উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মেয়ে রেশমা নাহার রত্না সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় ৩৮২ টি সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ও ১১২ টি মাইক্রোবাসের অনুসন্ধানে জড়িত মাইক্রোবাস চালককে গ্রেফতার, মাইক্রোবাস জব্দ,গত ৭ আগস্ট, ২০২০ (শুক্রবার) সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে শেরেবাংলা নগর থানাধীন লেক রোডে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নারী পর্বতারোহী ও আইয়ুব কলোনি সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা মোছাঃ রেশমা আক্তার রত্না (৩২) গুরুতর আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, লেক রোডে সাইক্লিংরত অবস্থায় রত্নার সাইকেলের সাথে একটি কালো মাইক্রোবাসের ধাক্কায় রত্না ঘটনাস্থলেই ছিটকে পড়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। তৎক্ষণাক্ত তাকে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর পর শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ কালো মাইক্রোবাসটিকে শনাক্ত ও অভিযুক্ত ড্রাইভারকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। পরবর্তীতে নিহতের আত্নীয় মোঃ মনিরুজ্জামান থানায় এসে একটি মামলা দায়ের করেন (শেরেবাংলা নগর থানার মামলা নং ০৬, তারিখঃ ০৭ আগস্ট, ২০২০, ধারাঃ সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৯৮, ১০৫)। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ মোবারক আলী নিযুক্ত হন।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর নির্দেশে, তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান এর তত্বাবধানে ও তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহমুদ খাঁন এর তদারকিতে শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এর নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকার প্রয়োজনীয় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহে জন্য ৩ টি পৃথক টিম গঠন করা হয়।
কালো মাইক্রোবাসটির সম্ভাব্য যাত্রাপথ ধরে মাইক্রোবাসটির অবস্থান শনাক্তে কাজ শুরু করা হয়। প্রাথমিকভাবে মূল সড়ক, অন্যান্য সড়ক, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক স্থাপনার প্রবেশ পথে থাকা ৩৮২ টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে ঘটনার কিছু সময় পূর্ব ও পরে মাইক্রোবাসটির যাত্রাপথ শনাক্তে সক্ষম হয় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। এ সকল সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে কালো হায়েস মডেলের মাইক্রোবাসটির বেশ কিছু অস্পষ্ট ডিজিটাল নম্বর প্লেটের ছবি পাওয়া যায়। প্রাপ্ত নম্বরগুলো কিছুটা স্পষ্টীকরণপূর্বক প্রাথমিকভাবে ১১২ টি মাইক্রোবাসের বিষয়ে কাজ শুরু হয়। ৪ টি আলাদা টিম গঠন করে বিআরটিএ সহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এ সকল মাইক্রোবাসের মালিকানা, রঙ, সিটের সংখ্যা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহের বিষয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। পুলিশের বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্যের সমন্বয়ে সর্বোপরি নিবিড়ভাবে পরিচালিত অভিযানে আসে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।