বরাবর,
মহামান্য রাষ্ট্রপতি ,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ।
বিষয় : বাংলাদেশ পুলিশের নিম্নোপদস্থদের হ্রদয়ের চাপা না বলা আর্তনাদ প্রসঙ্গে আবেদন ।
মহামান্য / মাননীয় ,
আটষট্টি (৬৮) হাজারেরও বেশি গ্রাম বাংলার দেশে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ২৪ ঘন্টা কর্তব্য নিয়োজিত এবং ১৬ -১৮ কোটির বেশি মানুষের জান – মালের নিরাপত্তায় দিন – রাত নিয়োজিত প্রায় ২ লক্ষ ৫ হাজার বাংলাদেশ পুলিশ সদস্য। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে, সেবাই পুলিশের ধর্ম । এই মুল মন্ত্রকে সঙ্গী করে নিজের জীবন ঝুকিপুর্ন জেনেও মানুষের নির্বিঘ্ন জীবনযাপন – জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে সর্বক্ষণ রাস্তা – ঘাটে সর্বজায়গায় সচেষ্ট বাংলাদেশ পুলিশ। ব্যক্তি, দল, মত, সংস্থা সবার প্রয়োজনে সর্বক্ষণ বাংলাদেশ পুলিশ ।
যারা সবার প্রয়োজনে সর্বক্ষণ তাদের প্রয়োজন মেটাতে কিসের প্রয়োজন ?
★ বাংলাদেশ পুলিশের অতীত :-
দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ,অপরাধ দমন, অপরাধী গ্রেফতার জননিরাপত্তা উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের নিমিত্তে ১৮৬১ সালে পুলিশ বাহিনী প্রথম গঠন করা হয় । তারপর বিভিন্ন দেশের নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ বাহিনী গঠন হয় । বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে বিজয় অর্জনের পর এক বিধ্বস্ত ও নাজুক পরিবেশে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী পুর্নগঠিত হয় । তারপর থেকে নিরলস নিষ্ঠায় শ্রম দিয়ে দেশের শান্তি – শৃঙ্খলা বজায় রেখেছে ও সর্বসাধারণের জননিরাপত্তা আরো জোরদার করে পুলিশ জনগনের বন্ধু হয়ে বিপদ – আপদে পাশে থাকছে দিন রাত ডাকা মাত্র ।
শুধু তাই নয়, বিগত সকল সরকারের আমলেও পুলিশ ১৬-১৮ ঘন্টা ডিউটি করেছে দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সাথে ।
★ বাংলাদেশ পুলিশের সুযোগ-সুবিধা :-
আট (৮) ঘন্টা ডিউটি করে সকল সরকারী কর্মচারী যে বেতন পান একজন পুলিশ ১৬-১৮ ঘন্টা ডিউটি করে, বেশি কষ্ট করে সেও সেই একই বেতন পান । পুলিশের সুযোগ সুবিধা বলতে কোন কথা নেই আছে শুধু দাসত্বের ন্যায় দাস হয়ে ডিউটি করে যাওয়া । আন্তর্জাতিক শ্রম আইনে ৮ ঘন্টার শ্রমের কথা লিখা আছে,’ তারপর কেউ যদি ৮ ঘন্টার বেশি ডিউটি করে তবে সে ওভার টাইম পাবে কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ সেটা পায় না । দেশ ডিজিটাল হচ্ছে কিন্তু পুলিশ সেই বৃটিশের পুরনো আইনে চলছে । পুলিশ কি বাংলাদেশের ডিজিটাল হওয়ার যোগ্য নয় ? নাকি সেই বৃটিশ শাসকেরা বাংলাদেশ পুলিশ কে চালাচ্ছে ?
