নড়াইলের লোহাগড়ায় নবগঙ্গা নদী পাড়ের মাটি অবৈধ ভাবে কেটে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট মহল। আর এই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হলেন নুর আলম। তার বাড়ি উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পাচুড়িয়া গ্রামে। তিনি এলাকায় হাজি সাহেব নামে পরিচিত। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, অভিযোগ আছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এসব মাটি যাচ্ছে উপজেলার অনুমোদন বিহীন বিভিন্ন ইট ভাটায়। আর এই মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মাটি খেকো সিন্ডিকেট সদস্যরা। দিনে ও রাতে বিরামহীন ভাবে অপরিকল্পিত মাটি কেটে নেয়ার ফলে নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে নদী তীরবর্তী কয়েক’শ পরিবার।
শুরুতে স্থানীয়রা বাঁধা দিলেও তা বন্ধ হয়নি। উল্টো হাজী নুর আলম সিন্ডিকেটের লোকজন তাদের স্পস্ট জানিয়ে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই নদী পাড়ের মাটি ইট-ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রায় দেড় মাস ধরে দিনের বেলায় অবৈধ ভাবে শতশত ট্রাকভর্তি মাটি পাচার হলেও নড়াইল পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন তারা কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে কথা হয় নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার ইঞ্জিনিয়ার সাইদ আনোয়ারের সাথে। তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি নদী পাড় থেকে অবৈধ ভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আর সেই মাটি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ইট-ভাটায়। আজ সরেজমিনে এসেও তার প্রমান পেলাম।
মঙ্গলবার নবগঙ্গা নদীর চর-মল্লিকপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ৬টি ট্রাকে করে নদী পাড়ের মাটি পাচার করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাক রেখে পালিয়ে যায় শ্রমিক এবং চালক। এ সময় কথা হয় মাটি কাটায় নিয়োজিত ভেকু ড্রাইভার চয়ন সরকার এর সাথে। তিনি বলেন, হাজি নুর আলম আমাকে মাটি কাটা বাবদ কন্টাক করে এনেছে। তার কথাতেই মাটি কেটে ট্রাকে লোড করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোসলিনা পারভিন বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের। আপনারা তাদের সাথে কথা বলেন।
মাটি কাটা সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হাজি নুর আলম বলেন, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে চুক্তি করেই নদী পাড়ের মাটি বিক্রি করছি। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ৬/৭টা ট্রাকটর ট্রলিতে করে ৭০ থেকে ৭৫ ট্রাক মাটি বিক্রি করছি। এ সময় নুর আলম নিউজ প্রচার বন্ধ করতে গণমাধ্যম কর্মীদের ম্যানেজের ব্যর্থ চেষ্টাও করেন।
নদীর পাড় থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কাটা বন্ধে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। সেই সাথে হাজি নুর আলম সিন্ডিকেটের সকল সদস্যদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিও তাদের।