শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
ভূমিমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্র গণপূর্তমন্ত্রীর সাথে ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধির সৌজন্য সাক্ষাৎ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে সরকার বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব গঠন করবে। – পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন খাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে -তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী নতুন প্রজন্মের মাঝে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরার আহ্বান জানান মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। কালিগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ও সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন করলেন আতাউল হক দোলন এমপি Jolpore.com অনলাইন বুক রিভিউ প্রতিযোগিতা পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই  এথেন্স সম্মেলন : দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে ৪ দিনের ন্যাপ এক্সপো, উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। -পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনিন্দ্য প্রকাশ নিয়ে ভাবতেন- মনিরুল ইসলাম

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৯.৪০ এএম
  • ৩৩২ বার পঠিত
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনিন্দ্য প্রকাশ নিয়ে ভাবতেন। বঙ্গীয় রেনেসাঁর তীর্থভূমি কলকাতায় ১৯১১ সালে মখদুমী লাইব্রেরী নামে প্রকাশনা সংস্থা গড়ে তোলেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সংগঠক হিসেবেও তিনি কিংবদন্তির ভূমিকা পালন করেন।
ভাষার পবিত্রতা নিয়ে আহ্ছানউল্লা বলেছেন- ‘ভাব কুৎসিত হইলে ভাষা কলুষিত হয়, ভাব পবিত্র হইলে ভাষা পরিপুষ্ট হয়’। বাংলা ভাষা হিন্দুর না মুসলমানের, সে বিতর্কে ১৯১৮ সালে যশোর খুলনা সিদ্দিকিয়া সাহিত্য সমিতির অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে তিনি উদাত্ত আহবান জানান- ‘এখনও যদি হিন্দু-মুসলমান মিলন না হয়, তাহা হইলে বঙ্গভাষা দুই ভাগে বিভক্ত হইয়া পরস্পরকে হীনবল করিতে চেষ্টা করিবে ও জাতীয় উন্নতির প্রতিপদে ব্যাঘাত ঘটাইতে থাকিবে। আর বিবাদের সময় নাই, চিন্তার অবসর নাই, মাতৃভূমি হিন্দুর নিকট যেরূপ আদরণীয়, মুসলমানের নিকটও তদ্রুপ। বঙ্গভাষা একের পক্ষে যেমন নিজস্ব, অপরের পক্ষেও সেইরূপ। তাই বলি যদি বঙ্গ-দেশের উন্নতি চাও, বঙ্গভাষার প্রাধান্য দেখিতে চাও, যদি মঙ্গলময়ের ইচ্ছা পূর্ণ করিতে চাও, তবে ভাষাব্যবচ্ছেদ হইতে বিরত থাক’।
আধুনিক বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্যের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি প্রতিষ্ঠার লগ্নে তিনি কার্যকরী ভূমিকা রাখেন। এই সমিতি তৎকালিন সাহিত্য সংগঠন ও সাহিত্য আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা সেই সময়ে মাসিক ৩ টাকা চাঁদা দিতেন সাহিত্য সমিতিকে। প্রতিষ্ঠার তিন বছরের মাথায় ১৯১৪ সালের গোড়ার দিকে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সম্পাদক মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ (পরে ডক্টর) স্কুল শিক্ষকতার কাজ নিয়ে চলে যান চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। তাঁর অনুপস্থিতিতে সমিতির কাজ একরকম বন্ধই হয়ে যায়। এই ক্রান্তিলগ্নে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা সমিতির হাল ধরেন। পরের বছর অক্টোবরে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা’র সভাপতিত্বে একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় মুহাম্মদ শহিদুল্লার ইস্তফাপত্র গৃহীত হয় এবং তদস্থলে ভোলার কবি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হককে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ১৯১৭-১৯১৮ বর্ষে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা সমিতির কার্যকরী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সমূহ সাংগঠনিক ভূমিকা পালন করেন।
