বশির আহমেদ খলিফা : একটি মডেল পৌরসভা হিসাবে রুপান্তরিত করার লক্ষ্যে ঝালকাঠি জেলা বিএমএসএফ সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন ঝালকাঠির পৌর-মেয়র আলহাজ্ব লিয়াকত আলী তালুকদার। তিনি ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে যে নির্বাচনী ইসতেহার ঘোষনা করেছিলেন এবং ঝালকাঠিবাসির সমর্থন ও ভোটে নির্বাচিত হয়ে ৫ বছরের স্বল্প সময়ের পথ পরিক্রমায় নানা প্রতিকূলতায় আজ তার প্রতিশ্রুতির প্রায় শতভাগ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন। বুধবার (৭ অক্টোবর) তার কোর্ট রোডস্থ ব্যাক্তিগত কার্যালয়ে সন্ধ্যায় ৭টায় এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঝালকাঠি বিএমএসএফ’র সভাপতি আজমীর হোসেন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু’র নেতৃত্বে সংগঠনের অন্যান্য সদস্যগণ আলোচনায় অংশ নেন। ঝালকাঠি পৌরসভার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সরকারের নানামূখী উন্নয়ন কর্মকা- ও প্রশংসনীয় কাজগুলো মানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ লিয়াকত আলী তালুকদার।
পৌর মেয়র আলহাজ্ব মোঃ লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, “বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ে তোলার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন বলেই দেশের তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন হচ্ছে। ঝালকাঠিতেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শেখ হাসিনার অত্যন্ত কাছের মানুষ আমাদের প্রিয় নেতা আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে ঝালকাঠি পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তরের কাজ চলছে। “কোভিড ১৯” করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মানুষের আয়-রোজগারের বিঘœ ঘটেছে তাই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার যে সহায়তা প্রদান করেছে, তা সঠিকভাবে বন্টন করেছি, এবং ব্যক্তিগতভাবেও অসংখ্য মানুষকে সহযোগিতা করেছি। তিনি সরকারের সকল উন্নয়ন তুলে ধরার পাশাপাশি শেখ হাসিনা ও আমির হোসেন আমুর জন্য দোয়া করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব কাজেই নারীদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন তারই ধারাবাহিকতায় সরকার নারীদের বিভিন্ন ভাতা প্রদান করে আসছেন। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও দুগ্ধ ভাতা দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বর্তমানে মাদক একটি মারাত্মক ব্যাধি। এই ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে। মাদক নির্মূল হলে উন্নয়ন আরো বেড়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতো। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে অবতীর্ণ হয়েছে। আমির হোসেন আমু সব সময় ঝালকাঠির উন্নয়নের চিন্তা করেন। করোনার মধ্যেও তিনি সবসময় খোঁজখবর নিচ্ছেন। তাঁর নির্দেশে আমরা পৌরসভার আরো বেশ কিছু উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আগামীতে এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাল্লাহ। তিনি সাংবাদিকদের জানান, সরকারি বরাদ্ধ ২৯ কোটি পেয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মেয়র বলেন, ইতিমধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতা প্রচলনসহ গরীব অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জমি ও ঘর প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়াও গরীব অসহায় মানুষদের বসবাসের জন্য আবাসন তৈরীর প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সবশেষে মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, দোষে গুণে মানুষ। আমিও তার উর্ধ্বে নই। বিগত দিনের ন্যায় ভবিষ্যতেও মেয়র পদে মনোয়ন পেয়ে নির্বাচিত হতে পৌরবাসীর সহযোগীতা কামনা করছি। ”
উল্লেখ্য ঝালকাঠি পৌরসভা উন্নয়নের অনেক কাজ জনগনের কাছে দৃশ্যমান হয়েছে। বিশেষ করে পৌরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী ছিল চলাচলের উপযোগী রাস্তা-ঘাট নির্মানের, যা বিগত দিনে হলেও বৃষ্টির পানিতেই তা নষ্ট হয়েছে। এ মেয়রের দায়িত্ব গ্রহনের পর নির্মিত উচুঁ এবং চওড়া আরসিসি রাস্তাগুলো উন্নতমানের ও টেকসই। এখন পৌরসভায় ভারী যানবহন চলাচল করলেও রাস্তার কোন ক্ষতি হচ্ছেনা। এছাড়াও বর্ধিত পৌরসভার কিছু সড়ক নির্মানাধীন কিছু সড়ক নির্মান হওয়ায় দীর্ঘ দিনের সড়ক সমস্যার সমাধান হয়েছে ঐসব এলাকার পৌরবাসী জানিয়েছে। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরণে বর্ধিত পৌরসভায় ১২ কিলোমিটার নতুন সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এই উদ্যোগে ঝালকাঠি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান পাঁকা করা হয়েছে। যা ছিল ইতিপূর্বে কাঁচা এবং ঈদের নামাজ পড়ার অন্যতম অন্তরায়। ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আরহাজ্ব আমির হোসেন আমু’র সহায়তায় ঝালকাঠি পৌর এলাকার উন্নয়ন এবং সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির উপকূলীয় শহর প্রকল্পের আওতায় ৯শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। সম্প্রতি প্রকল্পটির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একটি প্রতিনিধি দল ঝালকাঠি পৌরসভা পরিদর্শন করে গেছে। এছাড়াও ঝালকাঠি-পিরোজপুর পৌরসভার যৌথ উন্নয়নে শতকোটি কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায়। আগামী দিনে এসব প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পাদনে পৌরবাসী, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, আলহাজ্ব আমির হোসেন আম’র কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে মেয়র জানান। এছাড়াও মেয়র হিসাবে দায়িত্ব গ্রহনের পর পৌরকর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি পরিশোধেও আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। বিগত দিনে মেয়র কাউন্সিলরদের মাঝে দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধের কারণে পৌর এলাকার উন্নয়ন কাজ বিঘিœত হয়েছে। যা বর্তমানে একেবারেই নেই বলে মতবিনিময় সভায় উল্লেখ করা হয়।
আলহাজ্ব লিয়াকত আলী তালুকদার জনবান্ধব গরীব দুঃখীর মেয়র হিসেবে যেমনি পরিচিতি রয়েছে তেমনি পৌর উন্নয়নে দেখিয়েছেন অনন্য দৃষ্টান্ত। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঝালকাঠি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহনের পর থেকেই গত ৫ বছরে পৌর শহরে রাস্তা-ঘাট ও ড্রেনসহ পৌর এলাকা উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখে তার নির্বাচনী ওয়াদা শতভাগ পুরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তেমনি পৌরবাসীর সুখে দু:খে সাথে থেকে পৌর সেবা দিয়ে এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন !
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ঝালকাঠি প্রথম শ্রেণির পৌরসভাকে শতভাগ ডিজিটালে রুপান্তর করতে এবং উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত রাখতে পূন:রায় আলহাজ্ব মোঃ লিয়াকত আলী তালুকদারকে মেয়র হিসেবে দেখতে চায় ঝালকাঠি পৌরবাসী।
মতবিনিময় সভায় বিএমএসএফ সদস্যবৃন্দ বর্তমান সরকারের ও ঝালকাঠি পৌরসভার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও ভাল ভাল কাজগুলো মিডিয়ায় তুলে ধরার মতামত পেশ করেন।