উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের পিঃ চরসুচাইল বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নে মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনের শিকার পাংখারচর চর সুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যে কোন সময়ে নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে। বিদ্যালয় ভবন ছাড়াও সংলগ্ন পাংখারচর, চরসুচাইল ও চরপরাণপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কা*টাচ্ছে। এ এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী।
দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নদী ভাঙনে তিনটি গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর, হাজারো গাছপালা ও কৃষি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। নদী ভা*ঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পি-চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে স্কুলের এক একর ১০ শতক মাঠ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় নদীর এপারে নড়াইল ওপারে গোপালগঞ্জ জেলা। ১৯৭১ সালে সংশ্লিষ্ট এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা মধুমতি নদীটি রাতারাতি গতি পরিবর্তন করে ফেলায় এই ৩ গ্রামের মধ্যে বিশাল বাওড়ের সৃষ্টি হয়। তবে এই বাওড়ে মূল মধুমতি নদী থেকে আসা নিয়মিত জোয়ার-ভাটায় তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এই জোয়ার-ভাটার স্রোতে এখানে কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে পাংখারচর চরসুচাইল প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ভাঙ্গনের তীব্রতা বেশি।ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় কথা হয় চরসুচাইল গ্রামের বাসিন্দা কল্লোল ফকিরের সাথে। তিনি জানান , মধুমতি নদীর মূল স্রোত অন্যত্র দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদী ভা*ঙ্গনের কষ্ট আমাদের ছাড়ে নাই। বাওড়ের তীরবর্তী তিন গ্রামের মানুষ এখনও নদী ভাঙ্গনে সহায় সম্বল হা*রাচ্ছে। আমাদের তিন গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যে কোন সময়ে নদী ভাঙ্গনে বি*লীন হতে পারে। অনেকে বাড়িঘর, কৃষি জমি, গাছপালাসহ সহায়-সম্বল হারিয়েছেন। ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আরো অনেককেই বাড়িঘর হারিয়ে ঠাঁই নিতে হবে রাস্তায়। চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী কামরুজ্জামান বলেন, ১০ বছর আগে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। প্রথম দিকে দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী থাকলেও নদী ভা*ঙন আতঙ্কে অনেক শিক্ষার্থী স্কুল ছেড়ে চলে গেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১১০জন। স্কুল মাঠটিও এক বছর আগে নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন টিনশেডের পাকাঘরটির কাছেই ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন থেকে মাত্র ১০ ফুট দুরে আছে স্কুলঘরটি, ঝুঁকির মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস করতে হয়। যেন স্কুলটি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেন। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের কর্মকর্তারা জানান, চরসু চাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এ এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে গত বছর একটি প্রকল্প দাখিল করা হলে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। যা দিয়ে ১৭০ মিটার কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হতো না। তাই পরবর্তীতে মধুমতি নদীর অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পের আওতায় একটি প্রকল্প দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি পাশ হলে এখানে ৬০০ মিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন করা যাবে। আশা করছি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পটি অনুমোদন হবে।