লিয়াকত,রাজশাহী :রাজশাহী পশ্চিম রেলওয়ের অফিসার্স রেস্ট হাউজের কেয়ার টেকার ময়নুল হোসেন’র নিজ বাড়ী নিলফামারী জেলায়।
চাকুরীর সুবাদে থাকেন রাজশাহীতে এতে তিনি পেয়ে যান আলাদিনের চেরাগ।
নগরীর মাষ্টারপাড়ায় ভাঙ্গা ব্রীজের সামনে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচতলা বাড়ীর কাজ শুরু করেছেন। এতে করে রেলের কর্মচারী ও জনমনে বইছে গুঞ্জনের বাতাস।
জানা যায়, পশ্চিম রেলওয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আস্থাভাজন লোক পরিচয়ে দিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রতাড়নার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা। সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অপছন্দের ব্যাক্তি সামিউল ও তপু নামে দুই কর্মচারিকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে বিদায় করেছেন। অপরদিকে, শামীম মইনুলের আস্থাভাজন হওয়ায় রেস্ট হাউজের একটি রুমে নারী নিয়ে ফুর্তি করার সময় হাতে নাতে ধরা পরেও অলৌকিক ভাবে রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
এ বিষয়ে, জানতে চাইলে বহিস্কৃত কর্মচারী তপু ও সামিউল বলেন, রেস্ট হাউজের প্রতি ঘর ২ হাজার টাকা করে ভাড়া দেওয়া, রেস্ট হাউসে মাদক সেবন ও নারী নিয়ে ফুর্তি করার প্রতিবাদ করায় ময়নুল আমাদেরকে বলে, স্যারকে বলে তোদের চাকরী খেয়ে নেব । এর কিছুদিন পর ড্রাইভার তপু ছুটিতে থাকাকালীন রেস্ট হাউজে ময়নুলের কাছে থেকে মাসিক ২ হাজার টাকায় ভাড়া নেয়া তপুর ঘরের তালা ভেঙে সেখানে গাঁজা রেখে নতুন তালা লাগিয়ে দেয়,পরে ময়নুল কর্তৃপক্ষকে জানায় সে গাঁজার ব্যাবসা করে, কর্তৃপক্ষ সেই গাঁজা পেয়ে আমাকে রেস্ট হাউজ থেকে বহিস্কার করেন। ময়নুল উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার মনোরঞ্জনে সার্বিক সহযোগিতা করায় তার কোন দোষ কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে না। সে যা বলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও তাই বিশ্বাস করে। তাছাড়া চাকরী পাইয়ে দেবার জন্য বড় স্যারের ঘুষের টাকাও ওর মাধ্যমেই লেনদেন হতো।
অভিযুক্ত ময়নুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা, এজিএম আমিনুল স্যার সহ অধিকাংশ স্যাররা আমার কাজে খুশী হয়ে আমাকে ভালোবাসেন, তাই যাদের চোখ টাটায় তারা এসব মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে। তপুর ঘরের তালা ভাঙ্গা প্রশ্নের উত্তরে সে বলে স্যারের নির্দেশেই তার ঘরের তালা ভাঙ্গা হয়েছিল।
এদিকে,নীলফামারীর নীজ এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে রেলে চাকুরী দেয়ার নাম করে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তার সত্যতা পাওয়া গেছে।
পার্বতিপুরের পাওয়ার হাউজ কলোনীর আকবর আলীর স্ত্রী জেসমিন অভিযোগ করে বলেন, ময়নুল চারবছর আগে চাকরি দেয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। শুধু আমার কাছেই নয়, আমার পরিচিত আরো বেশ কয়েকজনের কাছেই বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা দেয়ার ২ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কারো চাকরী দিতে পারেনি, এমন অবস্থায়, তার নিকট টাকা ফেরত চাইলে সে নানা রকমের টালবাহানা শুরু করে। শেষে তার অফিস অর্থাৎ রেলের রাজশাহী রেস্ট হাউজে তাকে আটক করলে সে আমাকে তার নামের চারলাখ টাকার একটি চেক প্রদান করে। কিন্তু চেক পাওয়া এক বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমি টাকা পাইনি। শুনেছি পশ্চিম রেলের তৎকালিক জিএম শহীদুল ইসলামের নির্দেশে এরকম বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হিসেবে তাকে রেস্ট হাউজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু জিএম স্যার এখান থেকে চলে যাওয়ার পর সে আবারও রেস্ট হাউজে আগের মতই চাকরি করছে।
এসব বিষয়ে পশ্চিম রেলের এজিএম আমিনুল ইসলামকে জিগ্যাসা করলে তিনি বলেন, মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দেয়ার এখতিয়ার আমার নাই,দিতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে তবে আপনারা যে বিষয়ে এসেছেন, সে বিষয়ের কোন লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি, লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে । তবে ময়নুল যে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে ঘটনা আমি লোকমুখে শুনেছি।