন সিনেটের সভায় দেখা গিয়েছে সেসব বিষয়েই বেশি তর্ক বিতর্ক ও আলোচনা সমালোচনা হয়েছে।

প্রধান যে বিষয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে সেটি হল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্ষদ ও কমিটিতে বিশেষ সম্প্রদায়কে বিশেষ  প্রতিনিধিত্বদানের প্রসঙ্গ নিয়ে। যে কোনো জাতির বা সম্প্রদায়ের সার্বিক উন্নয়নে রাজনীতির সঙ্গে শিক্ষার সার্বজনীন সম্পৃক্ততার অনিবার্যতা তুলে ধরেন তিনি। খান বাহাদুরের বক্তব্যের পর পুরো সিনেটে নতুন চৈতন্যের উদয় হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পর্যালোচনা কমিটির অন্যতম সদস্য এবং সিনেটে শিক্ষা বিভাগের উর্ধ্বতন প্রতিনিধি F .C Turner সাহেব প্রথমেই বলেন তিনি  ‘saw no reason to alter his views’।

টার্নার সাহেবের বক্তব্যের পর পরিস্থিতি আরো অনুকূলে চলে আসে। মি. জে আর ব্যানার্জি জিসি বোসের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন, তবে  ড. দ্বারকানাথ মিত্র মি. বোসকে সমর্থন করেন।

যাইহোক, এরপর জিসি বোসের প্রস্তাবটি ভোটাভুটিতে দেয়া হয়, প্রস্তাবের পক্ষে ছয় ভোট এবং বিপক্ষে দশ ভোট পড়ায় প্রস্তাবটি [আইনে communal representation সংক্রান্ত সকল প্রবিধান রহিত করা হোক, আর তা যদি রাখতেই হয় তাহলে ৬৮ ধারা পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে তা করা হোক] পরিত্যক্ত হয় এবং সেক্ষেত্রে মূল প্রস্তাব [communal representation সংক্রান্ত প্রবিধানটি দশ বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকতে পারে] গৃহীত হয়। communal representation সম্পর্কে খানবাহাদুরের বলিষ্ঠ অবস্থান গ্রহণ ও জোরালো যুক্তিসম্বলিত বক্তব্য পেশ এবং তাতে টার্নার সাহেবের সমর্থনের কারণে বিশেষ প্রতিনিধিত্বের সুযোগটি তিরোহিত হওয়ার পরিবর্তে অন্তত দশ বছরের জন্য সংরক্ষিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ২৫ অনুচ্ছেদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপরিবেশে প্রশাসনে কারিকুলায় মুসলমান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সার্বিক স্বার্থ দেখভালের জন্য Moslem Advisory Board গঠনের ব্যবস্থা রাখা হয়। কমিটি আইন পর্যালোচনাকালে এটার দেখাদেখি হিন্দুদের জন্যও Hindu Advisory Board থাকার ব্যাপারে দাবি তোলেন এবং কমিটিতে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে তা গৃহীত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় আইনের মূল ৩৪ অনুচ্ছেদে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বলতে Dacca Hall , Muhammadan Hall , and such other Halls as may be prescribed by the Statutes এর প্রভিশন থাকলেও পর্যালোচনা কমিটি ‘জগন্নাথ হল’ নামে অতিরিক্ত আরেকটি হলের নাম সংযুক্ত করে।  ১৯ ডিসেম্বর তারিখের সিনেট সভায় খান বাহাদুর আহছানউল্লা ৩৪ অনুচ্ছেদে ‘জগন্নাথ হল’ সংযুক্তির প্রস্তাব করলে তা গৃহীত হয়।

বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার প্রেক্ষাপটে পূর্ববঙ্গের জনগণের সার্বিক উন্নয়ন দাবিদাওয়ার প্রেক্ষিতে ভারতে ব্রিটিশ সরকার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের যে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন পর্যায়ে সৃজিত সমস্যা, বাধাদানে গৃহীত ব্যবস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয়টি যাতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নানান প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে পূর্ববঙ্গের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী- সম্প্রদায়ের জন্য কল্যাণবহ না হতে পারে সে ব্যাপারে সামন্ত স্বার্থবাদী মহলের সকল প্রকার ষড়যন্ত্রের মুখে শিক্ষা প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন সুবাদে সরকারের ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণী পর্ষদসমূহে একমাত্র পূর্ববঙ্গবাসী মুসলমান সদস্য হিসাবে খানবাহাদুর আহছানউল্লা অবিসংবাদিত ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভাবীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই পূর্ববঙ্গের জনগণ আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা লাভ করে, মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিলাভ এবং স্বাধীকার থেকে স্বাধীন সার্বভৈৗম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সফল হয়। কালের কপোলতলে দেশ ও জাতির এ নবউত্থান ও অগ্রযাত্রার সোপান সূচনায় নিজেদের বিরলপ্রজ ব্যক্তিত্ব, অকুতোভয় সাহস, বিদ্যা বিনয় আর মেধার সমন্বয়ে বিকশিত বিচক্ষণতা ও দূরদৃষ্টিক্ষেপে যারা নিবেদিত নিষ্ঠাবান ছিলেন খানবাহাদুর আহছানউল্লা তাদের একজন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পটভূমিতে তার নেপথ্য কর্মকুশলতা আর সাংগঠনিক অবয়ব লাভের সূচনা লগ্নে তার সক্রিয়-সোচ্চার সাহসিকতাপূর্ণ গঠনমূলক অয়োময় অবস্থান গ্রহণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে পরিকীর্তিত হবে সন্দেহ নেই।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, সরকারের সাবেক সচিব এবং এন বি আরের সাবেক চেয়ারম্যান

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
  12345
27282930   
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com