প্রাণঘাতি মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলা, সার্বিক অবস্থা এবং উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ ও নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে; সারাক্ষণ খোলা থাকছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ। রোগটির কারণে দেশে সৃষ্ট স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে সরকার ও প্রশাসনের নানা কার্যক্রমের বিষয়ে সার্বক্ষণিক খবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। প্রশাসন ও জনগণকে দিচ্ছেন বিভিন্ন দিকনির্দেশনা। ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠ প্রশাসন কীভাবে কাজ করছে, তা খোঁজ নিতে ভিডিও কনফারেন্সে তৃণমূলের সঙ্গেও যুক্ত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈশ্বিক দুর্যোগ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং কার্যক্রম নিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনাতেই। চলমান পরিস্থিতিতে সরকারি কার্যক্রমে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের যে ঘোষণা তিনি ইতোমধ্যে একাধিকবার দিয়েছেন, তার কঠোর ও নির্মোহ প্রয়োগেও নজরদারি করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় করোনা মোকাবেলায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর সচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মহাপরিচালক (এসএসএফ) মেজর জে. মোঃ মজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোঃ খলিলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় নির্বাহী সেলের মহাপরিচালক মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী প্রমূখ।
প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞাপূর্ণ নির্দেশনা ও অভয়বাণীর যথাযথ বাস্তবায়নের ফলেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
করোনা মোকাবেলায় প্রবল প্রতাপশালী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিলসহ অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এ ভাইরাস মোকাবেলায় সমালোচিত হচ্ছেন। ঠিক সেই সময় জনবহুল বাংলাদেশের সরকারপ্রধান হিসেবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রশংসিত হচ্ছেন শেখ হাসিনা।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কেবল দেশের মধ্যেই উদ্যোগ নিয়ে থেমে থাকেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক উদ্যোগ গ্রহণ করেও তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। চলমান মহামারিতেও অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে মৃত্যুহার অনেক কম। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোয় যেখানে মৃত্যুহার ১৫-২০ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশে এ হার মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। তাঁর গৃহীত সাহসী পদক্ষেপ বিশ্ববাসীর কাছে হয়েছে প্রশংসিত।
দেশে কঠোর হাতে করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক উদ্যোগ, ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে আন্তর্জাতিক তহবিলে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান, কভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বকে পাঁচ প্রস্তাব দিয়ে ইতিমধ্যে করোনার ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের আন্তর্জাতিক উদ্যোগেও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ‘গ্লোবাল সিটিজেন’ তহবিলে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য তহবিল গঠনের ক্ষেত্রেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মধ্যেই আরেক প্রাণঘাতী দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সৃষ্ট পরিস্থিতিও তাঁকে মোকাবিলা করতে হয়েছে শক্ত হাতে। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুকন্যার জাতীয়-আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলো প্রশংসা কুড়াচ্ছে বিশ্বের দেশে দেশে।
গত ৩ জুন ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে ‘ফাইটিং সাইক্লোনস অ্যান্ড করোনাভাইরাস : হাউ উই এভাকুয়েটেড ডিউরিং অ্যা প্যানডেমিক’ শিরোনামে এক নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ সুপার-সাইক্লোন ‘আম্পান’ এবং কভিড-১৯ এর মতো দুটি বিপদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। আমরা অন্যদেরকে একই রকম বিপদ মোকাবিলায় পাঠ দিতে পারি।’ এপ্রিলে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিশ্বকে ৫ দফা প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেখেন, ‘বিশ্ব এক অজানা এবং অদেখা শত্রুর বিরুদ্ধে আজ লড়াই করছে। এই শত্রুর কোনো সীমানাবোধ নেই, নেই কোনো শ্রেণিবিবেচনা। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমাদের ব্যবস্থাপনার ত্রুটিগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে এই শত্রু। এমন অবস্থায় বিচ্ছিন্ন হয়ে নয়, বরং পরস্পরকে সহযোগিতার মাধ্যমে এই কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধেজয়ী হতে পারবো আমরা।’
বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনার ত্রুটি নিয়ে বিশ্বকে সচেতন করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে করোনা মোকাবিলায় সফল নারী নেতৃত্বের তালিকায় স্থান দিয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় ফোর্বস ম্যাগাজিন। অর্থনীতির শীর্ষস্থানীয় ম্যাগাজিন ফোর্বসে বলা হয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বাংলাদেশে, তা এখনো কার্যকর করতে পারেনি যুক্তরাজ্য। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগাজিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের প্রশংসা করে গত ২৪ এপ্রিল এক আর্টিকেলে লেখে, প্রায় ১৬ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস বাংলাদেশে। সেখানে দুর্যোগ কোনো নতুন ঘটনা নয়। আর এই করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা ফেব্রুয়ারির শুরুতেই চীনে থাকা বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মার্চের শুরুতে প্রথম সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন এবং কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেন। তিনি দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা রোগী শনাক্ত করতে স্ক্রিনিংয়ের জন্য মেশিন ব্যবহার করে কয়েক হাজার মানুষকে দ্রুত কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ দেন, যা এখনো যুক্তরাজ্য কার্যকর করতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন ফোর্বসের লেখক আভিভাহ উইটেনবাগ-কক্স।
শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামও। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের আয়োজিত ‘এনহ্যান্সিং রি