★ সর্বসাধারণের আলোচনা -সমলোচনায় বাংলাদেশ পুলিশ :-
বাংলাদেশ পুলিশকে নিয়ে এদেশের বেশির ভাগ লোকই নেতিবাচক ভঙ্গি তে দেখে থাকে । পুলিশই একা ঘুষ খায় এটা ঠিক নয় , এদেশের সরকারী সকল প্রতিষ্ঠানেই ঘুষের লেনদেন চলে , পুলিশের চেয়েও অনেক বেশি । যদিও পুলিশ দুর্নীতি করে থাকে অন্যদের তুলনায় খুবই কম, যদি ঘুষ খেয়ে থাকে তাহলে বলবো এটা স্বাভাবিক ব্যাপার ! কেন জানেন ? সকল সরকারী কর্মচারী ৬ -৮ ঘন্টা অফিস শেষে বা ডিউটি শেষে কিছু না কিছু কর্ম করতে পারে , পরিবারের ইনকাম বাড়াতে পারে । যেমন ধরুন, ডাক্তার ৪ -৫ ঘন্টা হাসপাতালে রোগী দেখে বাকি সময় কাজ ফাকি দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগি দেখে টাকা উপার্জন করে, এমন আরো অনেকে আছে যারা অফিস শেষে বাড়িতে বা বাসায় বা অন্য কোথাও ব্যাবসা -বানিজ্য, কাজের সুযোগ-সুবিধা পায় । কিন্তু শতকরা ৯০জন পুলিশ ঠিক মতো গোসল, খাওয়া ও ঘুমাতেও পারে না , ডিউটি আর ডিউটি ! পুলিশ ২৪ ঘন্টার জন্য ভর্তি এবং ২৪ ঘন্টাই নিয়োজিত, ২৪ ঘন্টাই তাকে হাজির থাকতে হয় । ইচ্ছে করলেই আর অন্য সরকারি চাকরীজিবীর মতো অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন বা কোন ব্যাবসা করতে পারে না । পুলিশের চাকরী করলে চাকরী ছাড়া অন্য সকল কর্ম বন্ধ। পরিশ্রম অনুযায়ী বেতন -ভাতা খুবই কম তাই ঘুষ খাওয়াটাই স্বাভাবিক ! তাই বলে সবাই যে ঘুষ আদান – প্রদান করে বা সকলেই ঘুষ পায় এটা ঠিক নয়, হয়তো দেখা গেছে শতকরা ০৮-১০ % ঘুষ নামক শব্দের সাথে কোন না কোন এক সময়ে জড়িত ছিল বা ০৮ -১০ % কম বেশী থাকতে পারে । আর যারা বেতনের বাহিরে অতিরিক্ত কোন টাকা পায় না তাদের কষ্ট করে সংসার বা পরিবার মা -বাবা, সন্তানদের লেখা পড়া সহ সকল প্রকার খরচ চলাতে হয় । দুর্ভাগ্য এদেশের মানুষের ও দেশের । একজন দেশ সেবক কে কষ্ট করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে হয় ।
★ বাংলাদেশ পুলিশের ছুটি :-
৩৬৫ দিনে এক বছর আমরা সবাই জানি ! ৩৬৫ দিনের কতোটা দিন একজন পুলিশ কনস্টবল থেকে এস আই, বা ইন্সপেক্টর তার পরিবারকে সময় দিতে পারে ? অনেকে হয়তো জানেন অনেক দিন, কতো দিন কেউ সঠিক জানেন না ! বিশেষ করে কনস্টবল ৩৬৫ দিনে (এক বছরে) মাত্র বিশ দিন ছুটিও ঠিক মতো তার পরিবারের বাবা – মা , স্ত্রী – সন্তানদের সাথে ভোগ করিতে বা সময় দিতে পারে না ! মহামান্য রাষ্ট্রপতি – মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যদি প্রশ্ন রাখা হয় যে, একটা পরিবারে স্ত্রী -সন্তানদের সাথে সময় দেয়া, ছেলে- মেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা, পারিবারিক অনন্যা কাজ করার জন্য ৩৬৫ দিনে ২০ দিন বা তার কম সময় কি যথেষ্ট ? এই ২০ দিন ছুটি ৪ ভাগে ৫ দিন বা ৭দিন করে যেতে হয় , তাও অনেক আকুতি – মিনতি করে অফিসারের পিছনে পিছনে চার – পাচ দিন ঘুরে ! নিজের ছুটি নিজে কখনোই সহজে যাওয়া যায় না, ছুটি যেতে চাইলেই মনে হয় অফিসারের জমি জমা জোর করে নিতে চাচ্ছি বা তার পরিবারের …..—- । এতো অল্প বেতনের চাকরী করে নিজের পরিবারকে যদি সময় দিতে না পারি , টাকা দিয়ে অন্য মানুষকে দিয়ে কাজ করানো কি কখনো সম্ভব ? আমারা সবাই জানি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সৈনিকরা ৩৬৫ দিনে (এক বছরে) ৮০ দিনেরও বেশি ছুটি ভোগ করিতে বা যেতে পারে ! সেনাবাহিনীর সৈনিক রা এক সঙ্গে ০২ (দুই মাস) ছুটি নিজ বাড়িতে ভোগ করিতে পারে , সরকারি অনন্য কর্মচারী রা সকাল ৮ হতে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত অফিস করে , তারপর আবার শুক্রবার- শনিবার বন্ধ পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন , তারপর আবার ইচ্ছে করলেই নিদিষ্ট ছুটির যে কোন মেয়াদের ছুটি যেতে পারে ! বাংলাদেশ পুলিশকেই বাংলাদেশের সকল প্রকার আইন – শৃঙ্খলা সর্বক্ষণ বজায় রাখতে হয় , এদেশের মানুষের জান -মালের নিরাপত্তার জন্য বেশী শ্রম দিতে হয়। সে জন্যই মনে হয় বাংলাদেশ পুলিশই বেশি বৈষম্যর শিকারও হন বেশি ।
★ কিছু কথা :-
বাংলাদেশ পুলিশকে বিগত সকল ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কিংবা সরকার