নবজাগরণের যুগে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা নিজে কলম ধরার পাশাপাশি তৎকালিন মুসলমান লেখকদের সাহিত্য সৃষ্টির অনুকূল সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। ১৯১১ সালে তিনি কলকাতার কলেজ স্কোয়ারে মখদুমী লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করেন। তখনকার সময়ে মুসলমানগণ প্রকাশনা শিল্পে আগ্রহী অথবা সাহসী ছিল না। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা’র জন্য এটি ছিল অত্যন্ত সাহসী ও দূরদর্শী পদক্ষেপ। ব্যবসায়িক মানসিকতা নয়, বরং বাংলা সাহিত্যের প্রতি আন্তরিকতা, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য বিকাশের চিন্তায় তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মখদুমী লাইব্রেরী থেকে প্রকাশিত ‘বিষাদ সিন্ধু’ ও ‘আনোয়ারা’ তখন অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল এবং কার্যত এ বই দু’টির মাধ্যমে মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজে একটি পাঠকশ্রেণি গড়ে উঠেছিল। মখদুমী লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার অল্পকালের মধ্যে অনেক মুসলমান লেখক সৃষ্টি হয়েছিল। এসব লাইব্রেরী থেকে কাজী নজরুল ইসলাম সহ অসংখ্য নবীন লেখকের বই প্রকাশিত হতো। সরকার নির্দেশিত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপিয়ে এ লাইব্রেরী মুসলমান শিক্ষার্থীদের গ্রন্থশুণ্যতা পূরন করতো। অবিভক্ত বাংলায় মখদুমী লাইব্রেরীর আগে এত জনপ্রিয় ও ব্যস্ততম মুসলমান মালিকানাধীন প্রকাশনা সংস্থা আর একটিও ছিল না। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা তাঁর আত্মজীবনী ‘আমার জীবন ধারা’য় লিখেছেন- ‘ধুম গতিতে লাইব্রেরীর কাজ চলিতে থাকিল। বহু সাহিত্যিক, লেখক, কবি ও কর্মীর অকুন্ঠ সাহায্য ও সহযোগিতা পাইলাম।…আমাকেও পুস্তক লেখার আবার কখনো কখনো লাইব্রেরীর কাজে সারা দিনরাত খাটিতে হইতো’।
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা প্রতিকুল সময়ে নিরলসভাবে মাতৃভাষায় সাহিত্য চর্চা করেছেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের বহু পূর্বে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্য তিনি যে দীর্ঘ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন তা আমাদের ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে অনন্য অধ্যায়। বাংলাভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ ভুলতে আহ্ছানউল্লা উদাত্ত আহ্বান জানান, “ভাই সকল! হিন্দু-মুসলমানী দ্বন্দ্ব আজ হইতে ভুলিয়া যাও; ‘হিন্দু বাঙ্গালা’, ‘মুসলমানী বাঙ্গালা’ এই পার্থক্যবোধক শব্দগুলি অভিধান হইতে উঠাইয়া দাও; উভয়ের সাহায্যে বঙ্গভাষার আয়ত্ত বৃদ্ধি কর এবং ভাষার উত্তরোত্তর উন্নতি দ্বারা দেশের মঙ্গল সাধন কর। আমিত্ব ছাড়িয়া দাও, এক মনে এক প্রাণে প্রেমময়ের আশ্রয় গ্রহণ কর এবং বিশুদ্ধ ভক্তি ও প্রেম লইয়া জাতিনির্বিক্ষশেষে বঙ্গভাষার উন্নতি সাধন কর।” (১৯১৮)
৫২ এর ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ফলাফলে ১৯৫৫ সালে বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি ফেলোশীপ প্রবর্তন করে এবং খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন বাংলা একাডেমির প্রথম ফেলো। ১৯৬০ সালের ১৪ জুলাই বাংলা একাডেমির পরিচালক মুহাম্মদ এনামুল হক খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লাকে লেখেন- ‘বিগত ৪ঠা ও ৫ই মে তারিখে অনুষ্ঠিত বাংলা একাডেমীর কর্মপরিষদের ৩২ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আমি আপনাকে সানন্দে জানাইতেছি যে, বাংলা সাহিত্যে আপনার বিশিষ্ট ও বহুমুখী দানের স্বীকৃতিরূপে একাডেমী আপনাকে এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানটির ‘ফেলো’ বা ‘সম্মানিত সদস্যের’ মর্যাদা দিয়া নিজেকেই গৌরবান্বিত মনে করিতেছে’।
মনিরুল ইসলাম
পরিচালক
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
  12345
20212223242526
27282930   
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com