উজ্জ্বল রায়/ নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
করোনা মহামা’রিতে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে বন্ধ থাকা নড়াইল জেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুল স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং নন এমপিও বেসরকারি প্রাইমারী স্কুলের প্রায় ১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারি মান’বেতর জীবনযাপন করছেন। কিন্ডারগার্টেন স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ভাড়া, বিদ্যুৎ ও পানির বিল পরিশোধ করতে হি’মসি’ম খাচ্ছেন। অনেকে স্কুলের কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। অনেকের বিল বকেয়া রয়েছে। ইতমধ্যে কয়েকটি স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং দেওয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিরা এ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার মানবিক সহায়তা পাননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলায় ৬৩টি কিন্ডারগার্টেনে ৭শ ৫৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারি কর্মরত। এসব স্কুলে ৭ হাজার ৪শ ২৭জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। স্কুলের ফলাফল ও সহ শিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমের কারণে অনেক স্কুলের সুখ্যাতিও রয়েছে। শিক্ষকরা এসব স্কুল থেকে বেতন এবং এর বাইরে স্কুলের শিশুদের টিউশনি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করে থাকেন। এছাড়া জেলায় ২৪টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং নন এমপিও ৭টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। করোনার প্রভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি টিউশনিও বন্ধ রয়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জনের পথ।
নড়াইল জেলা কিন্ডার গার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোঃ সামিউল আলম জিহাদ জানান, ভয়াবহ দূর্যোগ করোনা মহামারিতে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক-কর্মচারিরা মানবে’তর জীবন যাপন করছে। কেউ আমাদের কোনো খোঁজ নেয়নি। গত ৮ জুলাই এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানবিক সহায়তা চেয়ে মানবন্ধন ও স্মারকলিপি দিলেও কোনো সহায়তা পায়নি।
নড়াইল জেলা কিন্ডারগার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নড়াইল হলিচাইল্ড প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলের অধ্যক্ষ মোঃ আসলাম খান বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হবার পর স্কুলটি বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারিদের বেতন দিতে পারিনি। কয়েক মাস ভাড়া দিতে না পারায় স্কুলটি স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়েছি। এ পর্যন্ত দুটি স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবার খোঁজ-খবর নিয়েছেন। কিন্তু আমরা কোনো অনুদান বা প্রণোদনা পাইনি।
জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, বৃহত্তর এই জনগোষ্ঠীর জন্য সহমর্মিতা থাকলেও সরকারিভাবে কোনো সহায়তা বা প্রণোদনা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এলাকাভিত্তিকভাবে এসব কর্মহীন মানুষের জন্য সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যারা আমার কাছে এসেছেন তাদের অনুদান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।